Header Ads

Islamic Media Blog

Tabligh-6 Quralities ( Islamic Media Blog)

 

Tabligh-6 Quralities
Tabligh-6 Quralities


তাবলীগের কাজ সম্পর্কে কিছু কথা

 (৬ নম্বর ও আনুসাঙ্গিক আলোচনা)

  সূচীপত্র

১।ছয় নম্বর

২।তাবলীগের লাভ

৩।নতুন সাথী তৈরীর মেহনত

৪।ঘরের তালীম।

৫।সারা বছরে মোট নয়টি কিতাবের তা'লীম করবে।

৬। তালীম শুনার আদব 

৭। এতে যে তিনটি জিনিস হাসিল হয়

৮। হাসতে হাসতে জান্নাতে যাওয়ার আমল

৯।আসল উম্মতের পরিচয়

১০। আব্দুল ওহাব সাহেবের কথা, যাতে কখনো তোড় হবে না 

১১। ৫টি হেকমতওয়ালা কথা যাতে দিল জুড়ে

১২। এস্তেকামাতের ১৭ টি উপায়

১৩। দায়ীর ৮টি খাস সিফাত

১৪। মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ছাহেব বলেন

১৫। হেদায়েতের জন্য দোয়া

১৬। মুসলমানের কারণীয় কাজ-৫টি

১৭। মুসলমানের বর্জনীয় কাজ-৫টি

১৮। ছালামের লাভ

১৯। আল্লাহর আমানত কয়টি 

২০। ভাল খারাপ হওয়ার পন্থা

২১। কবরে তিন প্রশ্ন

২২। হাশরের ময়দানে চারটি প্রশ্ন

২৩। হাশরের ময়দানে বিচার ব্যবস্থা

২৪। সবাই কয়েকটা কথা বলি কিন্তু কর্মে নাই।

২৫। ১০টি কাজের ১০টি গুণ

২৬। মুসলমানের হক কয়টি কি কি?

২৭। প্রকৃত বুদ্ধিমান কে? . 

২৮। হতভাগা কে?

২৯। মৃত্যুর সময় ভাগাভাগী

৩০। মানুষের প্রকারভেদ

৩১। ৩টি অপরিহার্য গুণের কথা

৩২। কামিয়াবীর জন্য ৩টি গুণ অপরিহার্য

৩৩। তিন ব্যক্তি বিনা হিসাবে বেহেশতে যাইবে

৩৪। তিন ব্যক্তি বিনা হিসাবে জাহান্নামে যাইবে

৩৫। হযরত খিজির (আঃ) এর তক্তিতে লেখা সাতটি উপদেশ

৩৬। ৪টি কাজ কম করি

৩৭। চারটি কাজ মোটেই করিব না

৩৮। তারুফি বয়ান 

৩৯। পরামর্শ 

৪০। আদব

৪১। তালিম প্রকার

৪২। হাসিল করার তরিকা

৪৩। গাশতের আদব কত প্রকার কি কি ?

৪৪। দাওয়াতের কাজে বের হলে লাভ

৪৫। বাহিরে জামায়াতে শ্রেণীর লোক থাকবে

৪৬। মাগরিব বাদ বয়ান তাশকিল-এর নিয়ম

৪৭। ফজর বাদ বয়ান

৪৮। রাস্তার আদব

৪৯। ৭টি আমলের দ্বারা সাতটি রোগের চিকিৎসা

৫০। মানুষ শ্রেণীতে বিভক্ত

৫১। দায়ীর বিশেষ গুণ টি

৫২। মানুষের গুণ ২টি 

৫৩। এলান কত প্রকার কি কি? এবং এলান করার পদ্ধতি

৫৪। আসর বাদ এলান (মুনাজাতের আগে

৫৫। অন্ধকার পাঁচ প্রকার এবং তার জন্য বাতি ও পাঁচ প্রকার 

৫৬। মসজিদওয়ার জামায়াতের মেহনতের মুজাকারা। 

 

ছয় নম্বর

নাহমাদুহু ওয়ানুসাল্লী আলা রাসূলিহিল কারীম।

কয়েকটি গুণের উপর মেহনত করে আমল করতে পারলে দ্বীনের উপর চলা সহজ।

গুণ কয়টি হল : () কালেমা, () নামাজ, () ইলম যিকির, () ইকরামুল মুসলিমীন, () তাসহীহে নিয়্যত, () তাবলীগ 


(এক) কালেমা

Kalemai Tayybha

(লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ)

অর্থ : আল্লাহ তা'আলা ছাড়া কোন মাবুদ নেই, আর হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহ তাআলার রাসূল। 

কালেমার উদ্দেশ্য : আমাদের দুই চোখে যা কিছু দেখি আর না দেখি আল্লাহ ছাড়া সবই মাখলুক। আর মাখলুক কিছুই করতে পারে না আল্লাহর হুকুম ছাড়া। আল্লাহ সবকিছু করতে পারেন মাখলুক ছাড়া। 

একমাত্র হুজুর (সা.)-এর নূরানী তরীকায় দুনিয়া এবং আখেরাতের শান্তি কামিয়াবী  

কালেমার লাভ : যে ব্যক্তি একীন এখলাছের সাথে কালেমা একবার পাঠ করবে, আল্লাহপাক তার পিছনের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিবেন|

হাদীসে আছে, যেই ব্যক্তি প্রতিদিন কালেমা ১০০ বার পাঠ করবে কিয়ামতের দিন তার চেহারা পূর্ণিমার চাঁদের ন্যায় উজ্জ্বল করে উঠাবেন 

কালেমার লাভ : হুজুরে পাক (সা.) ইরশাদ করেন- যে ব্যক্তি পরিপূর্ণ ভাবে অজু করে। অতঃপর কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ করে আল্লাহপাক তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেন, সে ব্যক্তি যেই দরজা দিয়ে ইচ্ছা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে 

হুজুর (সা.) ইরশাদ করেন, যেই ব্যক্তি কালেমায়ে তাইয়্যেব একশত বার পাঠ করবে, কিয়ামতের দিন তার চেহারা পূর্ণিমার চাদের মত উজ্জল করে উঠানো হবে। 

হুজুর (সা.) ইরশাদ করেন, শিশুরা যখন কথা বলতে আরম্ভ করে তখন তাকে কালেমা শিক্ষা দাও 

হুজুর (সা.) ইরশাদ করেন, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর চেয়ে বড় কোন আমল নেই এবং তা গুনাহকে মাফ না করাইয়া ছাড়ে না 

হুজুর (সা.) ইরশাদ করেন, ঈমানের ৭০টি শাখা রয়েছে আরেক বর্ণনায় রয়েছে, ৭৭টি শাখা আছে তন্মধ্যে সর্বোত্তম হল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু পাঠ করা।

হুজুর (সা.) ইরশাদ করেন, শ্রেষ্ঠ যিকির হল, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু পাঠ। করা|

৭। হুজুর (সা.) ইরশাদ করেন, যখন কোন বান্দা লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু পাঠ করে তখন আল্লাহ তার সমর্থনে বলেন, আমার বান্দা সত্য বলেছে, আমি ছাড়া কোন মাবুদ নেই 

হুজুর (সা.) এরশাদ করেন, যে বান্দা অন্তরের সাথে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাক্ষ্য দেয়ার পর ইন্তেকাল করল, সে নিশ্চয়ই জান্নাতে প্রবেশ করবে 

যদি কোন ভাগ্যবান ব্যক্তি এখলাছের সাথে এই কালেমা পাঠ করে তবে সে ব্যক্তি পাপী হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহ পাক তাকে মাফ করে দিতে পারেন কারণ- আল্লাহর অনুগ্রহের কোন সীমা নেই 

১০। হুজুর (সা.) এরশাদ করেন, সে পাক জাতের কসম! যার হাতে আমার জীবন, যদি সমগ্র আসমান-যমীন এক পাল্লায় রাখা হয় আর কালেমায়ে শাহাদাত অপর পাল্লায় রাখা হয় তবে কালেমার পাল্লা ভারী হয়ে যাবে  

১১ হুজুর (সা.) এরশাদ করেন, কোন ব্যক্তি দিবা-রাত্রির যে কোন সময় লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু পাঠ করবে তার আমলনামা হতে পাপসমূহ মুছে তার পরিবর্তে নেকী লিখে দেওয়া হয়। 

কালেমা হাসিল করার তরীকা : এই কালেমা আমি বেশী বেশী পাঠ করি। আর লাভ জানিয়ে অপর ভাইকে দাওয়াত দেই দোয়া করি।

 

(দুই) নামাজ

নামাজের উদ্দেশ্য : হুজুর পাক (সা.) যেভাবে নামাজ পড়তে বলেছেন এবং সাহাবাদেরকে যেভাবে নামাজ শিক্ষা দিয়েছেন সেভাবে নামাজ পড়ার যোগ্যতা অর্জন করা|

নামাজের ফযীলতঃ যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সময়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে গুরুত্ব সহকারে আদায় করবে, আল্লাহপাক তাকে নিজ দায়িত্বে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন 

যে ব্যক্তি নামাজের ব্যাপারে যত্নবান হবেন, আল্লাহপাক তার যিম্মাদারী নিবেন আর যে ব্যক্তি নামাজের ব্যাপারে যত্নবান হবে না, আল্লাহ তার কোন দায়িত্ব নিবেন না 

নামাজের লাভ : হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত- প্রিয় নবী (সা.) এরশাদ করেন- কোন ব্যক্তির জামায়াতের সাথে নামাজ পড়ার ছাওয়াব ঘরে কিংবা বাজারে একাকী পড়ার চাইতে পঁচিশ গুণ বেশী (বুখারী শরীফ)

২। প্রিয় নবী (সা.) এরশাদ করেন- জামায়াতের নামাজে একা নামাজ হতে ২৭ গুণ বেশী ছাওয়াব। (বুখারী শরীফ) 

প্রিয় নবী (সা.) এরশাদ করেন- যদি কোন ব্যক্তি উত্তম রূপে অজু করে নামাজ আদায়ের নিয়্যতে মসজিদে গিয়ে দেখে নামাজ শেষ হয়ে গেছে তবে সে জামায়াতে নামাজ আদায়ের ছাওয়াব পাবে এবং জামায়াত প্রাপ্তদের ছাওয়াব বিন্দু মাত্রও কম করা হবে না। (আবু দাউদ

৪। হে নবী! আপনার পরিজনদেরকে নামাজের হুকুম করুন আপনি নামাজের ব্যাপারে যত্নবান হোন। আপনার নিকট আমি কোন রিজিক চাই না কেননা রিযিক তো আমিই আপনাকে দান করব। 

প্রিয় নবী (সা.) এরশাদ করেন- যারা রাতের অন্ধকারে বেশী বেশী করে মসজিদে গমন করে, তাদেরকে কিয়ামতের দিবসের পূর্ণ নূরের সুসংবাদ দান করুন (ইবনে মাজাহ

৬। একটি হাদিছে আছে, কষ্টের সময় অজু করা, মসজিদের দিকে গমন করা এবং এক নামাজের পর অন্য নামাজের অপেক্ষায় বসে থাকা গুনাহ সমূহকে ধৌত করে দেয়। (জামেউছ ছগীর) 

প্রিয় নবী (সা.) এরশাদ করেন- আমার চক্ষুর তৃপ্তি হল নামাজ 

৮। হুজর আকরাম (সা.) বলেন- কিয়ামতের দিবসে সর্বাগ্রে নামাজের হিসাব নেওয়া হবে যদি এটা ঠিক সাব্যস্ত হয় তবে বাকি আমলও ঠিক বলে প্রমাণিত হবে। আর নামাজ ত্রুটিপূর্ণ হলে অবশিষ্ট আমলও ক্রটিপূর্ণ হবে 

৯। হুজুর (সা.) এরশাদ করেন, যে নামাজে ক্বেরাআত লম্বা হয় উহাই শ্রেষ্ঠ নামাজ 

১০। হযরত আনাছ (রা.) হতে বর্ণিত - নবীয়ে করীম (সা.) এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর ওয়াস্তে চল্লিশ দিন যাবত প্রথম তাকবীরের সাথে জামায়াতে নামাজ পড়বে, তার জন্য দুটি পরওয়ানা লেখা হয়, একটি জাহান্নাম হতে রক্ষা পাওয়ার অপরটি মুনাফেকী হতে মুক্ত থাকার (তিরমিযী

১১। হযরত হুজায়ফা (রা.) বলেন, নবী করীম (সা.) যখন কোন কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হতেন তৎক্ষণাৎ নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন 

নামাজ হাসিল করার তরীকা : পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামায়াতের সাথে আদায় করি, ওয়াজিব সুন্নাত নামাজের প্রতি যত্নবান হই কাযা নামাজগুলো খুঁজে খুঁজে আদায় করি। নামাজের লাভ জানিয়ে অপর ভাইকে দাওয়াত দেই সমগ্র উম্মতে মুহাম্মদির জন্য দোয়া করি 

 

(তিন) ইলম যিকির :

মাকসূদ : আল্লাহ তা'আলার কখন কি আদেশ-নিষেধ হুজুর (সা.) এর তরীকা জেনে সে অনুযায়ী আমল করা 

লাভ : কোন ব্যক্তি এলমে দ্বীন হাসিল করার সময় মারা গেলে সে শহীদি মর্তবা লাভ করবে 

এলেমের লাভ : হযরত উছমান (রাঃ) হতে বর্ণিত- হুজুরে পাক (সা.) এরশাদ করেন- তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তি সর্বশ্রেষ্ঠ, যিনি কুরআন শরীফ শিখেছেন অপরকে শিক্ষা দিয়েছেন। (বুখারী শরীফ) 

হযরত আবু যার (রা.) বলেন- আমি হুজুর (সা.) হতে শুনেছি, যে ব্যক্তি এলমে দ্বীন শিক্ষা করার জন্য পথে বাহির হয় আল্লাহ পাক তার জন্য বেহেশতের রাস্তা সহজ করে দেন আর ফেরেশতাগণ তালেবে এলমের সম্মানের জন্য পাখা বিছিয়ে দেন এবং আসমান-যমীনের সকল মাখলুক তার জন্য ইস্তেগফার করতে থাকে (হায়াতে সাহাবা

৩। এহইয়াউল উলুম গ্রন্থে উল্লেখ আছে, কোন বান্দা একটি সুরা পাঠ করতে আরম্ভ করলে ফেরেশতাগণ সূরা শেষ না করা পর্যন্ত তার জন্য রহমতের দোয়া করতে থাকেন

হযরত উকবা ইবনে আমের (রাঃ) বলেন, আমি হুজুরে আকদাছ (সা.)  কে বলতে শুনেছি, যদি কুরআনে পাককে চর্মের মধ্যে আবদ্ধ করে অগিকুণ্ডে নিক্ষেপ করে তবে তা দগ্ধ হবে না। (দারেমী)

হযরত ইবনে আব্বাছ (রাঃ) বলেন, হুজুর (সা.) এরশাদ করেন- যার অন্তরে কুরআনের শিক্ষা নেই, তা বিরাণ ঘর সমতুল্য (তিরমিজি শরীফ) 

হযরত ইবনে ওবায়েদ (রাঃ) হতে বর্ণিত - হুজুর (সা.) বলেন, আল্লাহ পাক কুরআন তেলাওয়াতকারীর আওয়াজের প্রতি সে ব্যক্তির চেয়ে অধিক কর্ণপাত করেন, যে আপন গায়িকা বাদীর গানের প্রতি কর্ণপাত করে (ইবনে মাজাহ্ )

যদি কোন ব্যক্তি স্বাস্থ্য রক্ষায় বড় যত্নবান হয় তাহলে প্রতিদিন ব্যায়াম করা, ভোরে গোছল করা, ভ্রমণ করার অভ্যাস করা, তবে কালামে পাক অন্তরের যাবতীয় রোগ দূর করার সূরায়ে ফাতেহা যাবতীয় রোগ মুক্তির উপায় 

অনেকে ধন-সম্পদ জমা করায় অভ্যস্ত খাওয়া পরার কষ্ট স্বীকার করে দিবা-রাত্রি ব্যস্ত তবে হুজুরে পাক (সা.) বলেন, সঞ্চয়ের জন্য কুরআন পাক তিলাওয়াত করাই যথেষ্ট 

এলেম শিক্ষা করার জন্য যে ব্যক্তি ঘর থেকে বের হয় এবং অবস্থায় মারা যায় আল্লাহ পাক তাহাকে শাহাদাতের মর্যাদা দান করেন

১০। আপনি যদি দুনিয়ার যাবতীয় ঝামেলা হতে মুক্ত থাকতে চান তবে কালামে পাকে লিপ্ত হোন|

১১ হুজুরে আকরাম (সা.) এরশাদ করেন- তোমাদের মধ্যে কেউ কি এটা পছন্দ করে, সে বাড়ি ফিরে তিনটি মোটা-তাজা গর্ভবতী উটনী তথায় পাবে আমরা বললাম নিশ্চয়ই আমরা এটা পছন্দ করি। হুজুর (সা.) বলেন, নামাজের মধ্যে তিনটি আয়াত পাঠ করা, তিনটি মোটা-তাজা গর্ভবতী উটনী পাওয়ার চেয়ে উত্তম (মুসলিম) 

হাসিল করার তরীকাঃ এলেম দুই ভাবে শিখি, ফাযায়েলে এলেম মাসায়েলে এলেম ফাযায়েলে এলেম আমরা কিতাবের তালীমী হালকা থেকে শিখি আর মাসায়েলে 'এলেম উলমায়ে কেরামদের থেকে জেনে নিই। এলেমের লাভ জানিয়ে অপর ভাইকে দাওয়াত দেই সবার জন্য দোয়া করি 

যিকিরের মাকসূদঃ সকল সময় আল্লাহর ধ্যান-খেয়াল অন্তরে পয়দা করা 

যিকিরের ফযীলতঃ যে ব্যক্তি যিকির করতে করতে জিহ্বাকে তরতাজা রাখবে, কিয়ামতের দিন সে হাসতে হাসতে জান্নাতে প্রবেশ করবে 

যিকিরের লাভ : যারা সর্বদা যিকিরে মগ্ন থাকবে তারা হাসতে হাসতে বেহেশতে প্রবেশ করবে 

যিকিরের মজলিস ফেরেশতাদেরই মজলিস। 

৩। হুজুর (সা.) এরশাদ করেন, আল্লাহ পাক বলেন যে, তুমি ফজরের নামাজের পরে আসরের নামাজের পরে কিছুক্ষণ আমার যিকির করে নাও আমি মধ্যবর্তী সময়ের জন্য যথেষ্ট হব 

আল্লাহ্ পাক জাকেরীনদের (যিকিরকারী) জন্য ফেরেশতাদের উপর গর্ব করে থাকেন 

আরামের সময় আল্লাহর যিকির করলে বিপদের সময় আল্লাহ পাক তাকে স্মরণ করে থাকেন

৬। যিকিরের সাথে যদি নির্জনে ক্রন্দনও করা যায় তবে কিয়ামতের ভীষণ রৌদ্রতাপে যখন মানুষ দিশাহারা হয়ে যাবে তখন সে আরশের নীচে ছায়া পাবে 

৭। যিকির বেহেশতের চারা গাছের সমতুল্য।।

৮। যিকির আল্লাহর সন্তুষ্টির কারণ।

যিকির অন্তর হতে চিন্তা-ফিকিরকে দূর করে দেয়।

১০ যিকির দিলকে জিন্দা করে 

হাফেজ ইবনে তাইমিয়া বলেন, যিকির দিলের জন্য সেরূপ, মাছের জন্য পানি যেরূপ 

১১। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আমার প্রতি এক বার দুরূদ পাঠ করে, আল্লাহ পাক তার ১০টি গুনাহ মাফ করে দেন, ১০টি রহমত নাজিল করেন, ১০টি দরজা বুলন্দ করে দেন এবং তার আমলনামায় ১০টি নেকী লিখে দেন 

যিকির হাসিল করার তরীকা : শ্রেষ্ঠ যিকির হল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু আফযাল যিকির হল কুরআন তেলাওয়াত করা সকাল-বিকাল তিন তাসবীহ আদায় করা 

১০০ বার- (সুবহানাল্লাহ ওয়াল হামদুলিল্লাহ ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার) 

১০০ বার – আসতাগফিরুল্লা-হাল্লাজী লা-ইলাহা ইল্লাহুয়াল হাইউল কাইউম ওয়া আতুবু ইলাইহি পড়া 

১০০ বার (দুরুদ)- আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিনিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আলা আলিহী ওয়া আসহাবিহী ওয়া সাল্লিমু তাসলিমা কাছীরা পড়া। 

এই তাসবিহগুলো সকালে তিনশত বার বিকালে তিনশত বার আদায় করি মাসনূন দোয়াগুলো ঠিক মত আদায় করি যিকিরের লাভ জানিয়ে অপর ভাইকে দাওয়াত দেই দোয়া করি

 

(চার) একরামুল মুসলিমীন

মাকসুদ : প্রত্যেক মুসলমান ভাইয়ের কিমত মূল্য জেনে তার সম্মান করা 

ফযীলত : যদি কোন ব্যক্তি কোন মুসলমান ভাইয়ের উপকার করার চেষ্টা করে তবে আল্লাহপাক তাকে দশ বছর ইতেকাফ করার ছাওয়াব দান করবেন। 

একরাম হাসিল করার তরীকা : আমরা আলেমদের তাযীম করি, বড়দের শ্রদ্ধা করি, ছোটদের স্নেহ করি এর ফযীলত জানিয়ে অপর ভাইকে দাওয়াত দেই।

ইকরামূল মুসলিমীনের ফযীলত ১০ টি

নবী করীম (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আমার উম্মতের কারো কোন দ্বীনি বা দুনিয়াবী হাজত বা প্রয়োজন তাকে খুশী করার উদ্দেশ্যে পুরা করল তবে নিঃসন্দেহ সে আমাকেই খুশী করল এবং যে ব্যক্তি আমাকে খুশী করল বস্তুতঃ সে আল্লাহ্ তা'আলাকেই খুশী বা সন্তুষ্ট করলো তিনি তাকে জান্নাতে প্রবশে করাবেন। 

এক হাদীসে আছে, যে ব্যক্তি কোন মুসলমান ভাইয়ের একটি হাজত পুরা করবে, সে হজ্জ বা ওমরা পালনকারী ব্যক্তির ন্যায় ছাওয়াব পাবে।

হুজুর আকরাম (সা.) ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি কোন মুসলমান ভাইয়ের প্রয়োজন মিটানোর জন্য অগ্রসর হবে এবং সাধ্যমত চেষ্টা করবে, তার জন্য এটা দশ বৎসর ই’তেকাফের থেকেও উত্তম হবে আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্ পাকের সন্তুষ্টি হাসিলের জন্য একদিন 'তেকাফ করে আল্লাহ্ পাক তার  জাহান্নামের আগুনের মাঝে ৩টি খন্দক (পরিখা) অন্তরায় করে দিবেন। এদের দূরত্ব আসমান হতে যমীনের দূরত্বের চাইতেও বেশী। (তিবরানী, বায়হাকী

হুজুর (সা.) ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের দোষ ত্রুটি ঢেকে রাখে, আল্লাহ্ তা'আলা দুনিয়া আখেরাতে তার দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখবেন এবং আল্লাহ্ তা'আলা ততক্ষণ পর্যন্ত বান্দাকে সাহায্য করতে থাকবেন, যতক্ষণ সে মুসলমান ভাইয়ের সাহায্য করতে থাকে (মুসলিম, আবু দাউদ

৫। নবী করীম (সা.) ইরশাদ করেছেন- যেসব লোক (মাখলুকের) উপর দয়া করে আল্লাহ্ তা'আলাও তাদের উপর দয়া করেন। তোমরা যমীনবাসীদের উপর দয়া কর, তাহলে আসমানবাসী তোমাদের উপর দয়া করবে। (আবু দাউদ) 

নবী করীম (সা.) ইরশাদ করেন- কোন মুসলমান ভাইয়ের একটি হাজত পুরা করলে আল্লাহ্ তা'আলা তার ৭৩টি হাজত পুরা করবেন। একটি দুনিয়াতে বাকী ৭২টি আখেরাতে 

নবী করীম (সা.) ইরশাদ করেছেন- তিন প্রকার লোককে সম্মান করা, যেমন আল্লাহ্ তা'আলাকে সম্মান করা। () বৃদ্ধ মুসলমান () কুরআনের বাহক যিনি এতে কোন কোন প্রকার পরিবর্তন পরিবর্ধন করেন না () ন্যায় পরায়ণ শাসনকর্তা (তারগীব, আবু দাউদ) 

যে বিপদগ্রস্ত মুসলমানকে সাহায্য করবে, আল্লাহ তা'আলা তাকে সেদিন সাহায্য করবেন, যেদিন সে সাহায্যের মুহতাজ হবে।

৯। হাশরের ময়দানে ঘোষণা করা হবে, উম্মতে মুহাম্মদীর ফকিরগণ! উঠ এবং জাহান্নামীদের কাতারে যাও। যে কেউ তোমাদেরকে খানা খাওয়াইয়াছে অথবা পুরাতন এবং নতুন কাপড় দিয়েছে অথবা যে কোনভাবে সাহায্য করেছে তাদের হাত ধরে বেহেশতে পৌছিয়ে দাও

১০। যে যমীনওয়ালার উপর রহম করে আসমানওয়ালা (আল্লাহ) তার প্রতি রহম করবেন (হাদীছ

(পাঁচ) তাসহীহে নিয়্যত

মাকসূদঃ আমরা যে কোন কাজ করি তা আল্লাহকে রাজি-খুশী করার জন্য করি

ফযীলত : নিয়্যতকে সহী করে সামান্য খুরমা দান করলে আল্লাহপাক সেটাকে বাড়িয়ে উহুদ পাহাড় পরিমাণ ছাওয়াব কিয়ামতের দিন দান করবেন। আর যদি নিয়্যত সহী না করে পাহাড় পরিমাণও দান করি তাহলে খুরমা পরিমাণ ছাওয়াবও পাওয়া যাবে না

তাসহীহে নিয়্যতের লাভ :

হযরত মুয়ায (রা.) বলেন, হুজুর (সা.) আমাকে যখন ইয়ামান পাঠালেন তখন বিদায়কালে আমি শেষ উপদেশের  অনুরোধ জানালে হুজুর (সা.) প্রত্যেক কাজই এখলাছ আন্তরিকতার সাথে সম্পন্ন করতে বলেনএখলাছের সাথে সামান্যতম আমলও অনেক বড়

২। যে ব্যক্তি এখালাছের সাথে সাথে আল্লাহকে রাজী করার নিয়্যতে একটি খুরমা দান করেন আল্লাহ্ পাক তার ছাওয়াব বাড়িয়ে উহুদ পাহাড় বরাবর করে দেন। (ছাদাকাত

কোন মুসলিম মাতা তার বাচ্চাকে যদি আল্লাহর ওয়াস্তে দুধ পান করায় তার প্রত্যেক ফোঁটা দুধের বিনিময়ে একটি নেকী তার আমলনামায় লেখা হয়

একটি হাদীসে আছে আল্লাহ তাআলা আমলসমূহের মধ্যে সে আমলই কবুল করেন যা একমাত্র আল্লাহ পাকের উদ্দেশ্যে করা হয়। (তাবলীগ

৫। হাদীসে এসেছে, যে ব্যক্তি আল্লাহর ভয়ে কেঁদেছে, এমন কি তার চোখের এক ফোটা পানিও মাটিতে পড়েছে, কিয়ামতের দিন তাকে কোন আযাব দেয়া হবে না (ফাঃ যিকির

একটি হাদীসে আছে, যে চক্ষু আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করে, তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম 

৭। আল্লাহকে রাজি করার নিয়্যতে নিজের থাকার জন্য ঘর তৈয়ার করলে, সে ঘর যতদিন থাকবে, ততদিন আল্লাহপাক তার আমলনামায় নেকী দান করবেন।

৮। হাদীসে বর্ণিত আছে- কিয়ামতের দিন হাশরের ময়দানে এক ঘোষণাকারী উচ্চস্বরে ঘোষণা করবে, যে ব্যক্তি কোন আমলের মধ্যে কাউকে শরীক করেছে, সে যেন আজ তার প্রতিদান তার কাছ থেকেই চেয়ে নেয় কারণ, আল্লাহ তা'আলা যে কোন প্রকার অংশীদারীত্ব হতে মুক্ত (মেশকাত)

হুজুর পাক (সা.) এরশাদ করেন- দ্বীনের কাজে এখলাছের প্রতি গুরুত্ব দিবে। এখলাছের সাথে অল্প আমলই যথেষ্ট 

১০। হযরত ওমর (রাঃ) বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) কে বলতে শুনেছি নিশ্চয় ফলাফল মানুষের নিয়্যত অনুসারে হয়। প্রত্যেক মানুষ তার কাজের ফলাফল আল্লাহ্ নিকট তদ্রুপই পাবে যেরূপ নিয়্যত করবে।

১১। হুজুর (সঃ) এরশাদ করেন- আল্লাহ তাআলা দুর্বল ব্যক্তিদের উছিলায় এই উম্মতের সাহায্য করে থাকেন তাদের দোয়া, নামাজ এখলাছের বরকতে সাহায্য এসে থাকে 

সহীহ নিয়্যত হাসিল করার তরীকা : প্রত্যেক কাজ করার আগে লক্ষ্য করি যে এতে আল্লাহর হুকুম হুজুর (সঃ) এর তরীকা ঠিক আছে কিনা এবং তা আল্লাহকে রাজী-খুশী করার জন্য করছি কিনা প্রত্যেক কাজের শেষে এস্তেগফার পড়ি এর লাভ জানিয়ে অপর ভাইকে দাওয়াত দেই। 

 

(ছয়) দাওয়াতে তাবলীগ

মাকসুদ : আল্লাহর দেওয়া জান-মাল নিয়ে আল্লাহ্ রাস্তায় বের হয়ে এর সহীহ ব্যবহার শিক্ষা করা।

ফযীলত : এই কাজ শিক্ষা করার জন্য প্রথমে তিন চিল্লা (চার মাস) সময় আল্লাহর রাস্তায় লাগিয়ে এই কাজ শিক্ষা করতে হয় প্রথমে চার মাস সময় লাগিয়ে এই কাজ শিক্ষা করি এবং মৃত্যু পর্যন্ত কাজ করার নিয়্যত করি

 

তাবলীগের লাভ :

১। সে ব্যক্তির কথার চেয়ে ভাল কথা আর কার হতে পারে, যে মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকে, নেক আমল করে এবং বলে যে, নিশ্চয় আমি মুসলমানদের মধ্য হতে একজন। 

২। তোমরা সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি মানুষের মঙ্গলের জন্যই তোমাদেরকে বের করা হয়েছে।তোমাদের শ্রেষ্ঠত্বের কারণ এই যে, তোমরা সৎকাজের আদেশ করে থাক অসৎ কাজে বাধা প্রদান করে থাক এবং আল্লাহর উপর ঈমান এনে থাক 

হুজুর (সা.) বলেছেন, খোদার কছম খেয়ে বলছি, তোমার হেদায়েত উপদেশ দ্বারা যদি একজন লোকও সৎ পথে আসে তবে তা তোমার জন্য লক্ষ লক্ষ মুদ্রা দান করা অপেক্ষাও অধিক শ্রেষ্ঠ। 

আল্লাহ তাআলার রাস্তায় ধূলাবালি আর জাহান্নামের ধোঁয়া একত্রিত হবে।

কেউ যদি আল্লাহ্ তা'আলার রাস্তায় এক টাকা খরচ করে, আল্লাহপাক তাকে সাত লক্ষ টাকা দান করার ছাওয়াব দিয়ে থাকেন 

আল্লাহ পাকের রাস্তায় বাহির হয়ে যে কোন আমল করবে, আল্লাহ পাক সে আমলের ছাওয়াবকে ৪৯ (ঊনপঞ্চাশ) কোটি গুণ বাড়িয়ে দিয়ে থাকেন।

দাওয়াত তাবলীগের জন্য আল্লাহ পাক আরো বলেন, হে নবী! আপনি বলে দিন যে এটাই আমার রাস্তা, আমি মানুষকে জেনে বুঝে আল্লাহ্র দিকে ডাকি এটা আমার কাজ এবং যারা আমার অনুসারী হবে, উম্মাত বলে দাবি করবে এটা তাদেরও কাজ।

যারা দাওয়াত তাবলীগের মেহনতকে জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য বানিয়ে করতে থাকবেন তাদের হাশর নবী ছাহাবীদের সাথে অর্থাৎ মুহাজির আনছারদের সাথে হবে। 

১০। দাওয়াত তাবলীগের কাজের বরকত সমূহ হুজুরে পাক (সা) জন্মের সাথে সাথে বরকত শুরু হয়ে যায়। কাজ শুরু করেছেন নুবুওয়াত পাওয়ার পর যারা এই কাজকে কাজ বানিয়ে করবেন, জিন্দেগীর মাকসূদ বানিয়ে, উদ্দেশ্য বানিয়ে করবেন, তাদেরকে আল্লাহ্পাক নিম্নোল্লেখিত বরকতগুলো দান করবেন। 

১১। আল্লাহ পাক দুনিয়াতে সর্বপ্রথম পুরস্কার-ইতমিনানে ক্বালব দান করবেন, অর্থাৎ তাদের দিলের যাবতীয় পেরেশানীকে দূর করে দিবেন এই দাওয়াত তাবলীগের কাজ ছাড়া দুনিয়ার কোন জিনিস মানুষের দিলের পেরেশানী দূর করতে পারে না 

১২ আবু দাউদ শরীফে যিকির অধ্যায় বর্ণিত আছে, অর্থাৎ হুজুর পাক (সা.) বলেন, নিশ্চয় আল্লাহর রাস্তায় নামাজ, রোজা যিকিরকে আল্লাহর রাস্তায় খরচের উপর সাত শত গুণ বৃদ্ধি করা হয় এবং এই হাদীসদ্বয় একত্র করলে ৭০০০০ ´ ৭০০ = ৪৯০০০০০ হয় অর্থাৎ আল্লাহর রাস্তায় বের হয়ে কোন নেক আমল করলে উনপঞ্চাশ কোটি ছাওয়াব পাওয়া যায়

মুরুব্বীরা বলেন, জীবনে তিন চিল্লা, বছরে চল্লিশ দিন, মাসে তিন দিন, সপ্তাহে দুই গাশত, প্রতিদিন আড়াই ঘণ্টা মেহনত, প্রতিদিন দুটি তা'লীম করি একটি নিজের মসজিদে, অপরটি ঘরে এবং মসজিদের সাথীদের নিয়ে একবার মাশোওয়ারা করি এই কাজ করার জন্য আমি তৈরি আছি-- আপনারা তৈরী আছেন তো? ইনশাল্লাহ!

 

নতুন সাথী তৈরীর মেহনত :

নতুন সাথীদেরকে প্রথমে নিম্নের তিনটি কাজ শিখাতে হবে () ছয় নম্বার; () এলান; () গাশতের আদব। নতুন সাথীকে খুব হুশিয়ারীর সাথে শিখাতে হবে কারণ, সাথীর সংশোধন করা ফরজ কিন্তু সাথীর দিল ভাঙ্গা হারাম তাই প্রয়োজনে উছুলকে ভেঙ্গে হলেও সাথীকে জুড়তে হবে নতুন সাথীকে তরগীবের সাথে তরবিয়ত অর্থাৎ উৎসাহের সাথে সংশোধন করতে হবে। 

 

ঘরের তালীম:

দাওয়াতের পর মসজিদে নব্বীর একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল ছিল তালীম। তালীম তিন প্রকার যেমন: () পবিত্র কুরআনের তালীম, () কিতাবী তালীম () ছয় নাম্বারের মুজাকারা 

 

সারা বছরে মোট নয়টি কিতাবের তা'লীম করবে :

() ফাযায়েলে কুরআন, () ফাযায়েলে নামাজ () ফাযায়েলে যিকির () ফাযায়েলে তাবলীগ, () পস্তিকা ওয়াহেদ এলাভ, () ফাযায়েলে ছাদাকাত, () হেক্বায়েতে ছাহাবা, () শাজান রামাযান মাসে ফাযায়েলে রামাযান () হজ্জ্বের মৌসুমে ফাযায়েলে হজ্জ্ব

 

তালীম শুনার আদব :

শুনার অনেক আদব আছে তন্মধ্যে তিনটি আদব রক্ষা করে চললে তিনটি জিনিস হাসিল হয় () আত্তাহিয়্যাতুর সূরতে বসা, () মুয়াল্লিমের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকা, () দিলে দিলে তাসদীক করা, (বেশখ বলা) সত্য বলেছেন। 

 

এতে যে তিনটি জিনিস হাসিল হয় :

() যা শুনা হবে তা মনে থাকবে। (এলেম শরীরের অঙ্গ হয়ে থাকবে) () সময়মত আমলের তৌফীক হবে () প্রয়োজনের সময় আল্লাহপাক স্মরণ করিয়ে দিবেন 

 

হাসতে হাসতে জান্নাতে যাওয়ার আমল:

নিম্নলিখিত কারণগুলোর দ্বারা জান্নাতে যাওয়া যাবে 

() সালাম : যে মুসলিম ব্যক্তি দৈনিক ২০ জনকে সালাম দিবে, সে যদি দিন মারা যায় তাহলে সোজা জান্নাতের হকদার হয়ে যায়

() কালাম : যে মুসলিম অন্য মুসলিম ভাইয়ের সাথে ভদ্র নম্র ব্যবহার করে, সে বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবে

() ত্বোয়াম : যে নিজের আহারের মধ্যে মেহমানকে শরীক, করবে, তার আহারের হিসাব হবে না।

() কিয়াম : রাতের দু'রাকআত নামাজ (তাহাজ্জুদ) দুনিয়া দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়ে উত্তম। 

দায়ীয়ানা সিফাত : আল্লাহর রাস্তায় নিজের জান-মাল ব্যয় করে আল্লাহর দ্বীনকে দুনিয়াতে জিন্দা করার দায়িত্ব যে ঘাড়ে নিয়েছে, সেই দ্বীনের দায়ী।আল্লাহর রাস্তায় এসে এই দায়ীয়ানা সিফাতকে মেহনত করে অর্জন করতে হয় এজন্য নিম্নের বিষয়গুলোর প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে

 

আসল উম্মতের পরিচয়ঃ

নবীর মতে মত নবীর পথে পথ হলেই তো আসল উম্মত বনা যাবে। যেমন, () ছোট হয়ে চলি, নত হয়ে বলি () সাথীদেরকে আসহাবে কাহাফ মনে করি, নিজেকে আসহাবে কাহাফের কুকুর মনে করি কারণ, একাজ তো মাওলানা ইলিয়াস (রহ.) চালান নাই কাজ তো স্বয়ং আল্লাহ তা'আলা চালাচ্ছেন মানুষের মধ্যে সেই বড় বাহাদুর যে নিজের গোস্বাকে হজম করে এবং মানুষকে ক্ষমা করে দেয় () জোড় মিলের প্রতি খুব জোর দেয়া : সেই জামায়াতই কামিয়াব জামায়াত যে জামায়াত জুড়ে-মিলে থাকে আর যে জামায়াতে জোড়-মিল থাকে না, সেটা নাকাম জামায়াত। এমন কি, জোড়-মিল না রেখে নগদ জামায়াত উঠালেও জামায়াত কামিয়াব হবে না। জোড়-মিল ঠিক রেখে নগদ জামায়াত উঠাতে পারলে তো নুরুন-আলা-নূর। () প্রত্যেক সাথীকে নিজ নিজ যাতি আমলের প্রতি খুবই চৌকান্না থাকতে হবে () হযরতজী ইলিয়াস সাহেব (রহ.) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজের যাতি আমলের পাবন্দী করবে না, তার তায়ালুক মায়াল্লাহ নছীব হরে না!

 

আব্দুল ওহাব সাহেবের কথা, যাতে কখনো তোড় হবে না :

() সাথীর সংশোধনের ফিকিরে পড়ো না () সাথীকে উছুলের উপর আনার ফিকিরে পড়ো না () সাথীর খেদমত কর। () একরাম কর। () নিজে উছুলের উপর জমে থাক 

 

৫টি হেকমতওয়ালা কথা যাতে দিল জুড়ে :

() সালাম করা () একরাম করা () হাদিয়া দেয়া () নাম নিয়ে দোয়া করা

() অসাক্ষাতে তারিফ করা 

 

এস্তেকামাতের ১৭টি উপায় সম্পর্কে হযরত মাওলানা সাঈদ আহমদ খান সাহেব বলেন,

১। যে কেহ দিলের একীনের সাথে কাজ করবে সে জমবে। 

যে রোজানা দাওয়াত দিতে থাকবে তার জজবা বনতে থাকবে

৩। যে পরিবেশের মধ্যে থাকবে সে জমবে, যে পরিবেশ হতে বিছিন্ন হয়ে যাবে যে কেটে পড়বে।

৪। যে এ কাজে বাধা সৃষ্টি করবে সে কেটে পড়বে।

৫। আমীরের অনুগত ও পরামর্শের পাবন্দ ব্যক্তি জেমবে।

৬। যে কারো দোষ দেখবে সে কেটে পড়বে, যে ভালাই দেখবে সে জমবে।

৭। যে তাওয়াজু এখতিয়ার করবে সে জমবে, তাকাব্বরের সহিত চলনেওয়ালা তাহার জন্য শোকর করা

৮। কোন কোন গুনাহের কারণে কাজ হতে মাহরুম (বঞ্চিত) হয়ে যায়। (গীবত, অপরের দোষ তালাশ করা, (গরজ) মনচাহী বদ নজরীও (শাহওয়াত) 

যে নাদামাত, তওবা এস্তেগফারের সহিত চলবে সে জমবে। '

১০। যে অন্যের ক্রটি নিজের উপর নিবে সে জমবে যে ক্রটি অন্যের উপর 

১১. হুজুর (সা.)-এর সহিত মুনাফেক চলেছে কিন্তু ফায়দা হয় নাই এমন কি ঈমানও নছীব হয় নাই। 

১২. যে অন্যের অন্যায় বিষয়ের ভাল মানের দিকে ব্যাখ্যা করে সে জমবে। যে সব কথাই উল্টা মতলবের দিকে নিবে সে কখনও জমতে পারবে না 

১৩. যে লোক আল্লাহকে ভয় করে আল্লাহর কাছে চাইতে থাকে, সে  জমবে। জমার জন্য আল্লাহর কাছে চাইতে হবে, নতুবা পড়ে যাবে। হুজুর (সা.) এস্তেকামাতের জন্য দোয়া করতেন, হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এরূপ দোয়া করতেন- “হে আল্লাহ্! আমাকে মূর্তিপূজা হতে বাঁচাও অথচ উনার দ্বারা মূর্তি পূজার সম্ভবনাও ছিল না। উনারা চােইছেন আর আমাদের তো কথাই নেই।

১৪। যে এখলাছের সাথে কোরবানী দেবে, আল্লাহ তাকে হার হালাতে মজবুত রাখবেন এবং ঐ সব অবস্থায়ও উচু মর্যাদা নছীব করবেন, যখন লোকদের কদম নড়ে যাবে।

১৫। যে বলবে আমার উছিলায় কাম হচ্ছে সে বঞ্চিত হবে। যা সম্পর্কে মানুষ মনে করবে তার উছিলায় কাম হচ্ছে, আল্লাহ তাকে উঠিয়ে নেবেন।

১৬. হযরতজী (রহ.) বলতেন, যে নকলের উপর আঁচাড় খায়, সে আসলের উপর কি করে জমবে? আমরা তো নকল করনেওয়ালা "

১৭. যে পুরা উম্মতের ব্যাথা নিয়ে চলবে তার দিলের অবস্থার আছর আল্লাহ তা'আলা পুরা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিবেন

 

দায়ীর ৮টি খাস সিফাত :

 () উম্মতের মুহাব্বত () নিজের সংশোধনের জন্য দাওয়াত দেয়া() জান-মাল ওয়াক্তের কোরবানীর জজবা।() বাহাদুরি বড়াই এর পরিবর্তে আজিজী এনকেছারী পয়দা হওয়া (সফলতাকে আল্লাহর সাহায্য মনে করা () লোকেরা না মানাতেও নিরাশ না () অন্যের কষ্ট দেওয়ায় সবর করা () প্রত্যেক নেক আমলের পরে এস্তেগফার করা।

 

মাওলানা ওবায়দুল্লাহ সাহেব (রহ.) বলেন-

চার কাজ করলে তাবলীগ করতে পারবে- () কথা বলবে নিজের জন্য। () কথা শুনবে নিজের জন্য () আল্লাহ যে নেক আমলের তৌফীক দিয়েছেন তাহার জন্য শোকর করা। (৪) একা অবস্থায় রাত্রে শোয়ার সময় আল্লাহর কুদরতের চিন্তা করা।

 

হেদায়েতের জন্য দোয়া-

  আল্লাহুম্মা ইহদিনা ওয়াদিবিনা ওয়াহূদিন্নাসা জামিয়া।

অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে সরল-সোজা পথে পরিচালিত করুন। আমাদের ভবিষ্যত বংশধরকেও হেদায়েতের পথে পরিচালিত করুন। কিয়ামত পর্যন্ত আগত সকল মানুষকে সহজ-সরল পথে পরিচালিত করুন

 মুসলমানদের দায়িত্ব

আমি আমার সারা জীবন, আমার স্বাস্থ্য, আমার শক্তি, আমার সম্পত্তি, আমার যথা সর্বস্ব সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর আনুগত্যের ভিতরে থাকিয়া খরচ করিব। আল্লাহর আনুগত্যের বাহিরে খরচ করিব না। এই অঙ্গীকার করিয়া যে মুসলমান জাতি ভুক্ত হয় তাহাকে বলে মুসলমান।

এই আনুগত্যের আদর্শ হইবে একমাত্র মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহু সাল্লাল্লাহু (সঃ) এর আদর্শ।অন্য কারোর আদর্শ গ্রহণ করিব ন এবং উদ্দেশ্য হইবে শুধু ক্ষণস্থায়ী ছোট জীবনের আনন্দ ভোগ নয় বরং মানুষের দুনিয়া আখেরাতের ব্যাপক জীবনময় শান্তি মুক্তি অন্তরের অন্তঃস্থলে অবিচল অটল ভাবে আমার এই বিশ্বাস রাখিতে হইবে

সংক্ষিপ্ত কথায় বলা যায়, যে আল্লাহ্ তা'আলার হুকুম রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর তরীকা মানিয়া চলে তাহাকে মুসলমান বলে 

 

মুসলমানের করণীয় কাজ- ৫টি

() হালাল। () ফরজ। () ওয়াজিব। () সুন্নাত। () নফল। 


মুসলমানের বর্জনীয় কাজ- ৫টি

() কুফর। () শিরিক। () হারাম। () বেদায়াত। () মাকরূহ। 


ছালামের লাভ

() ছাওয়াব পায়। () দোয়া পায়। () তারিফ পায় (প্রশংসা) 

 

আল্লাহর আমানত কয়টি ?

() জান। (২) মাল। () সময়। () মেহনতকারীর ‡hvগ্যতা বা ক্ষমতা।

 

ভাল খারাপ হওয়ার পন্থা

 (), দেখা। () শুনা। () বলা। () চিন্তা করা। এই চার ব্যবহার ভাল হইলে মানুষ ভাল হয়, খারাপ হইলে মানুষ খারাপ হয়, (তাই ভাল কাজে ভাল লোকের সঙ্গে থাকিবে) 

 

কবরে তিন প্রশ্ন :

() তোমার রব কে? () তোমার দ্বীন কি? () তোমার নবী কে

উত্তর : () আল্লাহ্। () ইসলাম। () হযরত মুহাম্মাদ (সা.)

 

হাশরের ময়দানে চারটি প্রশ্ন :

() সারাজীবন কোন্ কাজে খরচ করিয়াছ? () যৌবনকাল কোন্ কাজে খরচ করিয়াছ? (৩) মাল কোন পথে আয় করিয়াছ ও কোন্ পথে ব্যয় করিয়াছ? () এলেম অনুযায়ী কি পরিমাণ আমল করিয়াছ ?

 

হাশরের ময়দানে বিচার ব্যবস্থা:

() ঈমান কুফরের বিচার। এই কোর্টে ক্ষমার কোন প্রশ্ন নাই। () বান্দার হকের বিচার। এই কোর্টে হকদারের হক অবশ্যই আদায় করিয়া দেওয়া হইবে। () আল্লাহ্ পাকের হক আদায়ের বিচার। এই কোর্টে আল্লাহ স্বীয় বখশিশের দ্বার খুলিয়া দিবেন। 

 

আমরা সবাই কয়েকটা কথা বলি কিন্তু কর্মে নাই :

যথা : () আল্লাহকে মালিক বলি, কিন্তু তার কাজে মনে হয় সে স্বাধীন। () রিজিকের মালিক আল্লাহকে বলি, কিন্তু হাতে কোন ব্যবস্থা না থাকিলে পেরেশান। () আখেরাতকে আসল জীবন বলি, কিন্তু কাজে দেখা যায় দুনিয়ার গুরুত্ব বেশী। () নবীর উম্মত দাবী করে, কিন্তু সমালোচনা করিলে দেখা যায় নবীর দুশমনের ত্বরিকায় কাজ করে। () দুনিয়াকে অস্থায়ী বলি, কিন্তু কাজ-কর্মে দেখা যায় সে চিরকাল থাকিবে, মরিবে না। 

 

১০টি কাজের ১০টি গুণ :

 () তাওবায়- গুনাহ্ নষ্ট হয়। () ধোকায়- রিজিক নষ্ট হয়। () গীবত আমল নষ্ট করে। () বদ চিন্তায়- হায়াত নষ্ট হয়। () ছদকায়- বালা দূর করে। () গোস্বায়- আকল নষ্ট হয়। () ঈমানের কমজুরিতে দান-খয়রাত বন্ধ করে। () তাকাব্বরী- এলেম নষ্ট করে। () নেকী-বদী নষ্ট করে। (১০) ইনছাফ-জুলুম নষ্ট করে। 

 

মুসলমানের হক কয়টি কি কি? :

() দেখিলে ছালাম করা। () সৎকাজের আদেশ করা, অসৎ কাজে নিষেধ করা। () ডাকিলে হাজির হওয়া। () মুছীবতে সাহায্য করা। () হাঁচির উত্তর দেওয়া। () এন্তেকাল করিলে কাফন-দাফনে হাজির থাকা। 

 

প্রকৃত বুদ্ধিমান কে? :

() যে দুনিয়া তাকে ত্যাগ করার আগে সে দুনিয়া ত্যাগ করে। () যে কবরে যাওয়ার আগে কবরের ছামান তৈরী করে। () যে আল্লাহর কাছে হিসাব দেওয়ার জন্য তৈরী হয়। 

 

হতভাগা কে? :

যে দুনিয়ার জরুরতে আখেরাত হইতে কর্জ লয়, অনেক নেকী থাকার পরেও অন্যের দেনার ক্ষতিপূরণ দিতে দিতে অন্যের গুনাহ মাথায় নিয়ে দোযখে যাইবে (অর্থাৎ যে এখানে জুলুম করে।

মৃত্যুর সময় ভাগাভাগী :

() মাল ওয়ারিশের। () রূহ আজরাইলের। () গোস্ত পোকা-মাকড়ের। () হাঁড় মাটির। () ঈমানের উপর শয়তানের হামলা। () নিজের জন্য আমল। 

 

মানুষের প্রকারভেদ :

১। () ঈমান, () আমল, () প্রচারওয়ালা।

২। () ঈমান আছে () আমলওয়ালা। () প্রচার নাই। 

৩। () ঈমান আছে। () আমল নাই। () প্রচার নাই।

৪। () ঈমান, () আমল, () প্রচার, কোনটাই নাই। সে কাফের কঠিন শাস্তির যোগ্য |

 

৩টি অপরিহার্য গুণের কথা

() এখলাছ অর্থ- ৩টি থেকে বিরত থাকার নাম। () অর্থ, () শর্ত () ব্যক্তিত্ব। () মেহনত- (নিরলস ভাবে কাজে লেগে থাকার নাম।) () শফক্বত অর্থ- জরুরত মোতাবেক বা প্রয়োজন অনুযায়ী কাজ সমাধা করিয়া দেওয়ার নাম। 

 

কামিয়াবীর জন্য ৩টি গুণ অপরিহার্য :

 () যোশ অর্থ- পূর্ণ আকাংখা উদ্যম থাকার নাম। () হুশ অর্থ- পর্যায়ক্রমে কাজ চালিয়ে যাওয়ার নাম। (এস্তেকামাত অর্থ- কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অটল-অনড় থাকার নাম।

 

তিন ব্যক্তি বিনা হিসাবে বেহেশতে প্রবেশ করিবে :

() আদেল বাদশাহ () কুরআনের বাহক যিনি উহাতে কোন অতিরঞ্জিত করেন নাই। () যেই ব্যক্তি জান-মাল লইয়া আল্লাহর রাস্তায় বাহির হয়। 

 

তিন ব্যক্তি বিনা হিসাবে জাহান্নামে যাইবে:

() বদ মেজাজ অহংকারী ব্যক্তি () যাহারা নবীর সহিত শত্রুতা রাখে () জীব-জন্তুর ছবি অংকনকারী। 

 

হযরত খিজির (আঃ)-এর তক্তিতে লেখা সাতটি উপদেশ।

হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) মুনাব্বেহাত গ্রন্থে লিখিয়াছেন- হযরত উছমান (রা.) হইতে বর্ণিত আছে, খিজির (আঃ) ভগ্ন দেওয়ালের নীচ হইতে এতীম ছেলেদের জন্য যে সম্পদ বাহির করিয়াছিলেন, উহা ছিল একটা স্বর্ণের পাত। উহাতে নিম্ন লিখিত ৭টি লাইন লেখা ছিল 

১। আমি আশ্চর্যবোধ করি ব্যক্তির উপর, যে মউতকে নিশ্চিত ভাবে জানিয়াও কেমন করিয়া হাসে।

২। আমার আশ্চর্য লাগে ব্যক্তির উপর, যে ইহা জানে যে এই দুনিয়া একদিন খতম হইয়া যাইবে। তবুও কেমন করিয়া দুনিয়ার দিকে আকৃষ্ট হয়। 

আমার আশ্চর্য লাগে ব্যক্তির উপর, যে উহা জানে যে সবকিছুই আল্লাহর তরফ হইতে নির্দিষ্ট হইয়া আছে, (অর্থাৎ তকদীর বিশ্বাস করে।) তবুও তাহার কোন জিনিস হাসিল না হইলে কেন আফসোস করে। 

আমার আশ্চর্য লাগে ব্যক্তির উপর, যার আখেরাতে হিসাব দেওয়ার পূর্ণ বিশ্বাস আছে, তবুও সে ধন-সম্পদ জমা করে। 

৫। আমি আশ্চর্যবোধ করি ব্যক্তির উপর, যে জাহান্নামের আগুন বিশ্বাস করে, তবুও সে কেমন করিয়া গুনাহ করে 

৬। আমি আশ্চর্যবোধ করি ব্যক্তির উপর, যে আল্লাহ্ পাককে জানে, তবুও সে কেমন করিয়া অন্য জিনিসের আলোচনা করে। 

৭। আমার আশ্চর্য লাগে ব্যক্তির উপর, যে বেহেশতের সুখ-শান্তির কথা জানে, তবুও সে কি করিয়া দুনিয়ার কোন জিনিসের দ্বারা শান্তি পায়।

 

তাবলীগে সাধারণ ১২ টি কাজ :

৪টি কাজ বেশী বেশী করি যথা - () দাওয়াত। () তা'লীম () যিকির। () ইবাদত (খেদমত) 

৪টি কাজ কম করি যথা- () কম খাইব () কম ঘুমাইব। () কম কথা বলিব () মসজিদের বাহিরে কম সময় কাটাইব।

৪টি কাজ মোটেই করিব না যথা- () ছওয়াল করিব না () ছওয়ালের ভান করিব না। () বিনা এজাজতে কাহারও কোন কিছু ব্যবহার করিব না। () প্রয়োজনের অতিরিক্ত খরচ করিব না। 

 

তারুফি বয়ান :

আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহপাকের বহুত বড় এহছান আর ফজল করম, তিনি নিজ দয়ায়, নিজ মায়ায় আমাদের সকলকে মসজিদে আসিবার তৌফীক দান করেছেন। আল্লাহ পাক যাদের পছন্দ করেন, তাদেরই মসজিদে আসার তৌফীক দান করেন তারপর দ্বীনের এক ফিকির নিয়ে বসার সুযোগ দিয়েছেন। এক লাখ বা দুই লাখ চব্বিশ হাজার পয়গাম্বর যে কাজ করে গেছেন। 

কুরআনের ঘোষণা এই যে, হে দুনিয়ার মানুষ! তোমরা আল্লাহকে এক বলে স্বীকার করে নাও, তোমরা কামিয়াব হয়ে যাবে, অর্থাৎ সকলেই জান্নাতি হয়ে যাবে দ্বীনকে দুনিয়ার বুকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সমস্ত নবী পয়গাম্বর কষ্ট মুজাহাদা সহ্য করেছেন 

হযরত ইব্রাহীম (আঃ) নমরূদের আগুনে প্রবেশ করেছেন। হযরত ইউনুছ (আঃ) মাছের পেটে গিয়াছিলেন। হযরত ঈসা (আঃ)-এর পরে ছয়শত বৎসরের উর্ধ্বে দ্বীনের দাওয়াত না থাকার কারণে কাবাগৃহে ৩৬০টি দেবমূর্তি আশ্রয় নিয়েছিল আখেরী নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) নুবুওয়াত প্রাপ্ত হইয়া দ্বীনের দাওয়াত যখন মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌছাতে লাগিলেন তখন তাহাকে অপমাণিত লাঞ্ছিত হতে হয়েছে। যে দেহে মশা-মাছি পড়া হারাম ছিল, সেই দেহে তায়েফবাসীরা পাথর মেরে সারা দেহ রক্তাক্ত করেছিল এমন কি তাঁহার জুতা মুবারক পায়ে আটকে গিয়াছিল তবুও তিনি তাদের অভিশাপ দেন নাই

" হুজুর পাক (সা.) দ্বীন প্রচারে বিফল হইয়া আল্লাহ পাকের হুকুমে মদীনায় হিজরত করেন। মদীনাবাসীরা তাঁহাকে জান-মাল সময় দিয়া নুছরত করেন তখন দ্বীন জিন্দা হয় যাহারা হিজরত করিয়াছিল তাহারা মুহাজের নামে এবং যারা নুছরাত করিয়াছিল তাহারা আনছার নামে পরিচিত। আল্লাহ্ পাক কুরআনে বলেছেন, “ তোমরা যদি একটি কথাও জান তবে অন্যের নিকট পৌঁছিয়ে দাও ভাই দ্বীনের দাওয়াতের এক নকল হরকত নিয়ে এক মুবারক জামায়াত আপনাদের মসজিদে উপস্থিত জামায়াত এই মসজিদে ৩দিন থাকবে, কোন্ কোন্ ভাই নুছরত করার জন্য তৈরী আছেন। 


পরামর্শ উদ্দেশ্য :-

সারা আলমের দ্বীনের তাজাকে সামনে রেখে সাথী ভাইদের খেয়াল নিয়ে আগামী ২৪ ঘন্টা কাজের একই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া ৩টি বিষয়ের উপর পরামর্শ করা। () কিভাবে এলাকা থেকে নগদ জামায়াত বের করা যায় তার ফিকির করা () নিজে সাথী ভাইরা যেন জ্ঞানী-গুণী কর্মঠ কর্মী দায়ী বনে যায় () এলাকায় যদি মসজিদ ওয়ারী ৫কাজ চালু থাকে তবে জোরদার করা, আর না থাকলে চালু করা। 

লাভ : () পরামর্শ করা আল্লাহর হুকুম, নবীর সুন্নাত, মুমিনের সিফাত।। 

() পরামর্শ করে কাজ করিলে খায়ের-বরকত হয় () পরামর্শ করে কাজ করিলে জোড়-মিল, মুহাব্বত পয়দা হয়। () পরামর্শ করিয়া কাজ করিলে তোড় খতম হয়। () পরামর্শ করে কাজ করিলে উত্তম বদলা অতি শীঘ্র পাওয়া যায়। () পরামর্শ করে কাজ করিলে অহির বরকত পাওয়া যায় 

আদব : () পরামর্শের আগে একজন জিম্বাদার না-বালেগ পাগল মহিলা যেন না হয়

() ডান দিক থেকে খেয়াল পেশ করা () কাহারও খেয়াল কেহ কাটা () দিল থেকে দ্বীনের দিকে মুতাওয়াজ্জা হয়ে খেয়াল পেশ করা। () আমার খেয়াল অনুযায়ী রায় হলে খুশী না হওয়া, এস্তেগফার পড়া। কারণ খারাপি আসলে আমি দায়ী হয়ে যাব () আমার খেয়াল অনুযায়ী রায় না হলে বেজার না হওয়া, আলহামদুলিল্লাহ পড়া () পরামর্শের আগে কোন পরামর্শ না করি পরামর্শের পরে কোন সমালোচনা না করি। () জিম্মাদার যে ফয়ছালা দেন, তাহা বিনা আপত্তিতে মেনে নেওয়া () জিম্মাদার ইচ্ছা করিলে সাথীদের খেয়াল না নিয়ে ফয়ছালা দিতে পারেন 

তালীম প্রকার :

() কিতাবী তা'লীম। () কুরআনী তা'লীম () ৬ গুণের আলোচনা () ফরজিয়াতের আলোচনা 

উদ্দেশ্য :- কিতাবী তালীমের ফাজায়েলের বর্ণনা দ্বারা দ্বীনী এলেমের আমলের ছহী তলব বা খাহেশ দিলে পয়দা করা 

লাভ :- () তালীমের দ্বারা এলেম আসে, এলেমের দ্বারা আমল সুন্দর। হয় () তা'লীমের দ্বারা আল্লাহপাক দুনিয়া আখেরাতে ইজ্জতের সঙ্গে পালেন () তালীমের দ্বারা আছমানি নূর হাছিল হয় () তালীমের দ্বারা দিলের জাহিলিয়াত অজ্ঞতা দূর হয় () তালীমের দ্বারা অহির বরকত পাওয়া যায় () আল্লাহ্ পাকের খাস রহমত নাজিল হয় () তা'লীমের মজলিসকে ফেরেশতারা চর্তুদিকে বেষ্টন করিয়া রাখে। () তালীমের মজলিসকে আছমানবাসীরা ঐরূপ উজ্জল দেখেন, যেরূপ দুনিয়াবাসীরা আসমানের তারকারাশিকে ঝলমল করিতে দেখেন 

হাসিল করার তরিকা :

বসিবার আদব : () সুন্নাত তরীকায় বসি () গোলাকারে গায় গায় মিলে বসি () মুজাহাদার সঙ্গে বসি () জরুরত দাবাইয়া বসি 

শুনিবার আদব - () দিলের কানে শুনি () আমলের নিয়্যতে শুনি () অন্যের নিকট পৌছানোর নিয়্যতে শুনি। () মুতাকাল্লেমের দিকে তাকাইয়া শুনি 

আল্লাহপাকের নাম শুনিলে জাল্লাজালালুহু, হুজুর (সা.)-এর নাম শুনিলে (সা.) বলি নবী ফেরেশতাদের নাম শুনিলে (.) বলি। ছাহাবীদের নাম শুনলে (রা.) আনহু বলি এবং মেয়ে ছাহাবীদের নাম শুনিলে (রা.) আনহা বলি বুজুর্গানের নাম শুনিলে (রা.) বলি

 

গাশতের আদব কত প্রকার কি কি?

() খুছুছী () উমূমী () তালীমী। () তাশকিলী () উসূলী। গাত ফার্সি শব্দ অর্থ দ্বীনের কাজে ঘোরাফেরা করা দ্বীনের কাজে এক সকাল বা এক বৈকাল ঘোরাফেরা করা দুনিয়ায় যত নেক আমল আছে তার চেয়ে উত্তম দ্বীনের দাওয়াত সমস্ত আমলের মেরুদন্ড দাওয়াত থাকবে তো দ্বীন থাকবে, দ্বীন থাকবে তো দুনিয়া থাকবে দাওয়াত থাকবে না, দ্বীন থাকবে না, দুনিয়াও থাকবে না। 

() দ্বীনের জন্য দাওয়াত এত জরুরী, যেমন মাছের জন্য পানি জরুরী।

() দেহের জন্য যেমন মাথা জরুরী, দ্বীনের জন্য দাওয়াত ততো জরুরী এই দ্বীনকে দুনিয়ার বুকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এক লাখ বা দুই লাখ ২৪ হাজার পয়গাম্বরগণ একই কালেমার দাওয়াত নিয়ে এসেছেন। তোমরা যদি কালেমা স্বীকার কর তাহা হইলে কামিয়াব হইয়া যাইবে এখন আর কোন নবী আসিবে না।


দাওয়াতের কাজে বের হলে লাভ :

() প্রতি কদমে ৭০০ করে নেকী পাওয়া যাবে ৭০০ গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। () এই কাজে পায়ে যে ধূলাবালি লাগবে তাহাও দোজখের আগুন একত্রিত হবে না () প্রতি কথায় বৎসর নফল ইবাদতের ছাওয়াব পাওয়া যাইবে। () দাওয়াতের কাজে কিছু সময় অপেক্ষা করিলে, শবে কদরের রাত্রে কাবা শরীফে সারা রাত্রি দাঁড়াইয়া ইবাদত করার ছাওয়াব হইতেও উত্তম দাওয়াতের কাজে দুই জামায়াতে শ্রেণীর লোক লাগবে।

 

মসজিদে শ্রেণী যথা-

() একজন মুতাকাল্লেম দ্বীনের আলোচনা করিবেন () কয়েকজন মামূর আলোচনা শুনিবেন। () একজন যিকিরে থাকিবেন () একজন এস্তেকবালে থাকিবেন 

বাহিরে জামায়াতে শ্রেণীর লোক থাকিবে :

() একজন স্থানীয় রাহবার। () মুতাকাল্লেম () কয়েকজন মামূর () একজন জিম্মাদার, রাহবরের কাজ কোন বাড়ীতে গিয়ে লোককে কাজ থেকে ফারাক করে এনে মুতাকাল্লেমের নিকট পৌছাইয়া দিবেন মুতাকাল্লেম তাহার নিকট আজিজির সহিত নরম ভাষায় তৌহিদ, আখেরাত রেছালাত সম্বন্ধে কিছু আলোচনা করিবেন যে আমরা একদিন ছিলাম না, এখন আছি, আবার একদিন থাকিব না। আমরা প্রত্যেকেই শান্তি চাই, এই শান্তি কিভাবে আসবে? আল্লাহর হুকুম মালে হুজুর পাক (সা.) তরিকায় চললে দুজাহানে, শান্তি কামিয়াবী এই কথার বিশ্বাস আমার দিলে আপনার দিলে, কেয়ামত পর্যন্ত সমস্ত আনেওয়ালা উম্মতের দিলে আসে মজবুত হয় 

এই জন্য হুজুর পাক (সা.)-এর তরীকায় মেহনত করিতে হইবে এই সম্পর্কে মসজিদে জরুরী আলোচনা হইতেছে, আপনি নগদ মসজিদে চলুন।  ব্যক্তি যদি আসে একজন মানুষকে দিয়ে মসজিদে পাঠাইয়া দিতে হইবে অন্যথায় তাহাকে হাঁ এর উপর রেখে আসতে হবে মামুরদের মুখে থাকবে যিকির, দিলে থাকবে ফিকির, হে আল্লাহ! মুতাকাল্লেমের মুখ দিয়ে এমন কথা বাহির করুন, যাতে ব্যক্তির দিল মসজিদ মুখী হয়ে যায়

জামায়াত যখন দাওয়াতের কাজে প্রথম কদম উঠাবে, দ্বিতীয় কদম উঠানোর আগে আল্লাহ পাক তাদের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিবেন রাস্তার ডান দিক দিয়া চলিবে, চুক্ষুর হেফাজত করে চলিবে, এলাকা লম্বা হইলে শেষ প্রান্ত থেকে দাওয়াত দিয়ে মসজিদে ফিরে আসতে হবে এলাকা গোলাকার হইলে ডান দিক থেকে দাওয়াত দিয়ে মসজিদে পৌছিতে হইবে। দাওয়াত শেষে এস্তেগফার পড়িতে পড়িতে মসজিদে পৌছিতে হইবে জামায়াতে যোগ দান করার পর যার জরুরতে যাইবে।  

মাগরিব বাদ বয়ান তাশকিল-এর নিয়মঃ

ভাই দোস্ত-বুজুর্গ আল্লাহ্ পাকের এহছান ফজল করম, আমরা বিভিন্ন গোত্রের লোক একত্রিত হয়ে মাগরিবের ফরজ নামাজ আদায় করেছি এবং তারপর দ্বীনের এক ফিকির নিয়ে বসতে পেরেছি, তার জন্য আমরা আল্লাহর শোকর আদায় করি। সকলে বলি আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তাআলা কুরআন পাকে এরশাদ করেন- 

(লায়িন শাকারতুম লা-আজিদান্নাকুম, ওয়ালায়িন কাফারতুম ইন্না আজাবী লা-শাদীদ)

 আমার নেয়ামত পেয়ে যে নেয়ামতের শোকরগুজারী করে আমি তার নেয়ামত বাড়াইয়া দেই এবং যে নেয়ামতের অস্বীকার করে আমি তাহার নেয়ামত ছিনাইয়া নেই আজাবে গ্রেপ্তার করি।

সমগ্র মানব জাতির সুখ-শান্তি সফলতা কামিয়াবী আল্লাহ তাআলা একমাত্র দ্বীনের মধ্যে রেখেছেন। দ্বীন জিন্দেগীতে তখনই প্রতিষ্ঠিত হবে যখন তার জন্য মেহনত করা হবে সুতরাং যে কেহ খাস নিয়্যতে নিজের জান-মাল, সময় নিয়ে আল্লাহ্র রাস্তায় বের হয়ে ছহীহ্ তরীকায় মেহনত করবে, ইনশা আল্লাহ্ অতি সহজেই তার মধ্যে পুরা দ্বীনের উপর চলার যোগ্যতা পয়দা হবে দ্বীন আল্লাহর নিকট বড়ই মাহবুব। দ্বীন দুনিয়ার বুকে দাওয়াতের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে দাওয়াত হচ্ছে ঈমানের মেহনত। হযরত ঈছা (আঃ)-এর পরে ছয়শত বৎসরের উর্ধ্বে দাওয়াতের কাজ না থাকার কারণে বাইতুল্লাহ্ তথা আল্লাহর ঘরে ৩৬০ টি মূর্তি উঠেছিল। আবার তাহারাই ঈমান আনিবার পর মূর্তিগুলো বের করে দিয়াছিল। 

আল্লাহ পাক কুরআনে বলেছেন- “দুনিয়াটা আখেরাতের ক্ষেত স্বরূপ ।” দুনিয়ার জীবন হইল কামাইয়ের জায়গা, আর আখেরাত হইল ভোগের জায়গা এখন কামাইয়ের জায়গায় যদি কষ্ট না করে তাহলে বাড়ী ফিরিয়া সে কিছুই ভোগ করিতে পারিবে না। ঠিক তেমনি দুনিয়া হইল মুমিনের জায়গা যে দুনিয়াতে কষ্ট করে ঈমান আমল বানাবে, সে মহা আনন্দে আখেরাতের বাড়ী ফিরে মনে যা চায় তাই ভোগ করিবে। আর দুনিয়াতে যে কামাই না করে, কেবল ভোগের চিন্তা করবে, আরাম-আয়েশের চিন্তা করবে, তাকে আসল আখেরাতে খালি হাতে ফিরে কেবল কষ্টই ভোগ করিতে হইবে 

আল্লাহ পাক মানুষ সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদত-বন্দেগী করার জন্য আর আল্লাহপাক ১৭,৯৯৯ মাখলুক সৃষ্টি করেছেন প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে মানুষের খেদমতের জন্য আর মানুষের ঐশ্বর্য সম্পদের মধ্যে শান্তি, কামিয়াবীও সফলতা রাখেন নাই শান্তি, কামিয়াবী সফলতা রেখেছেন ঈমান আমলের মধ্যে যে ৫টি বস্তুর জন্য মানুষ সব সময় আকাংখিত, সেই ৫টি জিনিস আল্লাহপাকের কুদরতি হাতে, যাহা আল্লাহ পূরণ করবেন কাল কিয়ামতে। মানুষ শত চেষ্টা করলেও তাহা হাছিল করতে পারবে না এই বস্তু হইল-() অনন্ত জীবন () অনন্ত যৌবন () কোমল শয্যা, সুরম্য বিশিষ্ট বাড়ী () খাদ্য সামগ্রী () সুন্দর সুন্দর নারী আল্লাহপাক বলেছেন, যদি আমার হুকুম রাসূলের তরিকামতে দুনিয়াতে বসবাস করে ঈমান আমল তৈরি করে আস, তাহলে আখেরাতে চাহিদার জিন্দেগী পূর্ণ হবে না দেখা বস্তুর উপর বিশ্বাস আনার নাম হইল ঈমান ঈমান দুনিয়ার কোথাও কিনতে পাওয়া যায় না। ইহা হাছিল হবে একমাত্র দাওয়াতের মাধ্যমে দাওয়াত থাকবে তো দ্বীন থাকবে, দ্বীন থাকবে তো দুনিয়া থাকবে দাওয়াত থাকবে না, দ্বীনও থাকবে না, দুনিয়াও থাকবে না আল্লাহপাক দুনিয়ার নেজাম ভেঙ্গে দিবেন আল্লাহ্পাক আমাদেরকে অতি অল্প সময়ের জন্য দুনিয়াতে পাঠাইয়াছেন। এই সামান্য সময়ের মধ্যে ঈমান ও আমল তৈরির জন্য জান-মাল সময় নিয়ে ১চিল্লায়, ৩চিল্লায় আল্লাহর রাস্তায় বাহির হওয়ার জন্য কে কে রাজী আছেন, খুশি খুশি বলেন 

 

ফজর বাদ বয়ান :

আলহামদুলিল্লাহ সমস্ত প্রশংসাই আল্লাহ পাকের, যিনি আমাদেরকে অর্ধমৃত অবস্থা থেকে জাগাইয়া আল্লাহপাকের মহান হুকুম ফজরের দুই রাকআত ফরজ নামাজ মসজিদে এসে জামায়াতে তাকবীর উলার সহিত আদায় করার তৌফীক দান করেছেন। এশার নামাজ বাদ আমরা কয়েক দলে বিভক্ত হয়ে গিয়াছিলাম। একদল রাত্রিকে সুবর্ণ সুযোগ মনে করিয়া সারা রাত্রি ইবাদতে মশগুল ছিলেন আর এক দল রাত্রিকে সুবর্ণ সুযোগ মনে করিয়া সারা রাত্রি জেনা, চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি দস্যুবৃত্তি করে কাটিয়ে দিয়েছেন। কাহারো নিদ্রা চিরনিদ্রায় পরিণত হয়েছে কেহ হাসপাতালে সারা রাত্রি অশান্তিতে কাটিয়ে দিয়েছেন কোন ব্যক্তি ফজরের আযান শুনিয়া উত্তম রূপে অজু করিয়া মসজিদের দিকে রওয়ানা হয় কেমন যেন এহরাম বেধে হজ্জের দিকে রওয়ানা হইল তার প্রতি কদমে একটি করে নেকী লেখা হয় একটি করে গুনাহ মাফ হয়ে যায় মসজিদে যত সময় নামাজের জন্য দেরি করবে তত সময় নামাজেরই ছাওয়াব পাইতে থাকিবে। 

নামাজী ব্যক্তি যত সময় নামাজে থাকিবে তত সময় আল্লাহর রহমত বৃষ্টির মত পড়িতে থাকিবে। দাড়াইয়া নামাজ আদায় করিলে কেরাআতের প্রতি হরফে ১০০ করিয়া নেকী পাইবে বসিয়া পড়িলে ৫০ নেকী করিয়া পাইবে প্রথম তাকবীরে শরীক হওয়া দুনিয়ায় যত নেক আমল আছে তার চেয়ে উত্তম নামাজ সর্বশ্রেষ্ঠ জেহাদ নামাজী যখন রুকুতে যায়, তখন তাহার নিজের ওজন বরাবর স্বর্ণ আল্লাহর রাস্তায় দান করার ছাওয়াব তার আমলনামায় লেখা হয় নামাজী যখন। আত্তাহিয়্যাতু পড়ার জন্য বসে তখন সে হযরত আইউব (আঃ) হযরত ইয়াকুব (আঃ) এর মত দুইজন ছাওয়াব অর্জনকারীর ছাওয়াব পায় যে পর্যন্ত হুজুর পাক (সঃ) উপর দুরূদ পাঠ করা না হয়, তত সময় দোয়া আসমান যমীনের মাঝে " ঝুলিতে থাকে ডান দিকে ছালাম ফেরালে বেহেশতের ৮টি দরজা খোলা হয়ে যায় আর বাম দিকে ছালাম ফেরালে দোযখের ৭টি দরজা বন্ধ হয়ে যায়। নামাজ বাদে যদি কেহ যিকিরকারীর পাশে বসে থাকে, তাহলে সে ৪জন গোলাম আজাদ করার ছাওয়াব পাইবে ১টি গোলামের মূল্য ১২ হাজার টাকা, ৪টির মূল্য ৪৮ হাজার টাকা দান করার ছাওয়াব পাইবে। তার পর দুই রাকআত এশরাক নামাজ সূর্য উদয়ের ২২/২৩ মিনিট পরে পড়ে তবে একটি উমরা হজ্জ একটি কবুল কৃত হজ্জের ছাওয়াব পাইবে আরও দুই রাকআত নামাজ আদায় করলে আল্লাহ্ পাক তাহার সারাদিনের জিম্মাদার হয়ে যাইবেন। 

সূরা হাশরের শেষ আয়াত পাঠ করিলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৭০ হাজার ফেরেশতা তার জন্য মাগফেরাত কামনা করিবেন। মাগরিবের নামাজের পর পড়িলে সারা রাত্রি মাগফেরাতের দোয়া করিতে থাকেন ১০০ বার ছুবহানাল্লাহ পাঠ করিলে ১০০ গোলাম আজাদ করার ছাওয়াব পাইবে ১০০ বার আলহামদুলিল্লাহ পাঠ করিলে যুদ্ধের ময়দানে ছামানাসহ ১০০ ঘোড়া দান করার ছাওয়াব পাইবে। ১০০ বার লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু পাঠ করিলে আসমান যমীনের ফাকা জায়গা নেকীতে ভর্তি হয়ে যাবে। যে ব্যক্তি-

লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকা-লাহু আহদান সামাদান লাম ইয়ালিদওয়া লাম ইউলাদ ওয়ালাম ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ” পাঠ করিবে সে বিশ লক্ষ নেকী পাইবে। হুজুর পাক (সা.)-এর হাদীসে আছে-(মান তামান্থাকা বিসুন্নতী ইনদা ফাছাদি উম্মাতি ফালাহু আজরু মিয়াতি সাহীদিন) যে ব্যক্তি ফেতনা-ফাসাদের জামানায় আমার একটি সুন্নাতকে আঁকড়ে ধরে সে ১০০ শহীদের ছাওয়াব লাভ করিবে এক ওয়াক্ত নামাজ যে আদায় করিল সে ,৩৫,৫৪,৪৩২ নেকী পাইল। আর যে নামাজ ছাড়িয়া দিল সে ২৩০, ৪০ লক্ষ বছর শাস্তি ভোগ করিবে, অর্থাৎ ৮০ হোকবা। কাজা আদায় করিলে ৭৯ হোকবা মাফ অর্থাৎ হোকবা কোটি ৮৮ লক্ষ বৎসর শাস্তি ভোগ করিবে। 

যারা নামাজে আসে নাই তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেল। তাদের ডাকার জিম্মাদারী হুজুর পাক (সা.) আমাদের উপর রেখে গেছেন আল্লাহ ভুলা বান্দাকে ডেকে নামাজে দাড় করাইয়া দিলে কবূলকৃত নামাজের ছাওয়াব পাওয়া যাইবে ভাই দাওয়াতের জন্য কে কে রাজী আছেন, খুশি খুশি বলুন 

রাস্তার আদব :

রাস্তায় চলিবারকালে ৬টি আদব মানিয়া চলিতে হয়যথা- () রাস্তার ডাইনে চলি। () চক্ষুর হেফাজত (নীচের দিকে দেখে) করে চলি। () মুসলমান দেখিলে সালাম দেই সালামের জবাব দেই () সৎকাজের আদেশ করি অসৎকাজে নিষেধ করি () যিকিরে ফিকিরে চলি () রাস্তায় কোন কষ্টদায়ক জিনিস দেখিলে নিজে সরাই অথবা অপর ভাইকে। বলে দেই। 

 

৭টি আমলের দ্বারা সাতটি রোগের চিকিৎসা

() দাওয়াতের দ্বারা দিলের শিরক দূর হয় () নামাজের দ্বারা দিলের কুফরী দূর হয় () এলেমের দ্বারা দিলের জাহিলিয়াত দূর হয় () যিকিরের দ্বারা দিলের গাফলতি দূর হয় () একরামের দ্বারা অন্যায় দূর হয় () এখলাছের দ্বারা দিলের রিয়া, অহংকার তাকাব্দুরী দূর হয় () আল্লাহর রাস্তায় বের হওয়া দ্বারা দিলে একীন পয়দা হয়। 

 

মানুষ শ্রেণীতে বিভক্ত-

() আমলে হাইওয়ানি () আমলে এছানি () আমলে ইবাদতি () আমলে খেলাফতি  

 দায়ীর বিশেষ গুণ টি-

() পাহাড়ের মত অটল () আকাশের মত উদার। () মাটির মত নরম। () সূর্যের মত দাতা। () উটের মত ধৈর্যশীল () ব্যবসায়ীদের মত হিকমত () কৃষকের মত হিম্মত।। 

 

তিন কাজে আল্লাহর সাহায্য আসে :

() জিম্মাদারের অনুসরণ করা। () মসজিদের পরিবেশে থাকা। () সাথীদের সাথে জোড়-মিল থাকা

দাওয়াতে শ্রেণী বড় :

() কাজের বড়- তাবলীগওয়ালা। () দ্বীনের বড় আলেমগণ () দুনিয়ার বড়- সমাজের প্রধানগণ (চেয়ারম্যান/মেম্বার) 

() সবচেয়ে দামী কি?-ঈমান () সবচেয়ে বেদামী কি?-লাশ। () সবচেয়ে নিকটে কী? মৃত্যু () সবচেয়ে দূরে কি?-কবর

মানুষের গুণ ২টি () আল্লাহর হুকুম পালন করা () নাফরমানী না করা। 


(২) দ্রুত কর্ম শয়তানের কাজ কিন্তু ৫টি কর্ম তাড়াতাড়ি করা বিধেয়।

() কন্যা বালেগ হওয়ার পরপরই বিবাহের ব্যবস্থা করা বিধেয়। () কর্জ তাড়াতাড়ি পরিশোধ করা। () তাড়াতাড়ি মৃত ব্যক্তির কাফন-দাফনের ব্যবস্থা করা () তাড়াতাড়ি মেহমানের খেদমত করা () মৃত্যুর পূর্বেই আখেরাতের ছামানা জোগাড় করা 

 

এলান কত প্রকার কি কি? এবং এলান করার পদ্ধতি

ইনশাআল্লাহ্ দুনিয়াবাসীদের জন্য শান্তি, কামিয়াবী ইজ্জত আল্লাহ পাকের দ্বীনের ভিতরে দ্বীন কি করিয়া মানুষের মধ্যে আসে এই জন্য দ্বীনের মুবারক মেহনত নিয়ে একটি জামায়াত আপনাদের মসজিদে উপস্থিত নামাজ বাদ পরামর্শের জন্য সকলে বসি, বহুত ফায়দা হবে। 

 

আসর বাদ এলান (মুনাজাতের আগে):

ইনশাআল্লাহ্ দোয়া বাদ দাওয়াতের আমল নিয়ে জামায়াত মহল্লায় যাবে তার আদব বয়ান করা হবে, আমরা সকলে বসি, শুনলে বহুত ফায়দা হবে।

মাগরিব বাদ এলান (মুনাজাতের পর) :

ইনশাআল্লাহ বাকি নামাজ বাদ ঈমান আমলের মেহনত সম্পর্কে জরুরী বয়ান হবে, আমরা সকলে বসি শুনলে বহুত ফায়দা হবে 

 

অন্ধকার পাঁচ প্রকার এবং তার জন্য বাতি পাঁচ প্রকার:

হাফেজ ইবনে হাজার (রা.) মুনাব্বেহাত নামক গ্রন্থে হযরত আবু বকর ছিদ্দীক (রা.) হইতে বর্ণনা করেন, অন্ধকার পাঁচ প্রকার এবং উহার জন্য বাতিও পাঁচ প্রকার () দুনিয়াকে ভালোবাসা একটি অন্ধকার, উহার জন্য বাতি হইল পরহেজগারী () কবর একটি অন্ধকার, উহার জন্য আলো হইল- লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ। () গুনাহ একটি অন্ধকার, উহার জন্য আলো হইল তাওবা () আখেরাত একটি অন্ধকার, উহার জন্য আলো হইল আমল। () পুলছেরাত হইল একটি অন্ধকার, উহার জন্য আলো হইল একীন | আল্লাহ্ পাক কুরআন মজিদে জানাইয়াছেন, “তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করিব। 

যে ব্যক্তি জানিয়া শুনিয়া আল্লাহর যিকির হইতে গাফেল থাকিয়া গেল, আমি তাহার উপর একটা শয়তান নিযুক্ত করিয়া দেই। সেই শয়তান সর্বদা তার সঙ্গে থাকে এবং শয়তানগণ সম্মিলিতভাবে গাফেলকে সরল পথ হইতে গোমরাহ করিতে থাকে। অথচ তাহারা মনে করে যে আমরা সরল পথেই রহিয়াছি 

 

মসজিদওয়ার জামায়াতের মেহনতের মুজাকারা

মসজিদওয়ার জামায়াতের কাজ কি?

১। প্রতি মাসে ৩দিন করে আল্লাহ্র রাস্তায় লাগানো। ২। সাপ্তাহিক দুটি গাশত (একটি নিজ মহল্লার মসজিদে, অপরটি পার্শ্ববর্তী মহল্লার মসজিদে) প্রতিদিন দুটি তালীম, (একটি নিজ ঘরে অপরটি মসজিদে) রোজানা আড়াই ঘন্টা থেকে ঘন্টা পর্যন্ত দাওয়াতী মেহনত করা ৫। প্রতিদিন অল্প সময়ের জন্য পরামর্শ করা।

মসজিদওয়ার জামায়াতের সাথী কারা? যে মসজিদে যে সমস্ত মুসল্লী একাধিক ওয়াক্তের নামাজ পড়ে সে সমস্ত মুসল্লী সেই মসজিদের মসজিদওয়ার জামায়াতের সাথী। অথবা যে মুসল্লী ফজর এবং এশার নামাজ যে মসজিদে পড়ে সে সেই মসজিদের মসজিদওয়ার জামায়াতের সাথী শুধু যারা (তাবলীগী) আমলে জুড়ে তারাই মসজিদওয়ার জামায়াতের সাথী এমন মনে করা ঠিক নয়।

প্রতি মাসে তিন দিন আল্লাহর রাস্তায় লাগানো : প্রতি মাসে সপ্তাহ নির্ধারণ করে ৩দিনের জন্য আল্লাহর রাস্তায় লাগানো, এমন নয় যে এক মাসে লাগালাম আর এক মাসে লাগলাম না। প্রথম মাসে ২য় সপ্তাহে লাগালাম, আবার ২য় মাসে ৩য় সপ্তাহে লাগালাম। বরং প্রতি মাসে একই সপ্তাহে লাগানো। যদি প্রথম সপ্তাহে লাগাই পরবর্তী মাসগুলোতেও ১ম সপ্তাহে লাগাবো যদি ২য় সপ্তাহে লাগাই তাহলে পরবর্তী মাসগুলোতেও ২য় সপ্তাহে লাগাবো । তবে চাঁদের মাস হিসেবে লাগালে ভাল হয়। 

সপ্তাহে দুটি গাশত :  ১টি মহল্লার মসজিদে নিজেদের এলাকার মাকামী কাজকে শক্তিশালী করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো মাকামী গাত এটা হলো দাওয়াতী কাজের মেরুদন্ড মাকামী গাশত সাধারণত সরকারী ছুটির দিন অথবা যেদিন মহল্লায় বা গ্রামে লোকজন বেশি থাকে, সেদিন হলেই ভাল হয় যে এলাকার লোক যত বেশি মজবুতির সাথে মাকামী গাশত করবে, সে এলাকায় তত বেশী দ্বীনের পরিবেশ চালু হবে। দ্বীনদার বাড়বে, নামাজী বাড়বে। পুরা সপ্তাহ মাকামী কাজের জন্য এমনভাবে চেষ্টা-ফিকির করা, যাতে প্রতি সাপ্তাহিক গাশতের থেকে দিনের জামায়াত বের হতে পারে। সাপ্তাহিক গাশতের দিনকে খুশির দিন, ফসল কাটার দিন মনে করা, পুরা সপ্তাহের দাওয়াতী মেহনতের ফসল কাটা হয় মাকামী গাশতের দিনে, মহল্লায় মেহ্নত করে মাকামী গাশতের সাথী বাড়ানোর চেষ্টা করা যাদেরকে সপ্তাহ ভর দাওয়াত দেয়া হলো তাদেরকে মাকামী গাশতে অবশ্যই জুড়ানো যদি না জুড়ে পরবর্তী সপ্তাহে আবার তার পিছনে মেহনত করতে হবে। এভাবে মাকামী গাশতের মাধ্যমে এলাকার মধ্যে, মহল্লার মধ্যে, গ্রামের মধ্যে দ্বীনী পরিবেশ কায়েম করার জন্য মেহনত করা। আর এভাবে মেহনত চালু থাকলে আল্লাহর রহমত বরকত অবতীর্ণ হতে থাকবে আর বদদ্বীনীর পরিবেশ দূর হতে থাকবে। আল্লাহ্ তাআলা আযাব, গযব, ফেত্না-ফাসাদ উঠিয়ে নিবেন 

তবে হ্যা জন্য শর্ত হলো দিন এবং ওয়াক্ত নির্ধারণ করে নেয়া এমন নয় যে, এক সপ্তাহে রবিবারে আছরের পর গাশত করলাম, এভাবে করলে লোকই পাওয়া যাবে না। (আল্লাহ তা'আলা আমাদের সবাইকে আমল করার তৌফীক দান করুন) 

২য় গান্তটি মহল্লায় করা : নিজের মহল্লায় মাকামী গাশত চালু হয়ে যাওয়ার অর্থ হলো মহল্লায় আল্লাহর রহমত বরকত চালু হয়ে যাওয়া। নিজ মহল্লায় যখন আল্লাহর রহমত বরকত চালু হয়ে যাবে তখন পার্শ্ববর্তী মহল্লা থেকে বিভিন্ন খারাবী মহল্লায় ঢুকতে চেষ্টা করবে। এই সব খারাবী থেকে নিজ মহল্লাকে হেফাযত করার জন্য পার্শ্ববর্তী মহল্লার মানুষদেরকে দ্বীনের উপর উঠানোর জন্য পার্শ্ববর্তী মহল্লায় ২য় গাশত করা একান্ত জরুরী যার ২য় গাশত ঠিকমত হবে সে ১ম গাশতও ঠিকমত করতে পারবে। দ্বিতীয় গাশতের মজবুতির উপর নিজ মহল্লার গাশতে সাথীদের মজবুতি বৃদ্ধি পাবে।

প্রতিদিন দুই তা'লীম : প্রতিদিন দুইটি তালীম করা, ১টি নিজ মহল্লার মসজিদে আর একটি নিজ ঘরে "

নিজ মহল্লার মসজিদে : ওয়াক্ত নির্ধারণ করে যে কোন এক নামাজের পর অথবা যে ওয়াক্ত মুসল্লী বেশী বসতে পারবে, এমন এক ওয়াক্তে ফাযায়েলে আমলের কিতাব থেকে তালীম করা তালীম হলো মসজিদে নববীর আমলগুলোর একটি আমল। 

২য় তালীম নিজ ঘরে : দ্বীন পুরুষের জন্য যেমন জরুরী তেমন মহিলাদের জন্যও জরুরী কারণেই ঘরের মধ্যে তালীমের ব্যবস্থা করা খুবই জরুরী। ঘরের মাহরাম (যাদের সাথে দেখা জায়েয) সবাইকে নিয়ে প্রতিদিন নির্দিষ্ট এক সময়ে এই তালীম করবে এর দ্বারা ঘরের মধ্যে দ্বীনের পরিবেশ কায়েম হবে স্ত্রী, পুত্র, মেয়ে, মা-বোনদের মধ্যে দ্বীনের জেহান বসিবে দ্বীনের উপর চলার যোগ্যতা পয়দা হবে। তালীমের ব্যবস্থা ঘরে চালু থাকলে অন্য কোন ফেৎনা-ফাসাদ ঘরে ঢুকতে পারবে না। নিজের ঘরে দাওয়াত চালু রাখা খুবই জরুরী। না হয় অন্য দাওয়াত চালু হয়ে যাবে। যদি ঘরের মধ্যে শিক্ষিত কেহ না থাকে তাহলে মসজিদ থেকে যা শুনেছেন তাই ঘরে এসে মা-বোনও মেয়েদের শোনাইয়ে দিতে হবে 

. রোজানা আড়াই ঘন্টা থেকে আট ঘন্টা পর্যন্ত দাওয়াতী মেহ্নত করা :

প্রতিদিন আড়াই ঘন্টা থেকে আট ঘন্টা সময় নিয়ে মহল্লার প্রত্যেক অলিতে-গলিতে ঘরে ঘরে, দ্বারে দ্বারে, বার-বার যাওয়া। কেহ যদি আড়াই ঘন্টা সময় এক সাথে লাগাতে না পারে তাহলে কয়েকবারে আড়াই ঘন্টা পুরা করবে কেহ যদি কয়েকবারেও আড়াই ঘন্টা পরা করতে না পারে, তাহলে সে ২৪ ঘন্টায় যতটুকু সময় লাগাতে পারে ততটুকু সময়ই লাগাবে। তবে এটা দাওয়াতের সবচেয়ে নিম্নস্তর।

 

আড়াই থেকে আট ঘন্টা সময় কোন কাজে ব্যয় করবো?

সময়ে পরামর্শ করা পরামর্শের পর পুরাতন সাথীদের দেখা করা খোঁজ-খবর রাখা। নতুন সাথীদের সাথে সাক্ষাৎ করা মহল্লার মসজিদে জামায়াত আসলে তাদের খোঁজ-খবর নেয়া মহল্লার কেহ জামায়াতে বের হলে তার ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেয়া। মাকামী গাশত থেকে নগদ জামায়াত বের করার জন্য চেষ্টা করা ইত্যাদি

. রোজানা পরামর্শ করা :

দৈনিক যে কোন নামাজের পর সমস্ত মুসল্লিদেরকে নিয়ে দ্বীন জিন্দা করার উদ্দেশ্যে সমস্ত দুনিয়াকে সামনে রাখিয়া বিশেষ করিয়া নিজ দেশ, নিজ এলাকা/মহল্লা বা গ্রামকে টার্গেট বানাইয়া চিন্তা-ফিকির করা। এটার নামই রোজানা পরামর্শ অল্প সময়ের জন্য হলেও রোজানা পরামর্শ করা চাই। পরামর্শে কেহ বসুক বা না বসুক, আমি বসাবোই (ইনশাআল্লাহ) যদি কেহ নাও বসে তবে নিজে একা একা মসজিদের পিলার/খুঁটিকে সামনে নিয়া পরামর্শে বসে যাবো ইনশাআল্লাহ একজনের ফিকিরেই পুরা মহল্লা ফিকিরবান হয়ে যাবে পুরা মহল্লার সাথীরা পরামর্শ করনেওয়ালা হয়ে যাবে।

মেহনতের তরীকা : মনে করেন মহল্লা/গ্রামে ৩০০ টি ঘর আছে নিজেরা একটি লিস্ট তৈরী করুন এবং নাঙ্গার বসান, অতঃপর সাথীদের চারটা ভাগ করুন। একেক ভাগে ৭৫টি ঘর দিয়ে দেন। আর রাস্তা বা গলি নির্ধারিত করে দিন ১ম গ্রুপে -৭৫ টি ঘর দিয়ে দিন, ২য় গ্রুপে ৭৬-১৫০ পর্যন্ত, ৩য় গ্রুপে ১৫১-২২৫ পর্যন্ত, ৪র্থ গ্রুপে ২২৬-৩০০ পর্যন্ত মেহনত করবে (ইনশাআল্লাহ) 

 

 

 


No comments

Powered by Blogger.