Header Ads

Islamic Media Blog

Tarbayat-e-aulad (ইসলামের দৃষ্টিতে সন্তান পালন) - part -1। Islamic Media Blog

 

Tarbayat-e-Aulad
Tarbayat-e-Aulad, Part-1


Ziweq‡Z AvIjv`

Bmjv‡gi `„wó‡Z mšÍvb cÖwZcvjb

g~j D`y©t nvKxgyj D¤§Z †gvRv‡Ï‡` wgjøvZ

nhiZ gIjvbv Avkivd Avjx _vbex (int)


m~PxcÎ

1| mšÍvb cÖwZcvj‡b Kó ¯^xKvi Ges `ya cvb Kiv‡bvi dwRjZ

2| Kb¨v-mšÍvb cÖwZcvj‡bi dwRjZ

3| Mf©avi‡bi dwRjZ

4| mšÍv‡bi ¸iæZ¡ I dwRjZ

5| ivm~j (mt) Gi mšÍvb-cÖxwZ

6| mšÍvb-cÖwZi KviY

7| mšÍv‡bi evmbv

8| my-mšÍvb ciKv‡j Kv‡R Avwm‡e

9| Kz-mšÍvb g~mxe‡Zi KviY nq

10| †g‡q –mšÍvb nIqv ÿwZKi b‡n

11| mšÍvb cÖwZ cvj‡bi †c‡ikvbx

12| wbtmšÍvb‡`i cÖwZ     

13| †hB mšÍvb g„Zz¨eiY K‡i Zvnvi Rb¨ g„Zz¨B DËg wQj

14| wkï mšÍv‡bi g„Zz¨i †nKgZ I dwRjZ

15| evBZzj nvg` mgvPvi


1| mšÍvb cÖwZcvj‡b Kó ¯^xKvi Ges `ya cvb Kiv‡bvi dwRjZ

রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেনঃ নারীগণ গর্ভধারণ হইতে শুরু করিয়া সন্তানপ্রসব এবং তৎপরবর্তী দুধ ছাড়নো পর্যন্ত (যেই কষ্ট করে উহাতে) সে ইসলামী সীমান্তের প্রহরীর মত ছাওয়াব লাভ করে, (সীমান্তের প্রহরী প্রতিটি মুহূর্তে সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য প্রস্তুত থাকে) নারী যদি সময়সীমার মধ্যে ইন্তেকাল করে তবে সে শহীদের বরাবর ছাওয়াব লাভ করিবে।। 

রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেনঃ নারী যখন সন্তানকে দুধ পান করায় তখন প্রতি ঢোকে দুধের বরাবরে সে এইরূপ বিনিময় লাভ করে যেন কোন প্রাণীকে সে জীবন দান করিল পরে সে যখন সন্তানের দুধ ছাড়ায় তখন ফেরেশতা তাহার কাধ স্পর্শ করিয়া (সাবাসী দিয়া) বলে যে, তোমার বিগত জীবনের সকল গোনাহ ক্ষমা করিয়া দেওয়া হইয়াছে এখন ভবিষ্যতে যেই গোনাহ করিবে উহা লিপিবদ্ধ করা হইবে এই গোনাহের অর্থ ছগীরা (ছোট) গোনাহ তবে ছগীরা গোনাহ্ ক্ষমা হইয়া যাওয়াও কম কথা নহে।


2| Kb¨v-mšÍvb cÖwZcvj‡bi dwRjZ

রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেনঃ যেই ব্যক্তির তিনটি কন্যা-সন্তান হইবে এবং সে তাহাদিগকে এলেম-কালাম, আদব-কায়দা শিক্ষা দিবে এবং যত্নের সহিত প্রতিপালন করিবে তাহাদের উপর অনুগ্রহ করিবে, সেই ব্যক্তির উপর অবশ্যই জান্নাত ওয়াজিব হইয়া যাইবে 

ফায়দাঃ ছেলে-সন্তানের প্রতি মানুষের আকর্ষণ স্বভাবজাত চিরন্তন

এই কারণেই উহার ফজিলত বর্ণনার বিষয়টি শরীয়ত এতটা গুরুত্ব প্রদান করে নাই কিন্তু কন্যা-সন্তানকে যেহেতু নিকৃষ্ট মনে করা হইত, এই কারণেই তাহাদের লালন-পালনের ফজিলত বর্ণনা করা হইয়াছে।


3| Mf©avi‡bi dwRjZ

রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেনঃ যেই নারী কুমারী অবস্থায়, গর্ভাবস্থায়, প্রসবকালে কিংবা নেফাসের সময় ইন্তেকাল করে সে শাহাদাত প্রাপ্ত হয়।

রাসূলে মকবুল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেনঃ যেই নারীর হামল পড়িয়া যায়, সে যদি ছাওয়াবের আশায় ধৈর্যধারণ করে তবে সন্তান পরকালে নিজের মাতাকেও টানিয়া বেহেশতে লইয়া যাইবে

রাসূলে কারীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেনঃ যেই নারীর তিনটি সন্তান ইন্তেকাল করিল এবং ছাওয়াবের আশায় সে ধৈর্যধারণ করিল, সে জান্নাতে প্রবেশ করিবে এক মহিলা ছাহাবী আরজ করিল, হে আল্লাহর রাসূল! যার দুইটি সন্তান ইন্তেকাল করিল? তিনি এরশাদ করিলেন, দুই জনের ক্ষেত্রেও একই ছাওয়াব অন্য রেওয়ায়েতে আছে, এক ছাহাবী এক সন্তানের মৃত্যু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিলে তিনি উহারও বহু ছাওয়াবের কথা উল্লেখ করিলেন 

রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইয়াছেনঃ (নারীদের প্রতি) তোমরা কি ইহাতে রাজী নও যে, (অর্থাৎ রাজী হওয়া উচিত) যখন তোমাদের মধ্যে কেহ নিজের স্বামীর উছিলায় গর্ভবতী হয় এবং স্বামী তাহার উপর সন্তুষ্ট থাকে, তবে সে এই পরিমাণ ছাওয়াবের অধিকারী হয়, যেই পরিমাণ ছাওয়াবের অধিকারী হইয়া থাকে আল্লাহর পথের রোজাদার এবং বিদ্রি রজনীর এবাদতকারী

আর যখন তাহার প্রসব বেদনা উপস্থিত হয়, তখন তাহার শান্তি আরামের জন্য যেই সকল ছামান পরপারে মওজুদ করা হয়- সেই সম্পর্কে আকাশ মর্তবাসী কোন ধারণাই করিতে পারে না সন্তান প্রসব হওয়ার পর তাহার স্তন হইতে এমন একটি দুধের ফোটাও বাহির হয় না, যাহার পরিবর্তে কোন নেকী পাওয়া যায় না আর সন্তানের জন্য যদি তাহার রাত্রিজাগরণ করিতে হয়, তবে সে আল্লাহর পথে সত্তরটি গোলাম আজাদ করার ছাওয়াব লাভ করিয়া থাকে। 

এক মহিলা রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে হাজির হইল মহিলার একটি সন্তান ছিল তাহার কোলে এবং অপরটি অঙ্গুলি ধরিয়া হাঁটিতেছিল। রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিলেন, এই সকল মহিলা প্রথমতঃ গর্ভে সন্তান ধারণ করে, অতঃপর প্রসব করে এবং অতি যত্নের সহিত প্রতিপালন করে যদি তাহারা স্বামীর মনের সন্তুষ্টি হাসিল করিতে পারিত তবে বেহেশতী হইত 

রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেনঃ যেই- বিধবা নারী বিবাহের উপযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও এতীম সন্তানদিগকে লালন-পালন করিবার উদ্দেশ্যে বিবাহ করে নাই; বরং এতীমদের রক্ষণাবেক্ষণে যেই পরিশ্রম করিতে হইয়াছে, উহার কারণে তাহার রূপ-লাবণ্য মলীন হইয়া গিয়াছে এমনকি তাহার এতীম সন্তানগণ হয়ত মরিয়া গিয়াছে, কিংবা বয়ঃপ্রাপ্ত হইয়া স্বাধীন হইয়া গিয়াছে এইরূপ নারী বেহেশতে আমার সঙ্গে এত নিকটবর্তী হইবে যেন শাহাদাত অঙ্গুলি মধ্যমা অঙ্গুলি। 

 উপরোক্ত হাদীস দ্বারা বুঝা গেল যে, বিধবা বিবাহের অতিশয় তাকীদ কোরআন-হাদীসে থাকা সত্ত্বেও এতীম সন্তান পালনার্থে যদি কোন বিধবা দ্বিতীয় বিবাহ না করে তবে তাহার জন্য উহা জায়েজ; বরং উহা বিশেষ ফজিলতের কারণ হইবে কিন্তু যদি বিনা ওজরে নিছক কুলীনতার দোহাই দিয়া কিংবা হিন্দুয়ানী দেশাচারের খাতিরে দ্বিতীয় বিবাহকে দুষণীয় মনে করে, তবে সে শক্ত গোনাহগার হইবে


4| mšÍv‡bi ¸iæZ¡ I dwRjZ

রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেনঃ তোমরা এমন নারী বিবাহ কর যে স্বামীভক্তা হয় স্বামীকে প্রাণ দিয়া ভালবাসে এবং সন্তান-জন্ম হয় সন্তানদিগকে আদরে-যত্নে প্রতিপালন করে (যদি বিধবা হয় তবে পূর্বের বিবাহ হইতে আর অবিবাহিতা হইলে তাহার স্বাস্থ্য দ্বারা বুঝা যাইতে পারে বংশের অন্যান্য বিবাহিতা মেয়েদের আচার-ব্যবহার দ্বারা এই সকল বিষয় অনুমান করা যায় কেননা, সৎ সন্তান বেশী হইলে আমার উম্মত বৃদ্ধি পাইবে এবং কেয়ামতের দিন আমার উম্মত বেশী হওয়ার কারণে অপরাপর উম্মতের সম্মুখে আমি ফখর গৌরব করিতে পারিব  

সন্তান অধিক হওয়ারও বিবিধ উপকারিতা রহিয়াছে কারণ, সন্তান যদি সুসন্তান হয় তবে তাহারা পিতামাতার দরদ যতদূর বুঝে এবং খেদমত করে তরবিয়তে আওলাদ ততদূর অন্যের দ্বারা সম্ভব হয় না। মৃত্যুর পর তাহারা পিতামাতার জন্য মাগফেরাতের দোয়া করে এবং ছাওয়াব রেছানী করে। সন্তানের দ্বারা বংশ বৃদ্ধি পাইলে তাহাদের মাধ্যমে দ্বীনের আমলসমূহও জারী থাকে এবং ঐগুলির ছাওয়াব পাওয়া যায় যদি নাবালেগ অবস্থায় সন্তান মারা যায় তবে তাহারা কেয়ামতের দিন পিতার জন্য শাফাআত করিবে সন্তান যদি বড় হইয়া আলেম, হাফেজ, কারী বা আল্লাহওয়ালা হয়, তবে তাহারাও পিতামাতার শাফাআত করিবে সবচাইতে বড় উপকারিতা হইল- মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধি হইলে দুনিয়াতেও শক্তি বৃদ্ধি হয় এবং কেয়ামতের দিনও আমাদের প্রিয় নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে গৌরব করিবেন

 

5| ivm~j (mt) Gi mšÍvb-cÖxwZ

আল্লাহ পাক মাতাপিতার অন্তরে সন্তানের প্রতি এক অনাবিল মহাব্বত পয়দা করিয়া দিয়াছেন সন্তানের প্রতি এই ভালবাসা এমনই চিরন্তন যে, যেই সকল পবিত্র সত্ত্বা কেবল আল্লাহ পাকের এক মহাব্বতেই নিবেদিত; তাহারাও সন্তানের মহাব্বত ভালবাসা হইতে নিজেকে মুক্ত রাখিতে পারেন নাই 

স্বয়ং আল্লাহর হাবীব ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত হাসান হোছাইনকে এতটা মোহাব্বত করিতেন যে, একবার তিনি খোৎবারত অবস্থায় দেখিতে পাইলেন, হযরত হাছান-হোছাইন উঠি-পড়ি করিয়া কাঁপিতে কাঁপিতে মসজিদের দিকেই আসিতেছে এই দৃশ্য দেখিয়া তিনি কিছুতেই আর নিজেকে সংবরণ করিতে পারিলেন না খোৎবার মধ্যখানেই মিম্বর হইতে অবতরণ করিয়া তাহাদিগকে কোলে তুলিয়া লইলেন অতঃপর তিনি অবশিষ্ট খোৎবা সম্পন্ন করিলেন। 

কিন্তু বর্তমানে যদি কোন শায়েখ বুজুর্গ ব্যক্তি এইরূপ আচরণ করেন তবে সাধারণ লোকেরা হয়ত উহাকে তাহার পদমর্যাদা শানের খেলাফ আচরণ বলিয়া ধারণা করিবে কিন্তু প্রকৃত পক্ষে ইহা কোন অসঙ্গত আচরণ নহে, সাধারণ লোকেরা বরং অহংকার তাকাব্বরীকেই আত্মমর্যাদা সম্মানের বিষয় মনে করিতেছে 

রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের সন্তান হযরত ইবরাহীমের ইন্তেকালে এমন শোকাভিভূত হইয়া পড়িলেন যে, তিনি চোখের পানি ছাড়িয়া দিয়া বলিয়া উঠিলেন, ইবরাহীম! তোমার বিচ্ছেদে সত্যিই আমি মর্মাহত। 

মোটকথা, মহৎপ্রাণ পবিত্র সত্ত্বাবৰ্গও আওলাদের মোহাব্বত সন্তানের ভালবাসা হইতে মুক্ত ছিলেন না ইহা আল্লাহ পাকেরই হেকমত যে, তিনি আমাদের অন্তরে সন্তানের প্রতি অকৃত্রিম মহাব্বত পয়দা করিয়া দিয়াছেন পিতামাতার অন্তরে যদি সন্তানের প্রতি এই আবেগ-ভালবাসা মহাব্বত না থাকিত, তবে পিতামাতার পক্ষে সন্তানের হক আদায় এবং তাহাদের প্রতিপালন কোন ক্রমেই সম্ভব হইত না


6| mšÍvb-cÖwZi KviY

আল্লাহ পাক মাতাপিতার অন্তরে সন্তানের প্রতি এমন এক দুর্নিবার চিরন্তন আকর্ষণ সৃষ্টি করিয়া দিয়াছেন যে, যেই সন্তানটি মল-মূত্র দ্বারা সর্বদা নিজেকে নোংরা করিয়া রাখে (যেই দুষ্ট শিশুটি মাতাপিতার কোন শাসনই মানিতে চাহে না, হাতের কাছে যাহা পায় উহাই ভাঙ্গিয়া চুরমার করিয়া একাকার করিয়া ফেলে, আগুন-পানি, ব্যাঘ্র-সর্প কোন কিছুর সঙ্গেই মিতালী করিতে যাহার কোন আপত্তি নাই, নিজের কর্তব্য কর্মে কোন বাধা-বিঘ্ন শাসনের মোকাবেলায়ক্রন্দননামের একমাত্র অস্ত্র দ্বারা যে অনায়াশে সকলকে পরাভূত করিয়া ফেলে) যেই শিশুটি কখনো কাহারো কোন খেদমত তো করেই না; বরং সর্বদা যে অপরের দ্বারাই নিজের যাবতীয় সেবা-যত্ন করাইয়া লয়; এহেন স্বার্থপর শিশুটির প্রতি যদি মানুষের উজাড় করা আবেগ ভালবাসার সম্পর্ক না থাকিত, তবে কিছুতেই সে যাবতীয় প্রতিকূলতা উপেক্ষা করিয়া তাহাকে লালন করিতে পারিত না শিশুর প্রতিটি আচার-আচরণ দেখিয়াই মনে হয় যেন সে একটি বদ্ধ পাগল ছাড়া আর কিছুই নহে, অথচ তাহার এই পাগলামী দেখিয়াই মাতাপিতার হৃদয়ে আনন্দের কোন সীমা থাকে না তাহার শাস্তিযোগ্য অপরাধগুলিও সর্বদা ক্ষমার চক্ষে দেখা হয়। 

আল্লাহ পাকই মানুষের অন্তরে সন্তানের প্রতি এই ভালবাসা পয়দা করিয়া দিয়াছেন। মানব-হৃদয়ের এই অকৃত্রিম ভালবাসা একান্তই নিজের আপন সন্তানের সহিত সংশ্লিষ্ট অপর কাহারো সন্তানের সেবার দায়িত্ব গ্রহণ করিলেই এই বাস্তব সত্যটি ভালভাবে উপলব্ধি করা যাইবে দায়িত্ব পালনের তাকীদে পরের সন্তানের সেবা করিলেও আপন সন্তানের সেবায় শত কষ্টের মাঝেও যেই তৃপ্তি অনুভূত হইবে অপরের ক্ষেত্রে হয়ত এই তৃপ্তির স্থলে সৃষ্টি হইবে বিরক্তি  

আল্লাহ পাক মানুষের অন্তরে সন্তানের প্রতি এমন এক দুর্নিবার আকর্ষণ পয়দা করিয়া দিয়াছেন যে, উহার ফলে সে বাধ্য হইয়াই সন্তানের যাবতীয় সেবা-যত্নের আঞ্জাম দিয়া থাকে 

 

7| mšÍv‡bi evmbv

মানুষ নিজের বংশ রক্ষা এবং দুনিয়াতে নিজের নাম জিয়াইয়া রাখার উদ্দেশ্যে সন্তান কামনা করিয়া থাকে আসলে মানুষের এই ধারণা একেবারেই অমূলক মানুষের কোন সমাবেশে গিয়া জিজ্ঞাসা করিলে দেখা যাইবে, অনেকেই নিজের পরদাদা প্রপিতামহের নাম বলিতে পারিতেছে না সুতরাং নিজের পরিবারের সন্তানেরাই যদি মাত্র দুই-এক পুরুষ পূর্বের মুরব্বীদের নাম বলিতে না পারে, তবে কেমন করিয়া ইহা আশা করা যায় যে, অপরে উহা চিরদিন স্মরণ রাখিবে? অর্থাৎ দেখা যাইতেছে, সন্তান জন্মিলেই কাহারো নাম চির অক্ষুন্ন থাকিতেছে না 

ভাই সকল! নাম অক্ষুন্ন থাকে আল্লাহ পাকের ফরমাবরদারী করিলে যাহারা আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী জীবন যাপন করিয়াছে, পৃথিবীতে তাহারাই অক্ষয় হইয়া আছে কেবল সন্তান হইলেই অক্ষয় হওয়া যায় না, বরং অনেক সমময় অযোগ্য সন্তানের কারণে দুর্নামের ভাগীও হইতে হয়। তাছাড়া কাহারো নাম অক্ষুন্ন থাকিলেই উহাতে কি লাভ হইবে? মানুষের পক্ষে ইহা কাঙিক্ষত বিষয় হওয়ার যুক্তিসঙ্গত কোন কারণ নাই। 

নাম-যশের আকাঙক্ষা ব্যতীত এমনিতেই মানুষের মনে সন্তানের বাসনা হইতে পারে ইহা কোন নিন্দনীয় বিষয় নহে কারণ, সন্তানের প্রতি ভালবাসা সন্তান কামনা করা ইহা মানুষের স্বভাবজাত বিষয় মানব-হৃদয়ের এই বাসনা চিরন্তন এই কারণেই বেহেশতে যাওয়ার পরও অনেকে সন্তান কামনা করিবে অথচ সেখানে নিজের নাম অক্ষুন্ন থাকার বিষয়টি কাহারো কল্পনাতেও আসিবে না কারণ, জান্নাতে প্রবেশের পর তো মানুষ নিজেই চিরঞ্জীব হইবে সুতরাং সেখানে অপরের মাধ্যমে নিজের নাম অক্ষুন্ন রাখার কোন প্রশ্নই আসিবে না। কিন্তু উহার পরও জান্নাতীরা স্বভাবজাত মানবিক চাহিদার কারণেই সন্তান কামনা করিবে এই কারণেই সন্তান কামনা করিতে আমি নিষেধ করি না।

আমার উদ্দেশ্য হইল-সন্তান কামনার এই স্বভাবসুলভ চাহিদার ক্ষেত্রে নারীদিগকে অন্যায়ভাবে অপরাধী সাব্যস্ত করার দুষ্টব্যাধি হইতে মানুষকে সতর্ক করা। লোকেরা অনেক সময় অন্যায়ভাবেই নারীদেরকেবিলিয়াথোকে যে, হতভাগী! তোমার তো কোন সন্তানই হয় না বা ক্রমাগত কেবল মেয়ে-সন্তানই হইতেছে ইত্যাদি। নিছক এই অজুহাতে নারীদেরকে অপরাধী সাব্যস্ত করিয়া তাহাদের সঙ্গে অসঙ্গত আচরণ করিতে নিষেধ করা হইয়াছে। কারণ এই বিষয়ে নারীদের কোন হাত নাই; ইহা আল্লাহ পাকের ইচ্ছাধীন, তিনি যাহা হুকুম করিবেন তাহাই হইবে। দুনিয়াতে বহু বড় বড় রাজা-বাদশাহগণও নিঃসন্তান ছিলেন, সন্তানের জন্য তাহারা বহু ঔষধ-পথ্যও করিয়াছিলেন কিন্তু কিছুতেই কোন কাজ হয় নাই 

অনেক সময় ডাক্তারী পরীক্ষার পর দেখা যায়- হয়ত পুরুষের শারীরিক কোন ত্রুটির কারণেই সন্তান হইতেছে না মোটকথা, সন্তান হওয়া না হওয়ার ব্যাপারে আল্লাহ পাকের বিধানই চূড়ান্ত কথা। এই ক্ষেত্রে মানুষের ইচ্ছার কোন দখল নাই সুতরাং এই বিষয়ে কাহাকেও অপরাধী মনে করা কিংবা নিজে অসন্তুষ্ট হওয়া ঠিক নহে।


8| my-mšÍvb ciKv‡j Kv‡R Avwm‡e

সন্তান যদি নেককার-পরহেজগার হয় তবে উহা আল্লাহ পাকের বিরাট নেয়মত এক আল্লাহওয়ালা বুজুর্গ দীর্ঘ দিন যাবৎ অবিবাহিত ছিলেন। তিনি কিছুতেই বিবাহ করিতে রাজী ছিলেন না 

একদিনের ঘটনাঃ তিনি ঘুম হইতে উঠিয়া ব্যস্ত হইয়া সকলকে বলিতে লাগিলেন, অতিসত্ত্বর কোন কন্যা আনিয়া হাজির কর, আমি বিবাহ করিব সেখানে বুজুর্গের এক মুরীদ উপস্থিত ছিল। লোকটি ছিল সরল প্রকৃতির ঘরে তাহার এক অবিবাহিতা কুমারী কন্যাও ছিল। সঙ্গে সঙ্গে সে তাহাকে আনিয়া হাজির করিল এবং বুজুর্গ খুশীর সহিত তাহাকে বিবাহ করিলেন 

বিবাহের কিছুকাল পর আল্লাহ পাকের ইচ্ছায় তাহাদের একটি সন্তান জন্ম হইল এবং অল্প কিছুদিন পরই সে ইন্তেকাল করিল এই ঘটনার পর বুজুর্গ স্ত্রীকে নিভৃতে ডাকিয়া বলিলেন, আমার উদ্দেশ্য সফল হইয়াছে এখন তোমার ইচ্ছা, দুনিয়ার ভোগ-বিলাসে যদি তোমার আগ্রহ থাকে, তবে আমি তোমাকে মুক্তি দিতেছি, তুমি অন্য কাহাকেও বিবাহ করিয়া ঘর-সংসার কর। পক্ষান্তরে, যদি আল্লাহর এবাদত-বন্দেগীতে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করিতে চাও, তবে এখানেও থাকিতে পার। কিন্তু বুজুর্গের স্পর্শে থাকিবার ফলে তাঁহার স্ত্রীর মন-মানসিকতায়ও অনেক পরিবর্তন আসিয়াছিল। সুতরাং স্বামীর প্রস্তাবের জবাবে সে বলিল, হে স্বামী! (দুনিয়ার ভোগ-বিলাসে আমার কোন আসক্তি নাই) অতএব, আমি এখানেই পড়িয়া থাকিব। অতঃপর স্বামী-স্ত্রী উভয়ে বিপুল উৎসাহে আল্লাহর এবাদতে নিমগ্ন হইলেন 

কিছুদিন পর বুজুর্গের এক শাগরিদ জিজ্ঞাসা করিল, হযরত! আপনার তো বরাবরই বিবাহের ব্যাপারে অনীহা ছিল। কিন্তু হঠাৎ এমন তাড়াহুড়া করিয়া কেন বিবাহ করিলেন? জবাবে বুজুর্গ বলিলেন, একবার আমি স্বপ্নে দেখিলাম, হাশরের ময়দান কায়েম হইয়াছে। মানুষ দলে দলে পুলসিরাত অতিক্রম করিতেছে। কিন্তু এক ব্যক্তি খোড়াইয়া খোড়াইয়া অতিকষ্টে পুলসিরাতের উপর চলিতেছিল। এমন সময় কোথা হইতে একটি শিশু আসিয়া লোকটির হাত ধরিয়া দ্রুত পুলসিরাত পার হইয়া গেল। শিশুটির পরিচয় জিজ্ঞাসা করিলে আমাকে বলা হইল-ইহা তাহার সন্তান। শৈশবেই সে ইন্তেকাল করিয়াছিল। আজ (এই বিপদের দিনে) সে তাহার পিতার পথ প্রদর্শকের কাজ করিতেছে।

        এই পর্যন্ত দেখার পরই আমার নিদ্রা ছুটিয়া গেল।পরে স্বপ্নে দেখা ঘটনার প্রেক্ষিতে আমার মনে এইরূপ ধারণা হইল যে, আমি তো সন্তানের এই ফজিলত ইহতে বঞ্চিত হইতেছি। এমনও হইতে পারে যে, অবশেষে হয়ত সন্তানের উছিলাতেই আমার নাজাত হইবে। এই কারণেই স্বপ্ন দেখার পরই আমি বিবাহ করি এবং আমার উদ্দেশ্যও সফল হয়।


9| Kz-mšÍvb g~mxe‡Zi KviY nq

মানুষের জন্য সন্তান হওয়া যেমন নেয়মত, অনুরূপভাবে সন্তান না হওয়াও আল্লাহর নেয়মত। বরং যেই ব্যক্তির আদৌ সন্তান হয় নাই, কিংবা হওয়ার পর মরিয়া গিয়াছে, তাহার পক্ষে তো আরো বেশী শোকর আদায় করা কর্তব্য। 

ভাইসকল! আজকাল তো অধিকাংশ সন্তানই আল্লাহর নাফরমান হইতেছে। সুতরাং যার সন্তান হয় নাই, সে আল্লাহর শোকর আদায় করিবে যে, আল্লাহ পাক বহু চিন্তা-ফিকির হইতে মুক্তি দিয়াছেন। তাহার কর্তব্য হইল, সর্বদা নিশ্চিন্তে আল্লাহর এবাদত-বন্দেগীতে মশগুল থাকা। 

আজকাল বহু অভিভাবক তাহাদের বিপথগামী সন্তানদের লইয়া অন্তহীন পেরেশানীর শিকার হইতেছে। যেমন, মোনাফেকদের সম্পর্কে কালামে পাকে এরশাদ হইয়াছে

অর্থঃ সুতরাং তাহাদের ধন-সম্পদ সন্তান-সন্ততি যেন আপনাকে বিস্মিত করে। আল্লাহর ইচ্ছা হইল এইগুলি দ্বারা দুনিয়ার জীবনে তাহাদিগকে আজাবে নিপতিত রাখা। 

বাস্তবিক, অনেকের সন্তানই তাহাদের জানের উপর মুসীবত হইয়া দেখা দেয়। শৈশবে এই সন্তানের মল-মূত্রের কারণেই নিজের নামাজ-কালাম বরবাদ করা হয়। বড় হওয়ার পর সন্তান দ্বীনদার হউক চাই না হউক, তাহার বিষয়-সম্পদের যোগান দিয়া তাহাকে সংসার জীবনের পথ ধরাইয়া দিতে মাতাপিতাকে নানাহ পেরেশানীর শিকার হইতে হয়। এই ক্ষেত্রে হয়ত হালাল-হারামেরও বাছ-বিছার করা হয় না। এই কারণেই আমি বলি, সন্তান না হওয়াও নেয়মত। যাহাদের সন্তান হয় নাই, আল্লাহ পাক তাহাদের উপর বড়ই রহম করিয়াছেন। 

 

10| †g‡q mšÍvb nIqv ÿwZKi b‡n

হযরত খিজির (আঃ) একটি বালককে হত্যা করিয়াছিলেন। এই প্রসিদ্ধ ঘটনাটি সম্পর্কে প্রায় সকলেই অবগত যে, উহা নিহত বালক এবং তাহার মাতাপিতা উভয়ের জন্যই কল্যাণকর ছিল। 

ঘটনার বিবরণে প্রকাশ : বালক নিহত হওয়ার পর আল্লাহ পাক তাহার মাতাপিতাকে একটি কন্যাসন্তান দান করিলেন। কন্যার আওলাদের মধ্যেই বহু নবী পয়দা হইয়াছিলেন। এক্ষণে বলুন, হযরত খিজির (আঃ) কর্তৃক ছেলে নিহত হওয়ার পর মাতাপিতাকে যদি আবারো একটি ছেলেই দেওয়া হইত, আর ছেলেও যদি আগের মতই হইত, তবে এই ছেলে দ্বারা মাতাপিতার এমন কি কল্যাণ সাধন হইত? ইহা আল্লাহ পাকের বিরাট অনুগ্রহ যে, তিনি ছেলের পরিবর্তে তাহাদিগকে একটি মেয়ে দান করিলেন। 

সাধারণতঃ মেয়েরা বংশের কলঙ্কের কারণ হয় না। আর তুলনামূলকভাবে মেয়েরাই মাতাপিতার অধিক অনুরাগী ফরমাবরদার হইয়া থাকে। বিশেষতঃ বর্তমানে ছেলেরা এমনই উচ্ছৃংখল হইতেছে যে, এমন সন্তান হওয়ার চেয়ে না হওয়াই ভাল। অবশ্য বর্তমানে হযরত খিজির (আঃ) এই ধরনের ছেলেদেরকে আর হত্যা করিতেছেন না বটে, কিন্তু আল্লাহ পাক তো ইচ্ছা করিলেই তাহাদিগকে জবাই করিতে পারেন। আর সন্তান পয়দা না করা কিংবা জন্ম হওয়ার পর মৃত্যু দান করা ইহাও আল্লাহর পক্ষ হইতে এক প্রকার জবাই করাই বটে 

আল্লাহ পাক যাহাকে ছেলে-মেয়ে কিছুই দান করেন নাই, তাহার জন্য উহাতে নিশ্চই কোন হেকমত কল্যাণ নিহিত রহিয়াছে। কেননা, বান্দার জন্য কোন্‌টি কল্যাণকর আর কোনটি ক্ষতিকর তাহা আল্লাহ পাকই ভাল জানেন। আজ একজন নিঃসন্তান ব্যক্তি যেইভাবে নিশ্চিন্তে দ্বীনের খেদমত করিতেছেতাহার ঘরে সন্তানাদি থাকিলে হয়ত এইভাবে তাহার পক্ষে দ্বীনের খেদমত করা সম্ভব হইত না কারণ, সন্তানাদির পিছনে মানুষকে প্রতিনিয়তঃ হাজারো চিন্তা-ফিকির পেরেশানী উঠাইতে হয়

 

11| mšÍvb cÖwZcvj‡b †c‡ikvbx

নারীদের জন্য সন্তান প্রতিপালন এক দুর্বিসহ কষ্টের কারণ বটে। অবশ্য এই ক্ষেত্রে পুরুষদেরও কম কষ্ট করিতে হয় না। শিশু প্রসূতির সেবা-যত্নের আয়োজন করিতে তাহাকে প্রচুর অর্থ শ্রম দিতে হয়। তাছাড়া শিশুর সেবা-যত্ন করা যে কি এক দুরূহ ব্যাপার তাহা একমাত্র ভুক্তভোগী ছাড়া অপর কাহাকেও বুঝানো যাইবে না গরম ঠাণ্ডার সামান্য ব্যতীক্রমও সে সহ্য করিতে পারিবে না অহরহ রোগ-ব্যাধির বিবিধ উপসর্গ তাহার লাগিয়াই থাকিবে। কোন কোন সময় সে এমনভাবে কান্না শুরু করিয়া দিবে যে, অতঃপর কোন যুক্তি-তর্ক দ্বারাই তাহার কান্না নিবারণ করা যাইবে না উপরন্তু সে কি কারণে কান্না করিতেছে উহার কারণ নির্ণয় করাও সম্ভব হয় না শিশু যেন বোবা প্রাণীর মত, সে তাহার মনের সুখ-দুঃখ কিছুই প্রকাশ করিতে পারে না তাহার। রোগ-ব্যাধির চিকিৎসাও কেবল অনুমানের উপর নির্ভর করিয়াই করিতে হয় 

কখনো মনে করা হয় সে পেটের বেদনায় কাঁদিতেছে, সুতরাং পেটের দাওয়াই দেওয়া হয় কিন্তু পরক্ষণেই যদি তাহাকে কানের দিকে হস্ত সঞ্চালন করিতে দেখা যায়, তখন হয়ত মনে করা হয়, আসলে সে কানের পীড়াতেই কষ্ট পাইতেছে তখন সঙ্গে সঙ্গেই পূর্বে গৃহীত ব্যবস্থা বাতিল করিয়া নূতন ঔষধ প্রয়োগ করা হয়- ইত্যাদি কিন্তু কোন কোন সময় এমন অবস্থাও হয় যে, কোন লক্ষণাদি দ্বারাও কিছুই অনুমান করা যায় না অবশেষে হয়ত রোগ নির্ণয়ের জন্য কোন বড় ডাক্তার ডাকাইতে হয়।। 

মোটকথা, অর্ধহাত শিশুটির সেবা-যত্নের জন্যই অকাতরে অজস্র অর্থ ব্যয় করিতে হয়। এই অবর্ণনীয় পেরেশানীর কোন এক পর্যায়ে মানুষ হয়ত মনের অজান্তেই বলিয়া উঠে- প্রথম সন্তানের আগমনই যেন আমাদিগকে অতিষ্ঠ করিয়া তুলিয়াছে কিন্তু আমি বলি, অবোধ নিস্পাপ শিশুটিকে দোষ দিয়া কি লাভ? তোমরা নিজেরাই তো তাহাকে আহবান করিয়া আনিয়াছ। শিশুদের যাহা হইবার তাহা তো হইবেই। নাকের চিকিৎসা শেষ হইতে না হইতেই হয়ত কানের পীড়া আরম্ভ হইয়া গেল। তাছাড়া নিত্য দিনের পায়খানা-প্রসাব ইত্যাদি উপসর্গ তো আছেই শিশু একটু সুস্থ হইলে যেন মায়ের দেহেও নূতন প্রাণের সঞ্চার হয়, শিশু রোগাক্রান্ত হইলে মায়ের মনেও কোন শান্তি থাকে না অর্থাৎ শিশুর পরিচর্যায় নিয়োজিত মায়ের জীবন যেন আশা ভয়ের মাঝে অবস্থানের এক অনিশ্চিত দোদুল্যমান জীবন জননীর এই সীমাহীন ত্যাগ-শ্রম ধৈর্যের কারণেই প্রতিনিয়তঃ তাঁহার দরজা মর্যাদা বুলন্দ হইতে থাকে। 

কিন্তু এমন মনে করিবার কোন কারণ নাই যে, দুই-চারি বৎসরের পরিচর্যার পর ছেলে বড় হইলেই সকল দুঃখ-যাতনার অবসান ঘটিবে বরং দেখা যাইবে যে, শিশু বড় হওয়ার কয়েক বৎসর বিরতির পরই সে বয়ঃপ্রাপ্ত হইয়া বিবাহ-শাদী করিবে, ঘরে নাতী-নাতনীদের আগমন ঘটিবে অর্থাৎ আবার সেই ঝামেলা এবং সেই পুরাতন অবস্থা ফিরিয়া আসিয়া নূতন যন্ত্রণা শুরু হইবে ঘরময় মল-মূত্র দ্বারা নোংরা হওয়া, লাগাতার রোগ-ব্যাধির উপসর্গ- ইত্যাদি অবস্থানসমূহ যেন পুনরায় তাজা হইয়া দেখা দিবে এই হইল ঘর-সংসার পারিবারিক জীবনের শান্তি 

মোটকথা, কোন পরিবারই বর্ণিত পেরেশানী ঝামেলা হইতে মুক্ত নহে কিন্তু তবুও এই ঘর-সংসারেই মানুষের আসক্তির কোন অন্ত নাই সংসারের ঝামেলা ছাড়া যেন এক দণ্ডও তাহাদের শান্তি হয় না 

আমার এক ভাই মাঝে-মধ্যে একটি ঘটনা বলিতেন যে, এক ব্যক্তির অনেক সন্তান ছিল একবার কেহ তাহাকে বলিল, আপনি নিশ্চয়ই বেশ শান্তিতে আছেন লোকটি সঙ্গে সঙ্গে ক্ষেপিয়া উঠিয়া বলিল, আমার সঙ্গে ইয়ার্কি করা হইতেছে? শান্তি অপর কাহারো ঘরে হইতে পারে, আমার ঘরে শান্তি কোথায়? বিবি বাল-বাচ্চায় মাশাআল্লাহ আমার ঘর ভর্তি আজ একজনের কান ব্যথা, কাল হয়ত কাহারো নাসিকাপীড়া, কেহ পড়িয়া গেল কি অপর কাহারো কাটিয়া গেল- এই হইল আমার ঘরের অবস্থা। সুতরাং এখানে তুমি শান্তির কি দেখিলে? শান্তি বরং এমন ঘরে হইতে পারে যেই ঘরে বাল-বাচ্চার কোন ঝামেলা নাই 

বাস্তবিক, বাল-বাচ্চার সংসারে এক দণ্ড শান্তিতে নিঃশ্বাস ফেলার উপায় থাকে না কিন্তু সন্তান প্রতিপালনে মাতাপিতার এই সুদীর্ঘ শ্রমের পরিণাম যদি অশুভ হয়, পরিণত বয়সে সন্তান যদি মাতাপিতাকে অবজ্ঞা উপেক্ষা করিয়া চলে, বৃদ্ধ মাতাপিতার খেদমতের পরিবর্তে তাহাদের সঙ্গে যদি অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়, তবে মাতাপিতার অন্তরে কতটা ব্যথা অনুভূত হইবে তাহা বলিবার অপেক্ষা রাখে না। সুতরাং এই যদি হয় সন্তান সন্তান প্রতিপালনের পরিণতি তবে মানুষের পক্ষে এই সন্তান কামনা করার সঙ্গত কোন কারণ থাকিতে পারে না 

 

12| wbtmšÍvb‡`i cÖwZ 

আমার উস্তাদ হযরত মাওলানা সৈয়্যদ আহমদ দেহলভী ছাহেবের মামা ছিলেন হযরত মাওলানা সৈয়্যদ মাহবুব আলী জাফরী ছাহেব। আমার উস্তাদের শৈশবকালের ঘটনা 

একবার তিনি স্বীয় মামাকে চিন্তাযুক্ত অবস্থায় দেখিতে পাইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, আপনাকে পেরেশান মনে হইতেছে কেন? জবাবে তিনি আক্ষেপের সহিত বলিলেন, বার্ধক্য আসিয়া পড়িল অথচ এই বয়সেও আমার একটি সন্তান হইল না আমার উস্তাদ সঙ্গে সঙ্গে জবাব দিলেন, সোবহানাল্লাহ! ইহা কি কোন, দুঃখের কথা হইল? ইহা তো বরং খুশির কথা। তিনি বলিলেন, ইহা খুশির কথা হইবে কেমন করিয়া? জবাবে আমার উস্তাদ বলিলেন, অবশ্যই ইহা খুশির কথা বটে। কারণ, আপনার গোটা খান্দানের মধ্যে একমাত্র আপনিই হইলেন মূল উদ্দিষ্ট ব্যক্তি। অর্থাৎ আপনার বাপ-দাদাসহ অপরাপর যাহাদেরই সন্তান আছে, তাহাদের কেহই মূল উদ্দিষ্ট ব্যক্তি নহে। বরং তাহাদিগকে যেন বংশ রক্ষা এবং এই কাজের বিবিধ পেরেশানী সহ্য করার জন্যই পয়দা করা হইয়াছে। 

মনে করুন, কৃষকরা জমিতে চাষ করিয়া যেই গম উৎপাদন করে, উহাকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। এক ভাগ রাখা হয় খাওয়ার জন্য এবং অপর ভাগে- সামান্য কিছু রাখা হয় বীজের জন্য। এই দুই অংশের মধ্যে খাওয়ার জন্য যেই অংশ রাখা হয় উহাই মূল উদ্দিষ্ট অংশ। অর্থাৎ খাওয়ার জন্যই ফসল উৎপাদন করা হয়। বীজের জন্য রক্ষিত অংশ মূল উদ্দেশ্য নহে বরং উহাকে মূল উদ্দেশ্যের মাধ্যম বলা যাইতে পারে সুতরাং হযরত আদম (আঃ) হইতে আজ পর্যন্ত নিঃসন্তান ব্যক্তিবর্গরাই হইলেন মূল উদ্দিষ্ট ব্যক্তি পক্ষান্তরে যাহাদের সন্তানাদি হইতেছে তাহারা মূল উদ্দেশ্য নহে, বরং তাহাদিগকে মূল উদ্দেশ্যের মাধ্যম তথা সেই বীজের জন্য রক্ষিত অংশের মত মনে করা যাইতে পারে। 

যাহাই হউক, উপেরোক্ত আলোচনা হইতে নিঃসন্তান ব্যক্তিগণ সান্ত্বনা গ্রহণ করিতে পারেন। অবশ্য এই আলোচনাটি একটু সূক্ষ্ম বটে। সুতরাং উহার দ্বারাও যদি নিঃসন্তানদের মনের দুঃখ নিবারণ না হয় তবে বর্তমান দুনিয়ায় যাহাদের সন্তান আছে তাহাদের দিকে নজর করিলেও অনেক সান্ত্বনা পাওয়া যাইবে যে, আজ সন্তানাদি লইয়া তাহারা কি পেরেশানীর মধ্যে দিন কাটাইতেছে উহাতেও সান্ত্বনা না আসিলে মনে মনে এইরূপ কল্পনা করিবে যে, আল্লাহ পাক আমার জন্য যাহা ফায়সালা করিয়াছেন উহাতেই আমার কল্যাণ নিহিত। সন্তান হইলেই উহা আমার জন্য কল্যাণকর হইত কি-না তাহা আমার জানা নাই। যদি এইরূপ কল্পনা করাও সম্ভব না হয় তবে অন্ততঃ ইহা ধারণা করিবে যে, সন্তান না হওয়ার ব্যাপারে আমার স্ত্রীর কোন অপরাধ নাই


13| †hB mšÍvb g„Zz¨eiY K‡i Zvnvi Rb¨ g„Zz¨B DËg wQj

হযরত খিজির (আঃ) এবং হযরত মূছা (আঃ)-এর ঘটনা পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করা হইয়াছে যে, হযরত খিজির (আঃ) একটি শিশুকে হত্যা করিলে হযরত মুছা (আঃ) জিজ্ঞাসা করিলেন, আপনি কি কারণে একটি নিস্পাপ শিশুকে হত্যা করিলেন? কিন্তু হযরত খিজির (আঃ) ইতিপূর্বেই হযরত মূছা (আঃ)-এর সঙ্গে এই শর্ত আরোপ করিয়াছিলেন যে, আমার সঙ্গে থাকিতে হইলে আমার কোন কাজেরই প্রতিবাদ করা যাইবে না সুতরাং তিনি উপরোক্ত প্রশ্নের জবাবে বলিলেন, আমি তো পূর্বাহ্নেই বলিয়াছিলাম যে, আপনার পক্ষে ধৈর্যধারণ করা সম্ভব হইবে না।। 

পরে তিনি উপরোক্ত ঘটনার কারণ বর্ণনা করিয়া বলিলেন, শিশুটির মাতাপিতা হইল মুসলমান। কিন্তু বড় হইয়া এই শিশুটি কাফের হইত এবং সন্তানের মহাব্বতে আকৃষ্ট হইয়া তাহার মাতাপিতাও কাফের হইয়া যাইত। এই কারণেই আল্লাহ পাক তাহাদের সন্তানটিকে শৈশবেই দুনিয়া হইতে বিদায় করিয়া তাহার পরিবর্তে একটি নেক সন্তান দান করার ইচ্ছা করিলেন। 

উপরোক্ত ঘটনা দ্বারা জানা গেল যে, যেই সন্তানটি শৈশবে মৃত্যুবরণ করে, তাহার সময় মৃত্যুবরণ করাই উত্তম ছিল এই কারণেই দ্বীনদার-পরহেজগার ব্যক্তিবর্গ স্বীয় সন্তানাদির মৃত্যুতে দুঃখিত হয় বটে কিন্তু পেরেশান হয় না যেই ব্যক্তি আল্লাহ পাককে হেকমতওয়ালা মনে করিবে সে কোন প্রকার দুর্ঘটনা-দুর্বিপাক দুর্যোগের কারণেই পেরেশান হইবে না। 

অবশ্য যেই সকল বিষয়ে তাহার দৃষ্টি ধারণা সুস্পষ্ট নহে, সেই সকল বিষয়ে তাহার মনে হা-হুতাশ জাগে বটে। যেমন কোন সন্তানের ইন্তেকালের পর মনে করা হয় যে, হায়! সে যদি জীবিত থাকিত তবে এইরূপ যোগ্যতাসম্পন্ন হইত ইত্যাদি। 

ভাই সকল! কে ভাল হইত আর কে মন্দ হইত উহা কেহই বলিতে পারে  যেই সন্তানটিকে আল্লাহ মৃত্যু দান করিয়াছেন, নিশ্চয়ই উহাতে কোন না কোন হেকমত নিহিত আছে। এমন হওয়াও অসম্ভব নহে যে, মৃত্যুবরণকারী সন্তানটি বড় হইয়া কাফের হইত এবং তাহার মাতাপিতাকেও কাফের বানাইয়া ছাড়িত।

 

14| wkï mšÍv‡bi g„Zz¨i †nKgZ I dwRjZ

শিশু-সন্তানদের মৃত্যুর অনেক হেকমত ফজিলত রহিয়াছে। যদি সেই সকল হেকমত ফজিলতের বিষয়গুলি সামনে রাখা হয় তবে সন্তান-শোকে মর্ম বেদনার পাশাপাশি কিছুটা সান্ত্বনারও উপাদান পাওয়া যাইবে। 

আসলে মানুষ কোন সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ছাড়া এমনিতেই সন্তান বড় হওয়ার বাসনা পোষণ করে। অন্যথায় ইহা কেহই বলিতে পারে না যে, সন্তান বড় হইয়া মাতাপিতার শান্তির কারণ হইবে, না মুসীবতের কারণ হইবে। আর এই বিষয়েও কোন নিশ্চয়তা নাই যে, বড় হইয়া মৃত্যুবরণ করিলে তাহারা পরকালে মাতাপিতার সাহায্যকারী হইবে, না নিজেরাই সাহায্যের মোহতাজ হইয়া হাজির হইবে। কিন্তু নাবালেগ নিস্পাপ শিশুদের পারলৌকিক পরিণতির বিষয়ে আশঙ্কার কোন কারণ নাই। বরং পরকালের কঠিন বিপদের দিনে তাহারা মাতাপিতার সাহায্যকারীই হইবে 

হাদীসের বিবরণ দ্বারা জানা যায়, মৃত্যুবরণকারী শিশুরা বেহেশতে প্রবেশের পূর্ব পর্যন্ত পরকালে শিশু অবস্থায়ই বিরাজ করিবে তাহাদের স্বভাব-প্রকৃতিও শিশুদের মতই থাকিবে অর্থাৎ কথায় কথায় জিদ পীড়াপীড়ি করা, কোন কিছুর পিছনে পড়িয়া থাকা- ইত্যাদি শিশুসুলভ আচরণগুলি তাহারা সেখানেও প্রদর্শন করিবে কিন্তু জান্নাতে প্রবেশের পর আর তাহাদের মধ্যে স্বভাব বর্তমান থাকিবে না। বরং জান্নাতে প্রবেশের পর পিতা-পুত্রের দৈহিক কাঠামো স্বভাব-প্রকৃতি একই ধরনের হইবে। 

হাদীসে পাকে এরশাদ হইয়াছে- পরকালে শিশুরা জিদ ধরিয়া আল্লাহ পাকের নিকট আরজ করিবে, যতক্ষণ না আমাদের মাতাপিতাকে আমাদের হাতে ছাড়িয়া দেওয়া হইবে ততক্ষণ আমরা জান্নাতে প্রবেশ করিব না আমরা বরং আমাদের মাতাপিতাকে সঙ্গে লইয়াই জান্নাতে যাইব শিশুদের এই নিবেদনের জবাবে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এরশাদ করিবেন, হে জেদি শিশু! তোমাদের মাতাপিতাকেও জান্নাতে লইয়া যাও। অতঃপর তাহারা আনন্দের সহিত পিতামাতাকে জান্নাতে লইয়া যাইবে। 

পক্ষান্তরে সন্তান যদি বড় হইয়া ইন্তেকাল করে, তবে হযরত খিজির (আঃ)-এর ঘটনা স্মরণ করিয়া নিজেকে এইভাবে বুঝাইবে যে, উহাতে কি হেকমত আছে তাহা আল্লাহ পাকই ভাল জানেন। যদি সে আরো কিছুকাল জীবিত থাকিত তবে বিপথগামী হইয়া পিতামাতার জন্য মুসীবতের কারণ হওয়াও অসম্ভব ছিল না 

অতঃপর হাদীসে পাকে বালা-মুসীবত বিপদাপদের যেই হেকমত এবং উহার উপর ধৈর্যধারণ করিলে যেই ছাওয়াবের কথা উল্লেখ করা হইয়াছে উহা পাঠ করিলে ইনশাআল্লাহ শোকের মাত্রা হ্রাস পাইয়া অনেক সান্ত্বনা পাওয়া যাইবে 

সারকথা হইল, আল্লাহ পাক যাহাকে সন্তান দিয়াছেন তাহার জন্য উহাতেই কল্যাণ এবং যাহাকে সন্তান দেন নাই তাহার জন্যও নিঃসন্তান হওয়াতেই কল্যাণ। অনুরূপভাবে আল্লাহ পাক যাহাকে সন্তান দান করিয়া পুনরায় উহা ফেরৎ লইয়াছেন উহাতেও নিশ্চয়ই কোন হেকমত রহিয়াছে 

রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেনঃ যেই ব্যক্তির তিনটি সন্তান ইন্তেকাল করিয়াছে, পরকালে তাহারা ব্যক্তির জন্য জাহান্নামের আগুনের আড় হইয়া যাইবে। কেহ আরজ করিল, হে আল্লাহর রাসূল! যদি কাহারো দুইটি সন্তান ইন্তেকাল করে রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আগের মতই জবাব দিলেন। অতঃপর অন্য এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করিল, হে আল্লাহর রাসূল! যদি কাহারো মাত্র একটি সন্তানই ইন্তেকাল করে? এরশাদ হইলঃ তবে সেও (জাহান্নামের আগুনের আড় হইবে) সবশেষে এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যেই ব্যক্তির কোন সন্তানই মৃত্যুবরণ করে নাই? এইবার পেয়ারা নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিলেনঃ এই ক্ষেত্রে আমি উম্মতের অগ্রবর্তী হইয়া ছামান সংগ্রহকারী হইব এবং আমার উম্মতের জন্য আমার ওফাতের মত দুর্ঘটনা আর কিছুই হইতে পারে না। সুতরাং আমার ওফাতের শোকই তাহাদের মাগফেরাতের জন্য যথেষ্ট হইবে অর্থাৎ আমি আগে গিয়া আমার উম্মতের মাগফেরাতের জন্য চেষ্টা সুপারিশ করিব। 

এখানে প্রশ্ন উঠিতে পারে যে, নিঃসন্তানদের জন্য যেমন রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাত যথেষ্ট হইবে, অনুরূপভাবে সন্তানের মাতাপিতাদের জন্যও তো উহা যথেষ্ট হইবে এতএব, সন্তানদের সুপারিশের কি প্রয়োজন ছিল? উহার জবাবে আমরা বলিব, দুই কারণেই উহার প্রয়োজন ছিল-

প্রথমতঃ রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো আদব ভয়ের সঙ্গে সুপারিশ করিবেন, কিন্তু নাবালেগ শিশুরা জিদ ধরিয়া সুপারিশ করিবে শিশুরা দুনিয়াতে যেমন মাতাপিতার সঙ্গে জিদ করে, অনুরূপভাবে পরকালেও তাহারা। আল্লাহর সঙ্গে জিদ-অভিমান করিবে। 

হাদীসে পাকে এরশাদ হইয়াছে- শিশুরা জান্নাতের ফটকে গিয়া দাঁড়াইয়া থাকিবে। তাহাদিগকে ভিতরে প্রবেশ করিতে বলা হইলে তাহারা জবাব দিবে, যতক্ষণ আমাদের পিতামাতাকে আমাদের সঙ্গে দেওয়া না হইবে, ততক্ষণ আমরা জান্নাতে প্রবেশ করিব না এই সময় আল্লাহ পাক ঘোষণা করিবেন, হে স্বীয় প্রতিপালকের সঙ্গে জিদকারী শিশুরা! যাও, তোমাদের মাতাপিতাকেও জান্নাতে লইয়া যাও 

দ্বিতীয়তঃ যদিও রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুপারিশই যথেষ্ট ছিল, কিন্তু মানবিক বিবেচনা সাধারণ যুক্তির দাবি হইল- সুপারিশকারীদের সংখ্যা বেশী হইলে মনের জোর সান্ত্বনাও বৃদ্ধি পাইবে। 


15| “evBZzj nvg`“ mgvPvi

একটি হাদীসের মফহুম এইরূপঃ কোন মুসলমানের নাবালেগ সন্তানের ইন্তেকালের পর ফেরেশতা যখন তাহার রূহ লইয়া আসমানে গমন করে, তখন আল্লাহ পাক ফেরেশতাকে জিজ্ঞাসা করেন, তুমি কি আমার বান্দার শিশু-সন্তানের প্রাণ লইয়া আসিয়াছ? ফেরেশতা জবাব দেয়- আয় পরওয়ারদিগার! হাঁ, (আমি তাহার প্রাণ লইয়া আসিয়াছি) আল্লাহ পাক পুনরায় জিজ্ঞাসা করেন, তুমি কি আমার বান্দার কলিজার টুকরা লইয়া আসিয়াছ? ফেরেশতা এইবারও আগের মত জবাব দেয়। অতঃপর আল্লাহ জানিতে চান, সন্তানের মৃত্যুর কারণে আমার বান্দা কি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করিয়াছে? ফেরেশতা আরজ করে, হে পরওয়ারদিগার! বান্দা ধৈর্যধারণপূর্বক আপনার শোকর আদায় করিয়াছে 

ফেরেশতার মুখে বান্দার ছবর শোকরের কথা শুনিয়া রাব্বল আলামীন ঘোষণা করিবেন, হে ফেরেশতা! তুমি সাক্ষী থাকিও আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করিয়া দিলাম। জান্নাতে আমার বান্দার জন্য একটি মহল তৈরী কর এবং উহার নাম রাখবাইতুল হামদÓ

পরবতী অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

No comments

Powered by Blogger.