Header Ads

Islamic Media Blog

Tarbayat-e-aulad (ইসলামের দৃষ্টিতে সন্তান পালন) - part -2। Islamic Media Blog


Tarbayat-e-aulad - part -2
Tarbayat-e-aulad - part -2


Ziweq‡Z AvIjv`

Bmjv‡gi `„wó‡Z mšÍvb cÖwZcvjb

g~j D`y©t nvKxgyj D¤§Z †gvRv‡Ï‡` wgjøvZ

nhiZ gIjvbv Avkivd Avjx _vbex (int)


m~PxcÎ

1| eq¯‹ mšÍv‡bi B‡šÍKv‡ji dwRjZ

2| mšÍv‡bi g„Zz¨‡Z ˆah¨©avi‡bi Abycg `„óvšÍ

3| mšÍvb jv‡fj I wewfbœ wRwb‡mi ZwØi

4| Mf©ve¯’vq gvZv-wcZvi KZ©e¨

5| cÖ_g mšÍvb ¯¿xi wcÎj‡q nIqv Riæix b‡n

6| mšÍvb cÖm‡ei mgq c`©vi e¨vcv‡i AmZK©Zv

7| beRvZ‡Ki wel‡q gvQb~b ZixKv

8| Kv‡b AvRvb †`Iqvi inm¨

9| K‡qKwU Riæbx welq

10| cÖm~wZ‡K AcweÎ Ges A”QzZ g‡b Kiv

11| cvK nIqvi ci bvgv‡R wej¤^

12| mšÍv‡bi Rb¥ Dcj‡ÿ Dcnvi msMÖ‡ni Abyôvb

13| wkïi hšÍ

14| AvKxKv I GB m¤ú‡K© wKQz K_v

15| Lrbv I GB m¤ú‡K© wKQz K_v


1| eq¯‹ mšÍv‡bi B‡šÍKv‡ji dwRjZ

হাদীসে পাকে বয়স্ক সন্তানদের ইন্তেকালেরও ফজিলত বিবৃত হইয়াছে। আল্লাহ পাক এরশাদ করিয়াছেনঃ আমি যেই ব্যক্তির প্রিয়জনকে লইয়া লইব- প্রিয়জন ছোট হউক বা বড় (ভাই হউক বা স্ত্রী) উহার বিনিময় জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নহে এখানেও উত্তম বিনিময়ের কথা বলা হইয়াছে কারণ, জান্নাতের মত উত্তম বিনিময় আর কিছুই হইতে পারে না।

মোটকথা, আপনজনদের ইন্তেকালে ধৈর্য ধারণ করিলে পরকালে উহার উত্তম বিনিময় লাভ করা যাইবে প্রিয়জনদের ইন্তেকালে ধৈর্যধারণের বিষয়টি এক আরব বেদুঈন (গ্রাম্য ব্যক্তি) আরবী কবিতায় বড় চমৎকারভাবে প্রকাশ করিয়াছে কাব্যপ্রীতি যেন আরবদের মজ্জাগত স্বভাব ছিল এমনকি আরব-রমণী শিশুরা পর্যন্ত কবিতা রচনা করিতে পারিত। 

হযরত আব্বাস (রাঃ)-এর ইন্তেকালের পর তদীয় পুত্র হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) শোকে মুহ্যমান হইয়া পড়িলে আরব বেদুঈন নিম্নের কবিতায় তাঁহাকে সান্ত্বনা দিলেন- 

KweZvi A_© nBj: A_©vr- হে ইবনে আব্বাস! আপনি ছবর ধৈর্যধারণ করুন, যেন আপনার দেখাদেখি আমরাও ধৈর্যধারণ করিতে পারি। অর্থাৎ আপনি হইলেন অনুসরণীয় ব্যক্তি, সাধারণ লোকেরা আপনার কার্যকলাপ অনুসরণ করিবে। সুতরাং এই ধরনের মুসীবতের সময় যদি আপনি ধৈর্যধারণ করেন, তবে আমরাও বিপদের সময় ধৈর্যধারণ করিতে পারিব আর আপনি যদি ছবর না করেন, তবে সাধারণ লোকেরাও বিপদে ধৈর্যধারণ করিতে পারিবে না 

সোবহানাল্লাহ! লোকটি কি চমৎকার উপমা দ্বারা সান্ত্বনা দিয়াছে পরে সে আরো বলিয়াছে| অর্থাৎ- হযরত আব্বাস (রাঃ) জীবিত থাকার তুলনায় তাহার ইন্তেকালে আপনি যাহা লাভ করিয়াছেন, উহা অনেক-অনেক উত্তম কারণ, তিনি জীবিত থাকিলে বড়জোর আপনিতাহাকে” লাভ করিতেন কিন্তু তাঁহার ইন্তেকালে আপনি লাভ করিয়াছেনছাওয়াব” যাহা আপনার জন্য হযরত আব্বাসের তুলনায় উত্তমই বটে 

অর্থাৎ- ছাওয়াবই হইল আল্লাহর রেজামন্দি সন্তুষ্টি। আরো সোজা কথায়ঃ হযরত আব্বাসের ইন্তেকালে ধৈর্যধারণের ফলে আপনি আল্লাহকে লাভ করিয়াছেন আর আল্লাহ নিঃসন্দেহে সর্বাপেক্ষা উত্তম এদিকে হযরত আব্বাসের নিকটও আপনার তুলনায় আল্লাহ উত্তম। আর মৃত্যুর মাধ্যমে তিনি সেই আল্লাহর নিকটই গমন করিয়াছেন অর্থাৎ তাহার ইন্তেকাল না হইলে তিনি এই দুনিয়াতেই অবস্থান করিতেন। আর এই দুনিয়াতে থাকিয়ারুইয়াতে এলাহী” বা আল্লাহর দিদার লাভ করা সম্ভব নহে

কাহারো মৃত্যুতে সান্ত্বনা লাভের আরেকটি উপায় হইল- যে মৃত্যুবরণ করিয়াছে, তাহার সম্পর্কে এইরূপ ধারণা করিবে যে, সে যদি এখন মৃত্যুবরণ না করিয়া বরং আরো কিছুকাল বিছানায় গড়াইবার পর মৃত্যুবরণ করিত, তবে হয়ত আত্মীয়-স্বজনরা তাহার সেবা-যত্ন করিতে করিতে অতিষ্ঠ হইয়া শেষ পর্যন্ত তাহাকে ঘৃণা করিতে শুরু করিত অর্থাৎ অবশেষে তাহাকে সকলের ঘৃণার পাত্র হইয়া দুনিয়া হইতে বিদায় গ্রহণ করিতে হইত এই ক্ষেত্রে মৃতব্যক্তিই ক্ষতিগ্রস্ত হইত কারণ, এই অবস্থায় তোমরা মৃত ব্যক্তিকে স্মরণ করিতে না এবং তাহার নামে ছাওয়াবও পাঠাইতে না। কেননা, ব্যক্তির নামেই ছাওয়াব পাঠানো হয়, যেই ব্যক্তির ইন্তেকাল বিচ্ছেদে মানুষের অন্তরে ব্যথা অনুভব হয় কিন্তু যেই ব্যক্তির ইন্তেকালে মানুষ খুশী হয় যে, “আপদ দূর হইয়া ভালই হইয়াছে”- এইরূপ ব্যক্তিকে সাধারণতঃ খুব কমই স্মরণ করা হয়।

অনুরূপভাবে তোমাদের জন্যও ইহাই উত্তম যে, তোমাদের আপনজনরাও যেন (তোমাদের দৃষ্টিতে) ভাল অবস্থায় ইন্তেকাল করে। কারণ, এই অবস্থায় তোমরা তাহাকে স্মরণ করিবে এবং সেও তোমাদের জন্য দোয়া পাঠাইবে অর্থাৎ উভয় পক্ষই পরস্পর দ্বারা উপকৃত হইবে। 

 

2| mšÍv‡bi g„Zz¨‡Z ˆah¨©avi‡bi Abycg `„óvšÍ

আপন সন্তানের ইন্তেকালে ধৈর্যধারণ সংক্রন্ত হযরত উম্মে সুলায়মের বিরল ঘটনাটি হাদীসে এইভাবে বিবৃত হইয়াছে যে, তাহার একটি শিশু-সন্তান ছিল স্বামী হযরত তালহা (রহঃ) বাহির হইতে ঘরে ফিরিয়াই বাচ্চার হাল-অবস্থা জিজ্ঞাসা করিতেন। 

আল্লাহ পাকের ইচ্ছায় একদিন সেই শিশুটি ইন্তেকাল করিল সন্ধ্যায় হযরত তালহা (রাঃ) ঘরে ফিরিলেন কিন্তু স্ত্রী হযরত উম্মে সুলায়ম স্বামীকে সন্তানের কথা কিছুই জানাইলেন না বরং তিনি মনে মনে ভাবিলেন, এই সাঁঝের বেলা স্বামীকে সন্তানের মর্মন্তুদ ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করিলে তিনি হয়ত খানাপিনা কিছুই গ্রহণ করিবেন না এবং রাতভর কষ্ট পাইবেন কিন্তু কিছুক্ষণ পর যখন স্বামী নিজেই সন্তানের কথা জিজ্ঞাসা করিলেন তখন তিনি সংক্ষেপে উত্তর দিলেনসে এখন ভালই আছে Ó ইহাতে হযরত তালহার মনে ব্যতিক্রম কোন ভাব সৃষ্টি হইল না এবং তিনি নিশ্চিন্তে আহার গ্রহণ করিলেন। 

খানাপিনা শেষে হযরত তালহা (রাঃ) স্ত্রীর সঙ্গে শয্যা গ্রহণ করিলেন এবং তাহারসঙ্গ” পাইতে চাহিলেন এই সময়ও স্ত্রী চরম ধৈর্যের পরিচয় দিলেন এবং অন্তরের শোক অন্তরেই গোপন রাখিয়া হাসিমুখে স্বামীকে সঙ্গ দান করিলেন 

সকালে তিনি যথাযথ হেকমতের সহিত স্বামীকে বলিলেন, আমি আপনাকে একাটি মাসআলা জিজ্ঞাসা করিতেছি, আমাদের নিকট কেহ কোন বস্তু আমানত রাখিবার পর পরে যদি আবার সে উহা ফেরৎ চায়, তবে সেই ক্ষেত্রে আমাদের কর্তব্য কি? হযরত তালহা জবাব দিলেন, মালিক যদি তাহার আমানতের বস্তু ফেরত চায় তবে খুশিমনে উহা ফেরত দেওয়াই আমাদের কর্তব্য এইবার তিনি সঙ্গে সঙ্গে জবাব দিলেন তবে আপনিও আপনার সন্তানের ব্যাপারে ধৈর্যধারণ পূর্বক তাহার দাফনের ব্যবস্থা করুন, কারণ আল্লাহ পাক আমাদের নিকট গচ্ছিত তাহার আমানত ফেরত লইয়াছেন। 

স্ত্রীর মুখের কথা শুনিয়া হযরত তালহা রাগে শোকে স্তব্ধ হইয়া তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি রাতেই কেন আমাকে এই সংবাদ দিলে না? স্ত্রী আদবের সহিত বলিলেন, তাহাতে কি লাভ হইত? রাতের অন্ধকারে তাহাকে দাফন করিতেও সমস্যা হইত এবং আপনিও আহারাদি গ্রহণ না করিয়া সারা রাত পেরেশান থাকিতেন এই কারণেই রাতে আমি আপনাকে কিছু বলি নাই  

পরে হযরত তালহা রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে হাজির হইয়া বিস্তারিত ঘটনা প্রকাশ করিলে রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিলেনঃ আল্লাহ পাক উম্মে সুলায়মের এই আমলটি অনেক পছন্দ করিয়াছেন এবং আমি আশা করিতেছি যে, (গত) রাতে আল্লাহ পাক তোমাদিগকে একটি ভাগ্যবান সন্তান দান করিয়াছেন 

পরবর্তীতে (সেই রাতে হযরত উম্মে সুলায়মের গর্ভে সঞ্চারিত সন্তান) হযরত আব্দুল্লাহ বিন তালহা (রাঃ) জন্মগ্রহণ করিলেন তিনি একজন উঁচু মানের আলেম, বড় দানশীল, প্রচুর অর্থ-সম্পদের মালিক এবং বহু সন্তানের জনক ছিলেন। 

হযরত উম্মে সুলায়ম যথার্থই বলিয়াছিলেন যে, আমাদের সন্তানাদি আল্লাহ পাকের আমানত বটে। এই আমানত তিনি যখন ফেরৎ চাহিবেন তখন উহা খুশি মনে ফেরত দেওয়াই বাঞ্ছনীয় এখানে কেহ হয়ত প্রশ্ন করিতে পারেন যে, সন্তান যদি (ফেরতযোগ্য) আমানতই হইবে, তবে আল্লাহ পাক এই সন্তানের প্রতি এত মহাব্বত কেন পয়দা করিয়া দিলেন? (অর্থাৎ- যদি সন্তানের প্রতি কোন মহাব্বত পয়দা করা না হইত, তবে তাহাদের ইন্তেকালে আমাদের মনেও কোন শোক সৃষ্টি হইত না সুতরাং উহাই তো ভাল ছিল) উহার জবাব হইল- মাতাপিতা যেন সন্তানকে সযতে প্রতিপালন করিতে পারে এই উদ্দেশ্যেই তাহাদের প্রতি এই অনাবিল স্নেহ-মমতা সৃষ্টি করা হইয়াছে অন্যথায় শিশুরা যেইভাবে মল-মূত্রে জড়াইয়া নোংরা হইয়া থাকে, অতঃপর মায়েদের পক্ষে তাহাদের সেবা-যত্ন সম্ভব ছিল না এই কারণেই দেখা যায় মায়েরা নিজের সন্তানকে যেইভাবে প্রতিপালন করে, অপরের সন্তানকে সেই স্নেহ-যত্ন লইয়া লালন করিতে পারে না। মায়ের কোলে প্রতিপালিত শিশু যতই বড় হইতে থাকে, তাহার প্রতি মায়ের আকর্ষণও সেই হারে কমিতে থাকে এই কারণেই দেখা যায়- বড় সন্তানের তুলনায় ছোট সন্তানের প্রতিই মাতাপিতার টান তুলনামূলক বেশী থাকে। 

মোটকথা, সন্তানকে যদি আল্লাহর আমানত মনে করা হয় তবে তাহার তিরাধানে বিশেষ পেরেশানী হা-হুতাশ সৃষ্টি হইবে না কারণ এই ক্ষেত্রে পেরেশানীর মূল কারণ হইল আজকাল সন্তানকে নিজের সম্পদ মনে করা হইতেছে 

 

3| mšÍvb jv‡fi I wewfbœ wRwb‡mi ZwØi

সন্তান লাভে যে একেবারেই নিরাশ হইয়া গিয়াছে, নিম্নের দোয়াটি প্রতি নামাজের পর নিয়মিত তিনবার করিয়া পাঠ করিলে ইনশাআল্লাহ সে সন্তান লাভ করিবে দোয়াটি এই- Santan Love er doya - দ্বিতীয় 

নিম্নের আয়াতটি সকাল-বিকাল নিয়মিত পাঠ করিতে থাকিলে আল্লাহ পাক নেক সন্তান দান করিবেন -

Nak Santan Love er doya
- তৃতীয় | বন্ধ্যা স্ত্রীলোক সাতদিন রোজা রাখিয়া সন্ধ্যায় শুধু পানি দ্বারা ইফতারী করিবে ইফতারীর পর নিম্নের আয়াত ২১ বার পাঠ করিলে আল্লাহ চাহেতো মহিলার গর্ভসঞ্চার হইবে আয়াত এই 
Bondha Mohilar Santan Love er doya


 ঐ - চতুর্থ 

চল্লিশটি লবঙ্গের মধ্যে বার করিয়া উপরোক্ত আয়াতটি পাঠ করিয়া দম করিবে হায়েজ হইতে পবিত্র হওয়ার পর লবঙ্গ প্রতি রাতে একটি করিয়া খাইবে খাওয়ার পর পানি পান করিবে না আমলের দিনগুলিতে স্বামী-স্ত্রী সহবাস করিবে 

 

গর্ভরক্ষার তদ্বির

গর্ভরক্ষার নিয়তে নিম্নের আয়াতটি প্রতি নামাজের পর তিনবার করিয়া পাঠ করিলে গর্ভ রক্ষা হয়। আয়াতটি এই- 

Gorba Rokha
  - দ্বিতীয় 

কোন মহিলার যদি গর্ভ নষ্ট হইয়া যাওয়ার ভয় হয় কিংবা গর্ভ স্থির না থাকে, তবে নিম্নের আয়াতটি লিখিয়া সঙ্গে ধারণ করিলে ইনশাআল্লাহ গর্ভ স্থির এবং উহার হেফাজত হইবে। আয়াতটি এই -

Gorba Rokha


সহজ প্রসব

নিম্নলিখিত আয়াত লিখিয়া সহজ প্রসবের নিয়তে বাম রানে বাঁধিয়া দিবে। ইনশাআল্লাহ খুব আছানীর সহিত সন্তান ভূমিষ্ট হইবে। সন্তান প্রসব হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উহা খুলিয়া ফেলিবে। আয়াত এই -

Easy Prosob


বদনজর হইতে হেফাজত

হযরত হাছান বসরী (রহঃ) বলিয়াছেন, নিম্নের আয়াতটি বদনজর হইতে হেফাজতের জন্য খুবই উপকারী উহা লিখিয়া শিশুর অঙ্গে বাধিয়া দিবে কিংবা পডিয়া দম করিবে আয়াতটি এই -

Tarbayat-e-aulad - part -2


সকল প্রকার বালা-মুসীবত হইতে হেফাজতের জন্য,

নিম্নের তাবিজটি মাদুলিতে পুরিয়া মোম দ্বারা মুখ বন্ধ করিয়া সন্তানের গলায় বাঁধিয়া দিলে আল্লাহর রহমতে সকল প্রকার বালা-মুসীবত হইতে নিরাপদ থাকিবে। 

Tarbayat-e-aulad - part -2

বুকের দুধ বৃদ্ধির জন্য

সুরা হুজুরাত লিখিয়া পান করাইয়া দিলে বুকের দুধ বৃদ্ধি পায় এবং গর্ভ রক্ষা হয়।

২। সুরা হিজর জাফরান দ্বারা লিখিয়া পান করিলে বুকের দুধ বৃদ্ধি হয় 

শিশুর দুধ ছাড়ানোর জন্য 

সুরা বুরুজ লিখিয়া শিশুর অঙ্গে বাঁধিয়া দিলে খুব আছানীর সহিত দুধ ছাড়িয়া দিবে।

শিশুর দাঁত

শিশুর দাঁত উঠিতে বিলম্ব হইলে সুরা ক্বাফ শুরু হইতে 

Tarbayat-e-aulad - part -2 পর্যন্ত লিখিয়া পান করাইয়া দিলে খুব সহজে দাঁত গজাইবে। 

অবাধ্য সন্তানের জন্য

অবাধ্য সন্তান বা স্ত্রীর কপাল স্পর্শ করিয়া যদি নিম্নের এছেমটি পাঠ করা হয় অথবা হাজার বার পাঠ করিয়া দম করা হয় তবে তাহারা বাধ্য হইয়া যাইবে এছেমটি এই-

Tarbayat-e-aulad - part -2

 4| Mf©ve¯’vq gvZv-wcZvi KZ©e¨

গর্ভাবস্থায় মাতাপিতা যদি নিজেদের আমল-আখলাক দুরস্ত করিয়া নেক আমল করিতে থাকে তবে তাহাদের সন্তানও নেক হইবে। অর্থাৎ মাতাপিতার আমলের প্রভাব গর্ভস্থ সন্তানের উপরও প্রতিফলিত হয় 

এক বুজুর্গের একটি সন্তান ছিল বড় দুষ্ট প্রকৃতির। এক ব্যক্তি বিস্ময় প্রকাশ করিয়া বুজুর্গকে জিজ্ঞাসা করিল, হে আল্লাহর অলী! আপনার ঘরে এমন দুষ্ট সন্তান হইল কেমন করিয়া? বুজুর্গ জবাব দিলেন, একদিন আমি এক বিত্তবানের ঘরে আহার গ্রহণ করিয়াছিলাম বিত্তবানের অর্থ-সম্পদ ছিল সন্দেহযুক্ত পথে উপার্জিত খাবার গ্রহণের পর আমার দেহে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং আমি স্ত্রীগমন করি। আর আল্লাহ পাকের ইচ্ছায় দিনই আমার স্ত্রী গর্ভবর্তী হয়। আমার এই সন্তানটি সন্দেহযুক্ত খাবারেরই ফসল

উপরোক্ত ঘটনা দ্বারা ইহা জানা গেল যে, গর্ভাবস্থায় মাতাপিতা ভাল-মন্দ যেই আমল করিবে, গর্ভস্থ সন্তানের উপরও আমলের প্রভাব পড়িবে

একটি ঘটনা

কোন এক স্থানের দুই স্বামী-স্ত্রী এইরূপ প্রতিজ্ঞা করিল যে, এখন হইতে আমরা আর কোন গোনাহের কাজ করিব না এবং অতীতের সকল অপরাধের জন্য তওবা করিয়া লইব ফলে হয়ত (আমাদের নেক আমলের উছিলায়) আল্লাহ পাক আমাদেরকে একটি নেক সন্তান দান করিবেন। অতঃপর তাহারা যথাযথভাবে প্রতিজ্ঞা রক্ষা করিয়া চলিল এবং এই সময়ের মধ্যেই স্ত্রীর গর্ভ সঞ্চার হইল। পরে আল্লাহ পাকের মেহেরবানীতে তাহারা একটি নেক সন্তান লাভ করিল। 

দিন গড়াইতে থাকে শিশুটি মাতাপিতার আদর-যত্নে লালিত হইয়া বড় হইতে লাগিল কিন্তু একদিন সে এক কাণ্ড করিয়া বসিল এক দোকান হইতে একটি বড়ই চুরি করিয়া সে খাইয়া ফেলিল। এই ঘটনা জানিতে পারিয়া স্বামী স্ত্রীকে ডাকিয়া জিজ্ঞাসা করিল, সত্য করিয়া বল আমাদের সন্তানের মধ্যে এই স্বভাব কেমন করিয়া আসিল। স্ত্রী নিজের অপরাধ স্বীকার করিয়া জবাব দিল, আমাদের প্রতিবেশীর বড়ই বৃক্ষের যেই ডালটি আমাদের আঙ্গিনাতে ঝুলিয়া আছে, একবার আমি উহা হইতে একটি বড়ই পাড়িয়া খাইয়াছিলাম। ঘটনা শুনিয়া স্বামী বলিলেন, সেদিনের তোমার সেই আচরণই আজ আমাদের সন্তানের চরিত্রে প্রতিফলিত হইয়াছে 

মোটকথা, নেক সন্তান পাওয়ার প্রথম তদ্বির হইল প্রথমে মাতাপিতা নিজেরা নেক হওয়া।

 

5| cÖ_g mšÍvb ¯¿xi wcÎj‡q nIqv Riæix b‡n

আজকাল প্রায় সকল পরিবারেই ইহা জরুরী মনে করা হয় যে, প্রথম সন্তান স্ত্রীর পিত্রালয়েই হইতে হইবে ফলে দেখা যায়- এই নিয়ম রক্ষা করার উদ্দেশ্যে সন্তান হওয়ার পূর্বে তড়িঘড়ি করিয়া তাহাকে পিত্রালয়ে পাঠাইবার ব্যবস্থা করা হয় অথচ এই ক্ষেত্রে ইহা চিন্তা করা হয় না যে, এই সময়টি তাহার সফরের জন্য উপযোগী কি-না। এই ধরনের অসতর্কতার কারণেই অনেক সময় শিশু মায়ের স্বাস্থ্যের অপূরণীয় ক্ষতি হয় এবং পরবর্তীতে সারা জীবন উহার মাশুল দিতে হয়। অথচ একটি অপ্রয়োজনীয় নিয়ম রক্ষা করিতে গিয়াই এত বড় ঝুঁকি গ্রহণ করা হইতেছে 

অবস্থা দেখিয়া মনে হয় যেন তাহারা নিজেরাই শরীয়তের কোন নূতন বিধান বানাইয়া লইয়াছে বিশেষতঃ যখন এইরূপ আকীদা করা হয় যে, এই নিয়ম রক্ষা না করিলে আমাদের কোন নহুসত (অমঙ্গল) কিংবা বদনাম হইবে তখন তো উহা আরো মারাত্মক। কারণ, নহুসত-কুলক্ষণ বা অমঙ্গলের আশঙ্কার সহিত শিরকের মিশ্রণ রহিয়াছে আর বদনামের মিশ্রণ হইল অহংকারের সহিত অহংকার হারাম হওয়ার বিষয়টি কোরআন-হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। সুতরাং এই সকল বিষয়ে আমাদের সকলেরই সতর্ক হওয়া আবশ্যক। 

 

6| mšÍvb cÖm‡ei mgq c`©vi e¨vcv‡i AmZK©Zv

সন্তান প্রসবের সময় দাই বা নার্সের সম্মুখে কেবল জরুরত পরিমাণই কাপড় খোলা যাইবে উহার অতিরিক্ত নহে চিকিৎসার কারণেও যদি দেহের কোন অংশ আবরণমুক্ত করিতে হয় তবে সেই ক্ষেত্রেও জরুরতের কথাটি স্মরণ রাখিবে যেমন, রানের উপর যদি ফোড়া হয় এবং ডাক্তারকে দেখাইতে হয়, তবে কেবল ফোড়ার জায়গাটুকুই দেখাইবে, বেশী দেখাইবে না এইরূপ অবস্থায় কোন পুরাতন কাপড় দ্বারা সমস্ত দেহ আবৃত করিয়া শুধু ফোঁড়ার জায়গাটুকু কাটিয়া দিলে ডাক্তার শুধু ফোঁড়ার জায়গাটুকু দেখিয়া লইবেন, আশপাশে আদৌ দেখিতে পারিবেন না। কিন্তু চিকিৎসক ব্যতীত অন্য কোন পুরুষ বা নারী ফোঁড়ার জায়গাটুকুও দেখিতে পারিবে না অথচ মুখ মেয়েলোকেরা প্রসবকালে এইভাবে উলঙ্গ করিয়া লয় যে, উপস্থিত সকল মহিলারাই দেখিতে থাকে। এই গর্হিত পাপ-প্রথা সম্পূর্ণরূপে বর্জন করিবে ইহা সম্পূর্ণ হারাম 

রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেনঃ সতর যে দৈখিবে এবং যে দেখাইবে, উভয়ের উপরই আল্লাহর লানত পড়িবে এই বিষয়ে সকলেরই সতর্ক হওয়া আবশ্যক। 

গর্ভকালে এবং অন্য কোন কারণে যদি ধাত্রী দ্বারা পেট মালিশ করাইবার প্রয়োজন হয় তবে সেই ক্ষেত্রেও নাভির নীচের অংশ খোলা জায়েজ নহে। কোন কাপড় রাখিয়া উহার উপর দিয়া মালিশ করাইবে। বিনা প্রয়োজনে ধাত্রীকেও দেখানো যাইবে না। সাধারণতঃ পেট মালিশ করাইবার সময় ধাত্রীততা দেখে বটেই, সেই সঙ্গে মা, বোন, খালা, ফুফু, দাদী, নানী, চাচী, মামী, ননদ ইত্যাদি বাড়ীর অন্যান্য মহিলারাও দেখে ইহা সম্পূর্ণ নাজায়েজ। 

কাফের নারীদিগকেও পর্দা করিতে হইবে। তাহাদের সামনেও কেবলমাত্র হাতের পাতা, পায়ের পাতা এবং মুখ ব্যতীত দেহের অপর কোন অংশ এমনকি মাথার একটি চুলও খোলা জায়েজ নহে সুতরাং ধাত্রী যদি হিন্দু-খৃষ্টান ইত্যাদি। অমুসলমান হয়, তবে প্রসবের সময় কেবল আবশ্যকীয় স্থান ব্যতীত হাতের কজির উপরের অংশ, পায়ের গোছা, গলা মাথা ইত্যাদি দেখাইলে গোনাহগার হইবে।

 

7| beRvZ‡Ki wel‡q gvQb~b ZixKv

সন্তান পয়দা হওয়ার পর নিম্নের বিষয়গুলির উপর আমল করা সুন্নত 

* প্রথমে গোসল করাইয়া তাহার ডান কানে আজান এবং বাম কানে একামত বলিবে। 

* কোন দ্বীনদার-পরহেজগার বুজুর্গের মুখের চিবানো সামান্য খুরমা বাচ্চার মুখে দিবে। 

ইহা ব্যতীত অপরাপর সকল নিয়ম-প্রথা এবং আজান দেওয়া উপলক্ষে মিষ্টি বিতরণ- ইত্যাদি সবই অযৌক্তিক এবং মাকরূহ।

শিশুর মুখে খাবার তুলিয়া দেওয়া সম্পর্কে হযরত মওলানা রশীদ আহমদ গাংগুহী (রহঃ)-কে জিজ্ঞাসা করা হইলে তিনি বলিলেন, কোন আল্লাহওয়ালা বুজুর্গের মুখের চিবানো খাবার যদি হয় তবে তো উহা সুন্নত; অন্যথায় নবজাতককে কোন বেদআতীর মুখের থুথু খাইতে দিলে উহাতে কি লাভ হইবে

 

8| Kv‡b AvRvb †`Iqvi inm¨

নবজাতকের কানে কি কারণে আজান দেওয়া হয় এই বিষয়ে কেহ কেহ লিখিয়াছেনঃ শিশুর কানে আজান-একামত দেওয়ার অর্থ হইল তাহাকে এই কথা বলিয়া দেওয়া যে, আজান-একামত হইয়া গিয়াছে, এখন শুধু নামাজের অপেক্ষা (নামাজ শুরু হইতে যেই সামান্য বিলম্ব উহাই তোমার জীবন) * উহার অপর হেকমত হইলঃ আজান-একামতের মাধ্যমে শিশুর কানে প্রথমেই আল্লাহর পবিত্র নাম পৌছাইয়া দেওয়া যেন উহার প্রভাবে তাহার ঈমানের ভিত্তি মজবুত হইয়া যায় এবং শয়তান দূরে সরিয়া যায়। এই দুইটি হেকমতেরই সারমর্ম হইল- দুনিয়াতে আসিবার পর তুমি আল্লাহকে ভুলিয়া গাফেল হইয়া থাকিও না

 

9| K‡qKwU Riæix welq

কোন কোন স্থানে দেখা যায়, নবজাতককে ভেষণের পানি দ্বারা গোসল করানো হয় ইহা না করিয়া প্রথমে লবণের পানি দ্বারা গোসল করাইয়া উহার কিছুক্ষণ পর পরিষ্কার পানি দ্বারা গোসল করাইবে উহার ফলে শিশু চর্মরোগসহ বিবিধ শারীরিক উপসর্গ হইতে হেফাজতে থাকিবে কিন্তু লবণের পানি যেন নাক, কান এবং মুখে যাইতে না পারে সেদিকে খুব লক্ষ্য রাখিবে | শিশুর গায়ে যদি ময়লা বেশী থাকে তবে কয়েকদিন পর্যন্ত লবণের পানি দ্বারা গোসল করাইবে আর ময়লা বেশী না থাকিলে চল্লিশ দিন পর্যন্ত তিন-চারি দিন পর পর পরিষ্কার পানি দ্বারা গোসল করাইয়া তৈল মালিশ করিয়া দিবে (শীত মৌসুমে বুঝিয়া-শুনিয়া গোসল করাইবে) 

* শিশুকে চার-পাঁচ মাস পর্যন্ত তৈল মালিশ করা ভাল 

* শিশুকে বেশী আলোকময় স্থানে রাখিবে না অধিক আলোর প্রভাবে শিশুর চোখের জ্যোতি কমিয়া যায়  

* শিশুকে এক পার্শ্বে বেশীক্ষণ শেয়াইয়া রাখিবে না এবং কোন একদিকে দীর্ঘ সময় তাকাইয়া থাকিতে দিবে না। উহার ফলে শিশু রাতকানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে 

* শিশুকে কখনো খারাপ দুধ পান করাইবে না। দুধের ভাল-মন্দ যাচাই করিবার সহজ উপায় হইল- এক ফোটা দুধ নখের উপর লইয়া দেখিবে, যদি উহা সঙ্গে সঙ্গে গড়াইয়া পড়ে কিংবা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত না গড়ায়, তবে এই উভয় অবস্থায়ই দুধ নষ্ট। আর সামান্য গড়াইবার পর যদি থামিয়া থাকে তবে মনে করিবে উহা ভাল আর যেই দুধের উপর মাছি বসে না উহাও খারাপ 

* শিশুকে দুধ পান করাইবার পূর্বে কোন মিষ্টিদ্রব্য যেমন মধু বা খুরমা চিবাইয়া নরম করিয়া তাহার মুখের তালুতে সামান্য লাগাইয়া দিবে 

* বুকের দুধ ভারী হইয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের শরনাপন্ন হইবে

* কোলের শিশুকে একা ঘরে রাখিয়া কোথাও যাইবে না 

এক মহিলা তাহার দুধের শিশুকে একাকী ঘরে রাখিয়া কোথাও কাজে গিয়াছিল এই ফাকে ঘরের বিড়াল শিশুটিকে চড়াইয়া-কামড়াইয়া মারিয়া ফেলিল এই ঘটনা দ্বারা দুইটি শিক্ষা পাওয়া গেল- প্রথমতঃ দুধের শিশুকে একাকী রাখিয়া কোথাও যাইতে নাই ! দ্বিতীয়তঃ কুকুর-বিড়ালের কোন বিশ্বাস নাই। 

এক শ্রেণীর কাণ্ডজ্ঞানহীন মহিলা বাচ্চাদের বিছানায় বিড়াল দেখিয়া তাড়ায় না, বরং উহারেও সঙ্গে শুইতে দেয় উহা! ঠিক নহে। কারণ, তাতে বিড়ালের হাত-পা বিড়ালের গাড়য পড়িলে কামড়-আঁচড় বসাইয়া দিতে পারে।এই ঘটনা বহুবার ঘটিতে দেখা গিয়াছে

 

10| cÖm~wZ‡K AcweÎ Ges A”QzZ g‡b Kiv

এক শ্রেণীর মানুষ প্রসূতিকে নাপাক এবং অচ্ছুত (যাহাকে ছোয়া যায় না) মনে করিয়া তাহাদিগকে সম্পূর্ণরূপে বর্জন করিয়া চলে তাহাদের নিকট বসা এবং স্পর্শ করা ঘৃণার বিষয় মনে করা হয় এমনকি তাহারা কোন পাত্র স্পর্শ করিয়া ফেলিলে উহা ধোয়া-মাজা না করিয়া ব্যবহার করা হয় না এই সকল নিয়ম-প্রথা একেবারেই অর্থহীন 

সমাজের আরেকটি দুষ্টপ্রথা হইল- প্রসূতির নেফাসের মুদ্দত শেষ হওয়ার পর গোসল করিয়া পাক হওয়ার পূর্বে তাহার স্বামীকে নিকটে আসিতে দেওয়া হয় না এই সময় স্বামী নিকটে আসাকে, দোষণীয় এবং খারাপ মনে করা হয় এই নিয়মের ফলে অনেক সময় সীমাহীন জটিলতা সৃষ্টি হইতেও দেখা যায় স্ত্রীর হয়ত এমন কিছু অসুবিধা থাকে যাহা স্বামী ব্যতীত অপর কাহারো নিকট প্রকাশ করা যায় না, কিন্তু স্বামীকে নিকটে আসিতে না দেওয়ার কারণে সে অসুবিধা লইয়াই দিন কাটাইতে থাকে তাছাড়া কোন অসুবিধা না থাকিলেও স্বামীর তো তাহার সন্তানকে দেখিবার ইচ্ছাও হইতে পারে ইহা কেমন যুক্তির কথা যে, দুনিয়ার সকলেই আসিয়া বাচ্চাকে দেখিতে পারিবে কিন্তু যাহার বাচ্চা সে কাছেও আসিতে পারিবে না? এই যদি অবস্থা হয় তবে তো বলিতে হয় এমন সন্তানই ঘরে আসিল, যে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ পয়দা করিয়া দিল 

 

11| cvK nIqvi ci bvgv‡R wej¤^

সন্তান প্রসবের কারণে দীর্ঘ চল্লিশ দিন নারীদের নামাজ হইতে বিরত থাকিতে হয় কিন্তু পাক হওয়ার পর যথা সময় নামাজ আদায়ে অযথাই বিলম্ব করা হয়। অনেক ভাল ভাল নামাজী মহিলারাও এই ক্ষেত্রে অবহেলা করিয়া থাকে কিন্তু শরীয়তের সুস্পষ্ট বিধান হইল, রক্ত বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গোসল করিয়া পাক হইবে এবং গোসল করা ক্ষতিকর হইলে তাইয়াম্মুম করিয়া নামাজ শুরু করিয়া দিবে বিনা ওজরে এক ওয়াক্ত নামাজ ত্যাগ করিলেও বড় কঠিন গোনাহ হইবে 

হাদীস শরীফে বলা হইয়াছে- এইরূপ ব্যক্তিরা দোজখে ফেরাউন, হামান কারুনের সঙ্গে অবস্থান করিবে। 

প্রসূতি চল্লিশ দিন পূর্বে পাক হইয়া গেলেও চল্লিশ দিন পর্যন্ত তাহার নামাজ পড়া নিষিদ্ধ মনে করা হয় ইহা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা নেফাসের সর্বোচ্চ সময় হইল চল্লিশ দিন কমের কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা নাই যখনই পাক হইবে গোসল করিয়া নামাজ শুরু করিয়া দিবে। অনুরূপভাবে চল্লিশ দিনের পরও যদি রক্ত বন্ধ না হয় তবে চল্লিশ দিনের পর হইতে নিজেকে পাক মনে করিয়া নামাজ আদায় শুরু করিয়া দিবে 

একটি প্রসিদ্ধ নিয়ম হইল- প্রসূতির নেফাস শেষে গোসল করিয়া পাকহওয়ার পূর্বে তাহার হাতের কোন জিনিস খাওয়া নাজায়েজ মনে করা হয় এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল হায়েজ-নেফাসের অবস্থায় হাত নাপাক হয় না 

 

12| mšÍv‡bi Rb¥ Dcj‡ÿ Dcnvi msMÖ‡ni Abyôvb

সন্তানের জন্ম উপলক্ষে পাড়া-প্রতিবেশী সকল আত্মীয়-স্বজনকে দাওয়াত করা হয় এবং তাহারা সকলেই আসিয়া (প্রথা অনুযায়ী) নবজাতককে কিছু কিছু উপহার দিয়া যায় 

এখানে লক্ষণীয় বিষয় হইল, এই ক্ষেত্রে সহার দাতাদের উদ্দেশ্য নিয়ত কি থাকে? যেই সময় এই রেওয়াজ চালু করা হয় তখন উদ্যোক্ততাদের উদ্দেশ্য কি ছিল তাহা আমাদের জানা নাই সম্ভবতঃ আত্মীয়-স্বজনদের মনোরঞ্জনের উদ্দেশ্যেই এই আয়োজন করা হইত কিন্তু বর্তমানে এই সকল অনুষ্ঠানে যাহা হইতেছে, তাহাতে ইহা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে, মনের ইচ্ছা সন্তুষ্টির বিরুদ্ধে হইলেও আগন্তুকদের সকলকেই কিছু না কিছু দিতে হইবেই অন্যথায় সকলের সম্মুখে নিজেকে খাটো করিতে হইবে স্বজনদের মধ্যে কোন কোন মহিলা হয়ত নিজেরাই নেহায়েত বেহাল অবস্থায় আছে, অথচ তাহাদিগকেও বার বার পীড়াপীড়ি করিয়া অনুষ্ঠানে হাজির হইতে বাধ্য করা হয়। যদি না আসে তবে জীবন ভর এই লইয়া খোটা দেওয়া হয়। 

মোটকথা, ইচ্ছায় হউক অনিচ্ছায় হউক, সেখানে যাইতেই হইবে এবং কিছু দিয়াও আসিতে হইবে এইভাবে মানুষকে ঘরে ডাকিয়া আনিয়া জবরদস্তি কিছু আদায় করা পরিষ্কার জুলুম নয় তো কি? অর্থাৎ স্বজনদের একত্র সমাগমে আনন্দের পরিবর্তে অনেকের জন্য উহা কঠিন মুসীবতের কারণ হইয়া দাঁড়ায় কিন্তু যত যাহাই হউক, এই টেক্স আদায় করিতেই হইবে- এই বিষয়ে কাহারো সঙ্গে কোন খাতির নাই সরকারী টেক্স আদায়ের ক্ষেত্রেও অনেক সময় দুই-এক মাস বিলম্ব করা যায়, কিন্তু এই ক্ষেত্রে এক মিনিটও বিলম্ব করিবার কোন উপায় নাই বরং নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই উহার আয়োজন করিয়া তবে অনুষ্ঠানে যাইতে হইবে 

এক্ষণে বলুন, এইভাবে মানুষকে বাধ্য করিয়া কিছু আদায় করা, নিজের পরিজনকে উহা আদায় করার মাধ্যম বানানো এবং এই পদ্ধতিতে কিছু দেওয়া কেমন করিয়া জায়েজ হইতে পারে? যাহারা দেয় তাহাদেরও নিয়ত থাকে নিছক সুনাম অর্জন বড়মানুষী প্রদর্শন, যাহা হাদীসে পাকে নিষেধ করা হইয়াছে। বলা হইয়াছে- যাহারা সুনাম-শোহরতের উদ্দেশ্যে পোশাক পরিধান করিবে, কেয়ামতের দিন আল্লাহ পাক তাহাদিগকে জিল্লতির পোশাক পরিধান করাইবেন  

সুতরাং- ইহা দ্বারা জানা গেল যে, সুনাম অর্জনের উদ্দেশ্যে কোন কাজ করা জায়েজ নহে। অথচ এই ক্ষেত্রে সুনাম অর্জনই থাকে মূল উদ্দেশ্য অর্থাৎ লোকেরা বলিবে যে, অমকে এই পরিমাণ উপহার দিয়াছে আর যদি না দেওয়া হয় তবে খোটা দিয়া বলা হইবে যে, এমন বখিলী করিয়া আসিবার কি প্রয়োজন ছিল? অর্থাৎ এই ধরনের নিয়তের কারণেই দাতারাও গোনাহগার হইবে  

এক্ষণে যাহারা উহা গ্রহণ করিতেছে তাহাদের অবস্থা লক্ষ্য করুন। হাদীসে পাকে এরশাদ হইয়াছে- মোমিন-মুসলমানের সম্পদ তাহার আন্তরিক সন্তুষ্টি ব্যতীত (গ্রহণ করা) হালাল নহে। সুতরাং কোন ব্যক্তি যখন পরিস্থিতির শিকার হইয়া কোন কিছু দিতে বাধ্য হয়, তখন গ্রহীতার পক্ষে উহা গ্রহণ করা জায়েজ হইবে না। আর দাতা যদি বিত্তবান হয় এবং উহা দেওয়াতে সে কোন কষ্ট অনুভব না করে তবে এই ক্ষেত্রেও এই উপহার দেওয়ার পিছনে তাহার উদ্দেশ্য থাকে অহংকার বড়মানুষী প্রদর্শন। 

এই সম্পর্কে হাদীসের ভাষ্য হইল- রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল মানুষের দাওয়াত কবুল করিতে নিষেধ করিয়াছেন, যাহারা, নিজেদের অহংকার বড়ত্ব প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে দাওয়াত করে। অর্থাৎ এইরূপ ব্যক্তিদের খাবার কিংবা অন্য কিছু গ্রহণ করিতে নিষেধ করা হইয়াছে। কারণ, এই ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের গোনাহের কাজে সহযোগিতা করা হয়। আর গোনাহের কাজে সহযোগিতা করাও গোনাহ বটে ! সারকথা হইল, উপরোক্ত পদ্ধতিতে উপহার গ্রহীতারা গোনাহগার হইতেছে

এখন গৃহের অন্যান্য সকলে যাহারা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করিয়াছে তাহদের অবস্থাও লক্ষ করুন। ইহরাই মানুষকে ডাকিয়া ডাকিয়া এই গোনাহের অনুষ্ঠানে শরীক করিয়াছে। সুতরাং ইহাদিগকেও গোনাহের অংশ লইতে হইবে।

মোটকথা, সন্তানের জন্ম উপলক্ষে এমন উপহার সংগ্রহের আয়োজন করা হইল যাহা সকল পক্ষকেই গোহগার বানাইয়া ছাড়িল। 

আজকাল বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেই সকল উপহার আমদানী হয়, গ্রহীতার পক্ষে উহা করজই বটে। (কারণ, ফেরৎ পাওয়ার নিয়তে যাহা দেওয়া হয় উহাকেই করজ বলা হয়। আজকাল বিবাহ-শাদীসহ এই জাতীয় অনুষ্ঠানে উপহার হিসাবে যাহা দেওয়া হয় উহার প্রায় সকল ক্ষেত্রেই অদল-বদলের খেয়াল করা হয় অর্থাৎ সামনে তো আমাদেরও অনুষ্ঠান আসিতেছে, তখন কি আর তাহারা খালি হাতে আসিতে পারিবে? কিংবা আমাদের অনুষ্ঠানে তাহারা শাড়ী দিয়াছিল

এখন আমরা শাড়ী না হউক, অন্ততঃ ......... ইত্যাদি ইত্যাদি অনুবাদক) 

কিন্তু বিনা প্রয়োজনে করজ গ্রহণ করিতে শরীয়ত নিষেধ করিয়াছে। আর করজের হুকুম হইল, যখনই তোমার সুযোগ হইবে তখনই উহা পরিশোধ করিয়া দিবে ! অথচ এই ক্ষেত্রে শরীয়তের এই নিয়ম রক্ষা করা হয় না। বরং তাহার বাড়ীতেও অনুরূপ একটি অনুষ্ঠান পর্যন্ত অপেক্ষা করিতে হয় কেহ দুই-চারি দিন পরই উহার বদলা দিতে চাহিলে কেহই উহা গ্রহণ করিবে না। 

এই জাতীয় উপহারকে মুখে করজ বলিয়া স্বীকার না করিলেও কার্যতঃ উহা করজ বলিয়াই সাব্যস্ত হয়। সুতরাং করজ সাব্যস্ত হওয়ার পর উহা আদায়ের ক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান অমান্য করার কারণে পৃথকভাবে গোনাহগার হইতে হইবে। করজ আদায়ের নিয়ম হইল, হাতে টাকা-পয়সা আসামাত্রই উহা আদায় করিয়া ফেলিবে। আর কোন ব্যবস্থা না হইলে বিলম্ব করাতে কোন অপরাধ হইবে না। অথচ এই ক্ষেত্রে নিয়ম হইল, দাতার সঙ্গতি আছে কি নাই তাহা বিবেচনার বিষয় নহে; বরং এই অনুষ্ঠান উপলক্ষেই উহা দিতে হইবে। 

সারকথা হইল- সকল দিক হইতেই এই সকল অনুষ্ঠানে শরীয়তের বিরুদ্ধাচরণ করা হইতেছে। এই কারণেই এই সকল রুসম-প্রথা না জায়েজ। 

 

13| wkïi hZœ t

* শিশুর শ্রেষ্ঠ খাদ্য হইল মায়ের দুধ। মা যদি সুস্থ থাকে তবে শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে মায়ের দুধ অপেক্ষা উত্তম খাদ্য আর কিছু নাই। সুতরাং মা যদি সুস্থ থাকে তবে শিশুকে মায়ের দুধই খাইতে দেওয়া উচিত। 

* শিশুকে যদি ধাত্রী-মাতার দুধ খাওয়াইতে হয় তবে এমন স্বাস্থ্যবান যুবতী মহিলা ঠিক করিবে যেন তাহার দুধও টাটকা হয় (অর্থাৎ তাহার সন্তানের বয়স পাঁচ-ছয় বৎসরের বেশী না হয়) তা ছাড়া মহিলা দ্বীনদার পরহেজগার সৎস্বভাবসম্পন্ন হওয়া আবশ্যক। 

এই শিশুর বয়স সাত দিন হওয়ার পর তাহাকে দোলনায় শোয়াইতে শুরু করিবে। শিশুকে কোলে রাখা হউক কিংবা দোলনায়, তাহাদের মাথা সকল সময় উঁচা করিয়া রাখিবে তবে শিশুদেরকে দোলনায় ঝুলানোর বেশী অভ্যাস করা উচিত নহে। কেননা, দোলনা সর্বত্র পাওয়া যায় না এবং উহা সঙ্গে বহন করিয়া লইয়া যাওয়াও কষ্টকর হয় 

* শিশুদেরকে অধিক সময় কোলে রাখিবে না উহাতে তাহাদের শরীর। দুর্বল হইয়া যায় 

* শিশুদেরকে মায়ের কোলের সঙ্গে না শোয়াইয়া বরং একটু দূরে চতুর্দিকে উঁচু করিয়া ঠেস দিয়া শোয়াইবে কারণ, অনেক সময় ঘুমন্ত অবস্থায় মায়ের পাশ ফিরার সময় শিশুরা মার হাত-পা বা পিঠের নীচে পড়িয়া জীবন হারায়। অনেক সময় শিশুর হাত-পাও ভাঙ্গিয়া যায়  

* শিশুরা যেন সকলের কোলেই যায় এই অভ্যাস করাইবে কোন একজনের প্রতি বেশী আকৃষ্ট হইতে দিবে না। কারণ সে যদি অন্যত্র চলিয়া যায় বা মরিয়া যায় তখন শিশুকে সামলানো ভয়ানক মুসীবত হইবে 

* প্রতিদিন শিশুর হাত-পা, মুখমণ্ডল, গলা কান ইত্যাদি ভিজা কাপড় দ্বারা ভালভাবে মুছাইয়া পরিষ্কার করিয়া দিবে অন্যথায় তৈলের সহিত ময়লা জমাট বাঁধিয়া সকল স্থানে ঘা বিবিধ চর্মরোগ দেখা দিতে পারে। 

* শিশুরা পায়খানা-প্রস্রাব করার সঙ্গে সঙ্গে পানি দ্বারা ভালভাবে পরিষ্কার করিয়া দিবে শুধু কাপর দ্বারা মুছিয়া দেওয়া যথেষ্ট মনে করিবে না কারণ, শুধু মুছিয়া দিলে পরিষ্কার হয় বটে, কিন্তু দুর্গন্ধ থাকিয়া যায় এবং পায়খানার রস শুকাইয়া যাওয়ায় উহার তেজস্ক্রিয় পদার্থের কারণে খোস্কা পড়ে এবং খুজলী-পাঁচড়া হইয়া থাকে। সুতরাং পানি দ্বারা পরিষ্কার করিয়া দেওয়াই উত্তম। শীতের দিনে বার বার ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার করিলে সর্দি লাগিতে পারে তাই পানি একটু গরম করিয়া লইবে। |

* দুধ ছাড়ানোর পূর্বে যখন শিশুকে কিছু কিছু আলগা খাইতে দিবে তখন এই বিষয়ে সতর্ক থাকিবে যেন তাহাকে কোন শক্ত খাবার দেওয়া না হয় উহার ফলে দাঁত উঠিতে বিলম্ব এবং চিরদিনের জন্য দাঁত কমজোর হইয়া যাওয়ার আশঙ্কা থাকে দাঁত উঠার সময় একেবারে পেট ভরিয়া আহার করাইবে না এবং পানিও বেশী পান করাইবে না উহাতে শিশুর হজমশক্তি দুর্বল হইয়া যাইতে পারে। পেট সামান্য ফাঁপা দেখিলেই আহারে কিছুটা বিলম্ব করিবে এবং শুইয়া থাকিতে দিবে উহাতে উদরস্থ খাবার হজম হইয়া শিশু দ্রুত সুস্থ হইয়া উঠিবে  

* শিশুরা যখন খানা খাওয়ার উপযুক্ত হয় তখন ধাত্রী বা চাকরানীর হাতে খানা খাওয়াইবার ভার দিবে না নিজ হাতে অথবা কোন নির্ভরযোগ্য বুদ্ধিমতী নারীর সম্মুখে খাওয়াইবে, যেন অধিক খাওয়াইয়া শিশুকে অসুস্থ করিয়া না ফেলে 

* শিশুদের যখন কিছু বুদ্ধি হয়, তখন তাহাদিগকে নিজ হাতে এবং ডান হাতে খাইতে অভ্যস্ত করাইবে খাওয়ার পূর্বে হাত-মুখ ভালভাবে পরিষ্কার করিয়া দিবে সর্বদা লক্ষ্য রাখিবে যেন শিশুদের কম খাওয়ার অভ্যাস গরিয়া উঠে। ফলে তাহারা রোগমুক্ত লোভমুক্ত থাকিতে পারিবে। 

* শিশুদেরকে বিশেষ কোন খাবারের প্রতি অতিমাত্রায় আকৃষ্ট হইতে দিবে না বরং সকল ধরনের খাবারেই তাহাদিগকে সহনীয় করিয়া তুলিবে এবং কোন খাবারই যেন অতিরিক্ত না খায় সেই দিকে লক্ষ্য রাখিবে উদরস্ত খাবার হজম হওয়ার পূর্বে অন্য খাবার গ্রহণ করিতে দিবে না যাবতীয় মৌসুমী ফল-ফলাদী (অল্প হইলেও) খাইতে দিবে কিন্তু অতিরিক্ত টক খাইতে দিবে না শিশুদেরকে বিশেষভাবে সতর্ক করিয়া দিবে যেন খানা খাওয়ার সময় এবং পানি পান করার সময় কখনো না হাসে কারণ, উহার ফলে খাদ্যকণা পানীয় নাসিকা রন্ধ্রে প্রবিষ্ট হইয়া মারাত্মক ধরনের অঘটন ঘটিয়া যাইতে পারে 

* যথাসম্ভব শিশুদেরকে উত্তম খাবার খাইতে দিবে কেননা, এই বয়সে তাহাদের স্বাস্থ্য ভাল থাকিলে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি হইয়া সারা জীবন সুস্থ থাকিবার ভিত গড়িয়া উঠিবে। বিশেষতঃ শীত মৌসুমে রকমারী ফল-ফলাদী, তেলেভাজা মিষ্টি, নারিকেল এবং মিসরী খাওয়াইলে দেহ শক্তিশালী হইবে  

* শিশুদেরকে এই অভ্যাস করাইবে যেন কেহ কিছু খাইতে দিলে ঘরে আনিয়া মাতাপিতার সম্মুখে খায় নিজেনিজেই খাইতে বারণ করিবে 

* শিশুদেরকে এই অভ্যাস করাইবে যেন নিজেদের মুরব্বী ব্যতীত অপর কাহারো নিকট কিছু না চায় অনুরূপভাবে অন্য কাহারো দেওয়া বস্তু যেন মুরব্বীদের হুকুম ছাড়া গ্রহণ না করে  

* শিশুদেরকে অতিরিক্ত আহলাদ দেওয়া ঠিক নহে। কেননা বেশী আহলাদে তাহাদের স্বভাব নষ্ট হইয়া যায় 

| * শিশুদেরকে খুব টাইট-ফিট পোশাক দিবে না খুব দামী পোশাকও পরাইবে না তবে ঈদের সময় সাধ্যমত ভাল পোশাক দেওয়া উচিত 


14| AvKxKv I GB m¤ú‡K© wKQz K_v

* ছেলে বা মেয়ে জন্মিলে সপ্তম দিবসে তাহার নাম রাখিয়া আকীকা দিবে ইহাতে সন্তানের বালা-মুসীবত দূর হয় এবং যাবতীয় আপদ-বিপদ হইতে নিরাপদ থাকে  

* ছেলে হইলে আকীকায় দুইটি বকরী বা দুইটি ভেড়া আর মেয়ে হইলে একটি বকরী বা একটি ভেড়া জবাই করিবে অথবা কোরবানীর গরুর মধ্যে ছেলের জন্য দুই অংশ এবং মেয়ের জন্য এক অংশ লইবে। সন্তানের মাথার চুল মুড়াইয়া ফেলিবে এবং চুলের ওজনের সমপরিমাণ সোনা বা রূপা দান করিয়া দিবে মনে চাহিলে বাচ্চার মাথায় জাফরান লাগাইয়া দেওয়া যাইতে পারে  

* সামর্থ্য না থাকিলে ছেলের পক্ষ হইতে একটি বকরী আক্বীকা করাও জায়েজ আকীকা না করিলেও কোন অপরাধ হইবে না

* জন্মের সপ্তম দিবসে আক্বীকা করা মোস্তাহাব যদি সপ্তম দিবসে করা সয় না হয় তবে যেই দিনই করা হউক, যেই বারে সন্তান জন্ম হইয়াছে উহার আগের দিন করিবে যেমন, শুক্রবার সন্তান হইয়া থাকিলে বৃহস্পতিবার সপ্তম দিবস হইবে বৃহস্পতিবারে জন্ম হইলে বুধবার আক্বীক্বা করিবে মোটকথা, হিসাব করিয়া সপ্তম দিবস ঠিক রাখতে চেষ্টা করিবে।। 

* যেই প্রাণী দ্বারা কোরবানী দুরস্ত নহে, উহা দ্বারা আকীকাও দুরস্ত নহে আর যেই প্রাণীর কোরবানী দুরস্ত উহা দ্বারা আকীকাও দুরস্ত হইবে

* আকীকার গোস্ত কাঁচা ভাগ করিয়া দেওয়া, কিংবা রান্না করিয়া ভাগ করিয়া দেওয়া বা দাওয়াত করিয়া খাওয়ানো সবই জায়েজ আকীক্বার গোস্ত বাপ, দাদা, নানা, নানী সকলেই খাইতে পারিবে  

 আকীকার জন্য সপ্তম দিবস নির্ধারণের কারণ

আক্বীকৃার জন্য সপ্তম দিবস নির্ধারণের কারণ হইল, সন্তানের জন্ম আকীকার মধ্যে সময়ের কিছুটা ব্যবধান থাকা জরুরী। কারণ বাচ্চা হওয়ার পর সকলেই নবজাতকের প্রাথমিক সেবা-যত্ন লইয়াই ব্যস্ত থাকে সুতরাং এই সময় আকীকৃার আয়োজন করা সকলের জন্যই কষ্টকর হইবে  

 তাছাড়া অনেক সময় ছাগল-ভেড়া তালাশ করিয়া জোগাড় করিতেও সময়ের প্রয়োজন হয় সুতরাং প্রথম দিবসেই যদি আক্বীকৃার দিন ধার্য করা হইত তবে সকলের জন্যই উহা পেরেশানীর কারণ হইত এই কারণেই সাত দিনের ব্যবধান রাখা হইয়াছে যেন আছানীর সহিত সকল কিছু আঞ্জাম দেওয়া যায় 

অনুরূপভাবে সপ্তম দিবসে নাম রাখিতে বলার কারণ হইল, একে তো সাত দিনের পূর্বেই নবজাতকের নামের বিশেষ কোন প্রয়োজন হয় না তা ছাড়া গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করিয়া একটি ভাল নাম নির্বাচনের জন্য কিছুটা সময়েরও প্রয়োজন হয় বটে 


ছেলের জন্য দুই বকরী এবং মেয়ের জন্য এক বকরী হওয়ার কারণ

রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেনঃ ছেলের জন্য আক্বীক্বা হইল দুই বকরী এবং মেয়ের জন্য এক বকরী 

উহার কারণ হইল, মানুষের নজরে মেয়ের তুলনায় ছেলেকে লাভজনক মনে করা হয়। সুতরাং যাহা অধিক মূল্যবান লাভজনক, উহার জন্য দুইটি জবাই করাই বাঞ্ছনীয় 

আল্লামা ইবনে কাইম (রহঃ) লিখিয়াছেনঃ ছেলের পক্ষ হইতে দুইটি এবং মেয়ের পক্ষ হইতে একটি আক্বীক্বা করার কারণ হইল, মেয়ের তুলনায় ছেলের ফজিলত গুরুত্ব বেশী আর ছেলের নেয়মত পাইয়া পিতা যেহেতু অধিক খুশী হয়, সুতরাং এই ক্ষেত্রে তাহার পক্ষে অধিক শুকরিয়া আদায় করা কর্তব্য অর্থাৎ অধিক নেয়মতের অধিক শুকরিয়া আদায় করাই বিধেয়


মাসআলা

ছেলের জন্য দুইটি বকরী এবং মেয়ের জন্য একটি বকরী আকীকা দিবে। আর বড় জন্তুর মধ্যে শরীক হইলে ছেলের জন্য দুই অংশ এবং মেয়ের জন্য এক অংশ দিবে আর সঙ্গতির অভাবে যদি ছেলের জন্যও এক অংশ দেওয়া হয় তবে উহাও জায়েজ আছে

 

বাচ্চার চুলের সমপরিমাণ রৌপ্য দান করা

রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত হোছাইন সম্পর্কে তাঁহার মাতাকে বলিলেন, হে ফাতেমা ! তাহার মাথার চুল মুণ্ডন করিয়া দাও এবং চুলের সমতুল্য রৌপ্য দান করিয়া দাও 

এই রৌপ্য দান করার কারণ হইল, একটি সন্তান মায়ের উদর হইতে ভূমিষ্ঠ হইয়া দুধ পান করার পর্যায় পর্যন্ত উপনীত হওয়া ইহা আল্লাহ পাকের অশেষ নেয়মত বটে সুতরাং এই বিষয়ে আল্লাহ পাকের শোকর আদায় করা কর্তব্য আর উত্তম শোকর হইল উহার বিনিময়ে কিছু দান করিয়া দেওয়া এদিকে চুল হইল মায়ের উদরস্ত সন্তানেরই অংশ বিশেষ আর উহা দূর হওয়া দুধ পান করার পর্যায়ে উপনীত হওয়ারই লক্ষণ সুতরাং সন্তানের এই বিকাশ-বিবর্তন প্রবৃদ্ধি উপলক্ষেই রৌপ্য দান করা কর্তব্য 

এখানে বিশেষভাবে রৌপ্য দান করিতে বলার অর্থ হইল, স্বর্ণ বহু দামী বস্তু বিত্তবান শ্রেণী ব্যতীত অপর সকলের পক্ষে উহা দান করা সম্ভব হইবে না আর অন্যান্য বস্তুর মূল্য একেবারেই কম কিন্তু মূল্যমানের দিক হইতে রৌপ্য হইল মধ্যম পর্যায়ভুক্ত এই কারণেই রৌপ্য দান করার কথা বলা হইয়াছে 

 

প্রচলিত ভুল ধারণা

এক শ্রেণীর মানুষের ধারণা হইল, আক্বীক্বার জানোয়ারের হাড় ভাঙ্গা যাইবে না এবং জবাই করার পর উহার মাথা হাজামকে দিয়া দিতে হইবে এই ধারণা সঠিক নহে। মাঝে মাঝে এই সকল নিয়ম-প্রথার বিপরীতও করা উচিত যেন মানুষ উহাকে জরুরী মনে করিতে না পারে আবার কেহ কেহ মনে করে, আকীকার গোস্ত দাদা নানা-নানী খাইতে পারিবে না এই ধারণাও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন 

সমাজের আরেকটি কু-প্রথা হইল- বাচ্চার মাথার চুল মুণ্ডানোর উদ্দেশ্যে যখন তাহার মাথায় খুর রাখা হইবে, ঠিক সেই মুহূর্তেই আকীকার জন্তু জবাই করিতে হইবে এই ধারণাও সঠিক নহে। 

 আকীকার উপলক্ষে লেন-দেন

আক্বীকৃার ক্ষেত্রে আরেকটি প্রচলিত রুছম হইল- নবজাতকের মাথা মুণ্ডানোর সময় খান্দানের সকল আত্মীয়-স্বজন জড়ো হয় এবং সম্মুখে রক্ষিত পাত্র বা থলিতে নগদ টাকা-পয়সা দিতে থাকে এবং সকল হাদিয়া নাপিতের হক মনে করা হয় আর স্বাভাবিকভাবে প্রদত্ব এই টাকা-পয়সাকে করজ মনে করা হয় আর এই করজও এমন যাহা যেকোন সময় পরিশোধ করিলে হইবে না, বরং দাতাদের বাড়ীতে যখন এই ধরনের কোন অনুষ্ঠান হইবে তখনই উহা আদায় করিতে হইবে এই লেন-দেনকে এমনই আবশ্যক মনে করা হয় যে, যথাসময় নিজের হাতে টাকা-পয়সা না থাকিলে ধার-করজ এমনকি সূদের টাকা। লইয়া হইলেও উহা আদায় করিতেই হইবে অথচ সূদ গ্রহণ বা প্রদান উভয়ই শরীয়তে নিষিদ্ধ। 

মোটকথা, এই জাতীয় লেন-দেনে বিবিধ ক্ষতির দিক রহিয়াছে। যেমন দেওয়ার সময়ই নিয়ত খালেছ না হওয়া কারণ, ইহা নিশ্চিত যে, অনেক সময় তওকীফ না থাকিলেও সকলের নিকট লজ্জিত হওয়া দুর্নামের ভয়ে বাধ্য হইয়াই কিছু না কিছু দিতে হয় অর্থাৎ- কষ্ট করিয়া দিতে পারিলে সুনাম-সুখ্যাতি লাভ হইবে শরীয়ত ইহাকেই নিষেধ করিয়াছে সুনাম অর্জনের জন্য মাল খরচ করা হারাম। 

অনুরূপভাবে গ্রহীতাদের পক্ষে উহা ক্ষতির কারণ হইল- কেহ কোন বস্তু দিলে উহা তাহার অনুগ্রহই বটে, কিন্তু কাহারো নিকট হইতে জবরদস্তি কোন অনুগ্রহ আদায় করা হারাম অথচ এই ক্ষেত্রে উহা জোরপূর্বক আদায় করা হইতেছে কারণ, মানুষ দুর্নামের ভয়েই উহা দিয়া থাকে আর যাহারা সন্তুষ্টিচিত্তে দিয়া থাকে তাহাদের উদ্দেশ্যও থাকে সুনাম অর্জন- যা কোরআন হাদীসে পরিষ্কার নিষেধ করা হইয়াছে সুতরাং যদি কিছু দিতেই হয় তবে উহার উত্তম নিয়ম হইল, অন্য কোন সময় গোপনে দিয়া দিবে 


আকীকা উপলক্ষে নানার বাড়ীর পক্ষ হইতে পোশাক খাবার প্রদানের প্রথা

বাচ্চার আক্বীকা উপলক্ষে তাহার নানার বাড়ীর পক্ষ হইতে কিছু পোশাক খাবার প্রেরণের একটি প্রথা চালু আছে। এই ক্ষেত্রেও প্রধান মন্দের দিকটি হইল- উপস্থিত সময়ে নানাদের সঙ্গতি না থাকিলেও প্রথা অনুযায়ী পোশাক খাবার অবশ্যই পাঠাইতে হইবে অর্থাৎ একটি অপ্রয়োজনীয় গোনাহের কাজ এমন গুরুত্বের সহিত সম্পন্ন করা হয় যে, এই ক্ষেত্রে শরীয়তের কোন বিধান লংঘন হইতেছে কি-না তাহাও লক্ষ্য করা হয় না আর এই দেওয়া-নেওয়ার ক্ষেত্রেও নিয়ত থাকে সেই সুনাম-সুখ্যাতি এবং অহংকার প্রদর্শন- যাহা পরিষ্কার হারাম হওয়ার বিষয়টি বার বার আলোচনা করা হইয়াছে 

কেহ কেহ বলিয়া থাকে, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ছেলায়ে রহমী ভাল ব্যবহার করাও এবাদত উহার জবাব হইল- যদি ছেলায়ে রহমী করাই উদ্দেশ্য থাকে, তবে কেবল নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানের সময়ই তাহাদের বাড়ীতে উহা লইয়া যাওয়া হয়, আর অন্য সময় যখন তাহারা ভাতে কাপড়ে কষ্ট পায় তখন তাহাদের কোন খোঁজ-খবরও লওয়া হয় না- উহার কারণ কি

 

15| Lrbv I GB m¤ú‡K© wKQz K_v

* শিশুদের মধ্যে কিছুটা সহনশক্তি পয়দা হওয়ার পরই গোপনে হাজাম ডাকাইয়া খৎনা করিয়া দিবে 

* ঘা শুকাইয়া যাওয়ার পর গোসল করাইয়া দিবে 

* যদি সঙ্গতি থাকে এবং নিজের উপর কোন প্রকার চাপ অনুভব না হয় তবে কোন প্রকার সুনাম-সুখ্যাতির নিয়ত না করিয়া আল্লাহ পাকের শোকর আদায়ের উদ্দেশ্যে কিছু ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজন এবং দুই-চারিজন মিসকীনকে খাবারের নিমন্ত্রণ করিবে তবে এই নিয়মও বার বার জারী রাখিবে না অন্যথায় উহাও রুসমে পরিণত হইবে  

* খৎনা উপলক্ষে চিঠির মাধ্যমে কিংবা লোক পাঠাইয়া মানুষ জড়ো করা সুন্নতের খেলাফ ! মুসনাদে আহমাদ গ্রন্থে হযরত হাছান (রাঃ) হইতে বর্ণিত যে, হযরত ওসমান বিন আবিল আস (রাঃ)-কে কেহ খৎনা উপলক্ষে দাওয়াত করিলে তিনি দাওয়াতে যাইতে অস্বীকার করিলেন পরে উহার কারণ জিজ্ঞাসা করা হইলে তিনি বলিলেন, রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জামানায় আমরা (খৎনার দাওয়াতে) যাইতাম না 

উপরোক্ত বিবরণ দ্বারা ইহা জানা গেল যে, যেই বিষয়টি জানাজানি করার ব্যাপারে শরীয়ত কোন গুরুত্ব দেয় নাই; সেই বিষয়ে লোকজনকে জড়ো করা সুন্নতের খেলাফ অথচ আজকাল এই খৎনা উপলক্ষে বিশেষ গুরুত্বের সহিত বহু নিয়ম-প্রথা পালন করা হইতেছে।। 

হযরত ওসমান বিন আবিল আস (রাঃ) কর্তৃক খতনার দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করার ঘটনা দ্বারা ইহা জানা গেল যে, ছাহাবায়ে কেরাম এই দাওয়াত পছন্দ করিতেন না ! উহার কারণ হইল, কোন বিষয়ে মানুষকে আহবান করার অর্থ হইল বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া তো শরীয়ত যেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয় নাই উহাকে গুরুত্ব দেওয়ার অর্থ হইল দ্বীনের মধ্যে নূতন নিয়ম প্রবর্তন করা 

এই কারণেই হযরত ওমর (রাঃ) লোকজনকে চাশতের নামাজে মসজিদে জড়ো হইতে দেখিয়া উহাকে বেদআত আখ্যা দিয়াছিলেন উহার ভিত্তিতেই ফেকাহ শাস্ত্রবিদগণ নফল নামাজের জামায়াতকে মাকরূহ বলিয়াছেন


খতনার দাওয়াত 

একবার আমার এক আপনজন তাহার ছেলের খৎনা উপলক্ষে আমাকে দাওয়াত করিয়া বলিল, আপনাকে অবশ্যই যাইতে হইবে সাধারণতঃ মানুষ আপনজনদের উপর এইরূপ জোর করিয়া থাকে আমি তাহাকে বলিলাম, এছলাহুর রুছুম, কিতাবে আমি খৎনার দাওয়াতের বিপক্ষে মত প্রকাশ করিয়াছি, সেখানে হাদীসও লিখিয়াছি, সুতরাং এক্ষণে আমি নিজেই কেমন করিয়া খতনার দাওয়াত গ্রহণ করিব? অনেকে হয়ত বলিবে যে, স্বজনদের সঙ্গে এইরূপ আচরণ বড়ই নির্মম কিন্তু বাস্তব অবস্থা হইল- (শরীয়তের হুকুম মান্য করিতে গিয়া) প্রিয়জনদের সঙ্গেও এইরূপ আচরণ করিতে হয়  

একবার এক শিয়ার বাড়ীতে ছেলের খৎনা উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় অনুষ্ঠান হইতে সে আমার জন্যও খাবার পাঠাইলে আমি এই মর্মে লিখিত মন্তব্যসহ খাবার ফেরৎ পাঠাইলাম যে, আমাদের নিকট সুন্নত তরীকার যাবতীয় খাবারের তালিকা মওজুদ আছে; কিন্তু তোমার প্রেরীত খাবার এই তালিকা বহির্ভূত সুতরাং এই বিষয়ে আমাকে অপারগ মনে করিবে আল্লাহর মেহেরবানীতে আমার পক্ষ হইতে এইরূপ জবাব পাওয়ার পর সে উহার কোন প্রতিবাদ করে নাই আমার নিজের আত্মীয়-স্বজনদের পক্ষ হইতেও এই জাতীয় খাবার আসিলে আমি উহা গ্রহণ করি না

একটি ঘটনা

একবার রামপুরের এক বিত্তবান মাওলানা সাহেব ছেলের খতনা উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করিলেন অনুষ্ঠানে তিনি বহু গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আমাকেও দাওয়াত করিলেন যথাসময় আমিও উহাতে শরীক হওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হইলাম এই ঘটনার পূর্বেই আমিএছলাহুর রুছুম,  কিতাবটি লিখিয়াছিলাম ( কিতাবে খৎনার দাওয়াতের বিপক্ষে মত প্রকাশ করা হইয়াছে) 

দাওয়াতে রওনা হওয়ার পর আমি মনে মনে এইরুপ স্থির করিলাম যে, আমি প্রথমে কাজী এনামুল হক সাহেবের বাড়ীতেই উঠিব এবং (কোশল হিসাবে) উহার কারণ এই ব্যাখ্যা করিব যে, মজলিশে আমার মুরুব্বী শ্রেণীরও অনেকে উপস্থিত থাকিবেন। সুতরাং সেখানে গেলে আমাকে তাহাদের আদব রক্ষা করিয়া চলিতে হইবে আর যাহারা আমার ছোট তাহারা আমার আদব রক্ষায় ব্যস্ত থাকিবে ফলে না আমার আরাম হইবে, না তাহাদের আরাম হইবে অর্থাৎ সকলকেই একটা বিব্রতকর অবস্থার শিকার হইতে হইবে অনুষ্ঠানে হযরত মাওলানা মাহমুদুল হাসান এবং হযরত মাওলানা খলীল আহমদও উপস্থিত ছিলেন  

এশার নামাজের সময় আমি শুনিতে পাইলাম যে, আমভাবে সকলকে ডাকিয়া ডাকিয়া জড়ো করা হইতেছে আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, এইভাবে ডাকা হইতেছে কেন? আমাকে বলা হইল- আজ তো খান্দানের সকলকেই দাওয়াত করা হইয়াছে, এই কারণেই সকলকে ডাকা হইতেছে আমি মনে মনে শঙ্কিত হইলাম যে, অবস্থা বিশেষ সুবিধার নহে। ইতিপূর্বে আমি নিজেইএছলাহুর রুছুম” কিতাবে এই জাতীয় দাওয়াতে অংশগ্রহণ নিষেধ করিয়াছি এখন আমি নিজেই যদি উহাতে শরীক হই তবে আমার কিতাবে মানুষের কিছুই উপকার হইবে না। এই কারণেই আমি চিন্তা করিলাম, আমি কাজী এনামুল হক সাহেবের বাগানে চলিয়া যাইব এবং মজলিশে অংশগ্রহণ করা হইতে বাঁচিয়া থাকিব আর আমি যে বাগানে থাকিতে পারি ইহা কেহ কল্পনাও করিবে না অবশ্য ইহা সত্য যে, এই ক্ষেত্রে আমাকে বহু অসুবিধার সম্মুখীন হইতে হইবে কিন্তু তবুও উহাতে অংশগ্রহণ করা আমার পক্ষে কিছুতেই সঙ্গত হইবে না 

এই সফরেও আমার লেখার সরঞ্জাম সঙ্গে ছিল আমি উহা লইয়া শেষ রাতের দিকে বাগানে চলিয়া গেলাম। পরে লোকেরা আমাকে আশপাশের পথে পথে তন্ন তন্ন করিয়া তালাশ করিয়াও আমার সন্ধান করিতে পারে নাই অবশেষে ট্রেন আসার সময় হইলে আমি তথা হইতে বাহির হইয়া ষ্টেশনে চলিয়া আসিলাম এখানে মাওলানা মুঈনুদ্দীন সাহেবের সঙ্গে আমার সাক্ষাত হয় তিনিও অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসিয়াছিলেন। আমাকে দেখিয়া তিনি বলিতে লাগিলেন, আমি তো তোমার সঙ্গে ঝগড়া করিতে আসিয়াছিলাম (এই কথা তিনি এই কারণে বলিলেন যে, ইতিপূর্বে তিনিও একবার আমাকে খৎনার অনুষ্ঠানে দাওয়াত করিয়াছিলেন, কিন্তু আমি তাহার দাওয়াত গ্রহণ করি নাই।) তিনি বলিতে লাগিলেন, আমি মনে মনে এই চিন্তা করিয়া আসিতেছিলাম যে, তুমি আমাদের মত গরীবদের দাওয়াত ফিরাইয়া দাও, আর বিত্তবানদের দাওয়াতে শরীক হও কিন্তু অনুষ্ঠানে তোমাকে না পাইয়া মনের ঝাল মনেই রহিয়া গেল ঝগড়া আর করা হইল না আমি চলিয়া আসিলাম যাক, তুমিই যখন উহাতে শরীক হও নাই; সুতরাং আমিও দাওয়াতে শরীক হইব না 

এই সময় একটি মজার কাণ্ড ঘটিয়া গেল আমি তখন সুরা নমল পাঠ করিতেছিলাম উহাতে হুদহুদ পাখীর ঘটনা বর্ণনা করা হইয়াছে আমার এক দোস্তকে ডাকিয়া বলিলাম, পবিত্র কোরআনেও আমার আজকের এই ঘটনার নজির রহিয়াছে যেমন, এরশাদ হইয়াছে, 

 

Tarbayat-e-aulad

Tarbayat-e-aulad

যার অর্থঃ সুলায়মান পক্ষীদের খোঁজ-খবর লইলেন অতঃপর বলিলেন, কি হইল; হুদহুদকে দেখিতেছি না কেন? নাকি সে অনুপস্থিত? আমি অবশ্যই তাহাকে কঠোর শাস্তি দিব কিংবা জবাই করিব অথবা সে উপস্থিত করিবে উপযুক্ত কারণ 

মোটকথা, সেখানে যেমন হুদহুদ পাখীর সন্ধান শুরু হইয়াগিয়াছিল, এখানেও আমাকে খোঁজাখুঁজি শুরু হইয়া গিয়াছিল আমাদের আঞ্চলিক ভাষায় হুদহুদ বলা হয় বেওকুফকে, এদিকে আমিও বেওকুফই বটে হুদহুদ পাখী হযরত সুলায়মান (আঃ)-এর লশকর হইতে গায়েব হইয়া গিয়াছিল এখানে আমিও সকলের সমাগম হইতে গায়েব হইয়া গিয়াছি হুদহুদের শাস্তি নির্ধারণ হইয়াছিল আজাব কিংবা জবাই এখানে আমারও তিরস্কার করা হইয়াছে, ইহাও নফসের জবাই বটে। 

হুদহুদ পাখী হযরত সুলাইমান (আঃ)-কে এমন একটি বিষয়ের সংবাদ দিয়াছিল, যাহা সম্পর্কে তিনি অবগত ছিলেন না। ইহা দ্বারা এই বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া গেল যে, নাকেছ বা ছোটদের পক্ষেও কোন ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য ঘটনা সম্পর্কে অবগত থাকা এবং কামেল বড়দের পক্ষেও সেই বিষয়ে কোন এলেম থাকা- ইহা অসম্ভব নহে। অনুরূপভাবে সাধারণ মানুষের জন্য কোন ক্ষতিকর বিষয় সম্পর্কে যদি আমার ধারণা থাকে এবং আমাদের মহান বুজুর্গানে দ্বীন যদি সেই সম্পর্কে অবগত না থাকেন তবে ইহাও কোন অসম্ভব বিষয় নহে কালামে পাকে আলোচিত ঘটনায় যেমন, নারী বিলকিসের রাজত্ব ছিল এখানেও নারীদের কর্তৃত্বের ফলেই এই সকল রুসম-রেওয়াজ চালু হইয়াছে 

মোটকথা, ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য এলেম কাহারো বেশী হওয়া ইহা কোন কৃতিত্বের বিষয় নহে এই জাতীয় খুঁটি-নাটি বিষয়ের এলেম বড়দের তুলনায় ছোটদেরও বেশী হইতে পারে 


বালেগ হওয়ার পর খতনা করা

বালেগ হওয়ার পর খতনা করার অনুমতি আছে তবে শর্ত হইল (চামড়া শক্ত হইয়া যাওয়ার কারণে যেই অতিরিক্ত ব্যথা হইবে উহা) সহ্য করার শক্তি থাকিতে হইবে খতনার প্রয়োজনে তাহার শরীর দেখা এবং হাত লাগানো জায়েজ আছে। (তবে যাহাদের এই কাজে কোন প্রয়োজন নাই তাহারা দেখিতে পারিবে না) কোন কোন সময় দেখা যায় বালেগ হওয়ার কাছাকাছি বয়সে খৎনা করা হয় এই বয়সের ছেলেদের খৎনার সময় খতনার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিগণ ব্যতীত অন্য কেহ তাহার গুপ্তস্থান দেখা হারাম। অথচ এই সময় অনেকেই নির্দ্বিধায় তাকাইয়া দেখে এবং গোনাহগার হয়। 


খৎনা উপলক্ষে প্রদত্ত দ্রব্যের মাসআলা

খৎনা বা এই জাতীয় অনুষ্ঠানে বাচ্চাদেরকে যাহাকিছুই দেওয়া হয়, প্রকৃত অর্থে উহা কিন্তু বাচ্চাকে দেওয়া হয় না। বরং বাচ্চাকে উপলক্ষ করিয়া তাহার মাতাপিতাকেই দেওয়া হয়। সুতরাং মাতাপিতাকেই সকল দ্রব্যের মালিক মনে করা হইবে তাহারা নিজেদের ইচ্ছা মতই উহা ব্যবহার করিতে পারিবেন। অবশ্য কেহ যদি নির্দিষ্টভাবে বাচ্চাকেই উহা দিয়া থাকে তবে এই ক্ষেত্রে তাহাকেই উহার মালিক মনে করিতে হইবে। বাচ্চা যদি বুঝমান হয়, তবে উহার মালিক হওয়ার জন্য সে নিজে উহা গ্রহণ করাই যথেষ্ট হইবে আর বাচ্চা যদি নিজে উহা গ্রহণ না করে বা গ্রহণ করার উপযুক্ত না হয় তবে তাহার পক্ষ হইতে তাহার পিতা এবং পিতা না থাকিলে দাদা গ্রহণ করিলেই বাচ্চা উহার মালিক হইয়া যাইবে যদি বাপ-দাদা কেহই না থাকে তবে সে যেই ব্যক্তির প্রযত্নে প্রতিপালিত হইতেছে সে গ্রহণ করিবে।


পরবতী অংশ পড়তে এখানেক্লিক করুন

 

 


No comments

Powered by Blogger.