Tarbayat-e-aulad (ইসলামের দৃষ্টিতে সন্তান পালন) - part -4। Islamic Media Blog
![]() |
Tarbayat-e-aulad - part -4 |
Ziweq‡Z
AvIjv`
Bmjv‡gi
`„wó‡Z mšÍvb cÖwZcvjb
g~j
D`y©t nvKxgyj D¤§Z †gvRv‡Ï‡` wgjøvZ
nhiZ
gIjvbv Avkivd Avjx _vbex (int)
m~PxcÎ
1| †Q‡j-‡g‡q‡`i ¯^fve bó
nIqvi KviY
2| Qzwii Af¨vm GK w`‡b nq
bv
3| ÎæwUc~Y© cÖwZcvj‡Ki
cwiYwZ
4| mšÍv‡bi GQjvn
5| mšÍv‡bi fiY-‡cvlY
6| mšÍv‡bi weevn I wcZvi
KZ©e¨
7| Ziweq‡Zi Rb¨ K‡VviZvi
Avek¨KZv
8| kvw¯Í †`Iqvi DËg c×wZ
9| AwaK kvw¯Í I K‡VviZv
10| iv‡Mi mgq kvw¯Í w`‡e bv
11| Aeva¨ mšÍvb
12| †c‡ikvbxi KviY I
cÖwZKvi
13| ev”Pv‡`i Ab¨vq Avãvi
14| AwZwi³ †¯œn wVK b‡n
15| cyiæl‡`i `vwqZ¡
1| †Q‡j-‡g‡q‡`i ¯^fve bó nIqvi KviY
যেই সকল কারণে ছেলেমেয়েদের স্বভাব নষ্ট হয় উহার একটি হইল অতিরিক্ত আহলাদ। অনেক সময় দেখা যায়- বাচ্চারা হয়ত কাহাকেও গালি দিতেছে, অন্যায়ভাবে কাহাকেও আঘাত করিতেছে, কিন্তু অতিরিক্ত আদর-আহলাদের কারণেই তাহাদেরকে কিছুই বলা হইতেছে না। কিছু বলা তো দূরের কথা, কোন কোন মহিলা এইরূপ বাসনাও করে যে, আমার ছেলে যেন অপরকে গালি দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করিতে পারে।
কোন এক মহিলা এইরূপ মান্নত করিয়াছিল যে, আমার যদি একটি ছেলে হয় এবং সে যদি মায়ের নামে গালি দিয়া ঘরে ফিরিয়া আসিতে পারে, তবে আমি আল্লাহর ওয়াস্তে পাঁচ টাকার মিষ্টি বিতরণ করিব|
এক্ষণে ভাবিয়া দেখুন; খোদ মায়ের চরিত্রই যদি এইরূপ হয় তবে তাহারা কেমন করিয়া সন্তানকে গালি দেওয়া হইতে বাধা দিবে? অনুরূপভাবে কোন কোন পিতা সন্তানের দ্বারা নিজের দাড়ি টানায় এবং নিজেকে গালি দেওয়ায় । এই ছেলেমেয়েরাই যখন বড় হয় তখন তাহারা নিজেদের পিতামাতাকে গালির মাধ্যমেই সম্বোধন করে। কোন কোন ছেলে তো এমন জল্লাদের মত আচরণ করে যে, স্ত্রীর মোকাবেলায় নিজের মাতাকে লাঠি দ্বারা পর্যন্ত আঘাত করে। এই সময় যেন শৈশবের সেই সকল বাসনা মাটির সঙ্গে মিশিয়া যায় ।
আমাদের এলাকার এক উস্তাদ সম্পর্কে এইরূপ শোনা গিয়াছে যে, তিনি নিজের ছাত্রদেরকে অপর এক উস্তাদের নিকট পাঠাইয়া বলিতেন যে, তাহার মক্তবের বিছানা ও চাটাই ছিড়িয়া দিয়া আসিবে। এক্ষণে বলুন, যেই বাচ্চাদের শৈশব এইরূপ অবস্থায় কাটিবে, বড় হওয়ার পর কি তাহাদের চরিত্র সংশোধন করা সম্ভব হইবে? অথচ এই সকল বিষয়ের প্রতি মোটেও লক্ষ্য করা হইতেছে না। বরং অনেকেই বলিয়া থাকে, বাচ্চাদের স্বভাব তো কিছুটা ঔদ্ধত্যপূর্ণ হইবেই, কিন্তু প্রকৃত পক্ষে ঔদ্ধত্য ও দুষ্টামি এক জিনিস নহে।
মানুষের স্বভাব হইল, সে যাহাদেরকে দেখে এবং যাহাদের সঙ্গে চলা-ফিরা করে তাহাদের স্বভাব-চরিত্রই নিজের মধ্যে ধারণ করে। অনেকে বলিয়া থাকে, বয়স হইলে কি আর বাচ্চাদের এই স্বভাব থাকিবে? তখন নিজের সংশোধন নিজেই করিয়া লইবে। এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। বরং প্রকৃত অবস্থা হইল বাচ্চারা যখন কথাও বলিতে পারে না, সেই কচি বয়সেও তাহারা যাহা দেখে ও শোনে উহাই তাহাদের মানসপটে অঙ্কিত হইয়া থাকে। বড় হওয়ার পর উহাই তাহাদের চরিত্রে প্রকাশ পায়।
2| Qzwii Af¨vm GK w`‡b nq bv
হাদীসে পাকে বর্ণিত আছে, রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেনঃ চোরের উপর আল্লাহ পাক লা'নত বর্ষণ করুন যে, সে একটি ডিম চুরি করে আর উহার ফলে তাহার হস্ত কর্তন করা হয় ।
উপরোক্ত হাদীসের উপর প্রশ্ন উঠে যে, আসলেই কি একটি ডিম
বা একটি রশি চুরি করার দায়ে হাত কাটা হয়? হাত কাটার নেছাব তো উহা হইতে আরো বেশী (অর্থাৎ দশ দেরহাম)।
আমাদের উস্তাদ বলিতেন, রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপরোক্ত বক্তব্যের অর্থ হইলঃ সাধারণ চুরির মাধ্যমেই বড় ধরনের চুরির অভ্যাস পয়দা হয়। এক পয়সা দুই পয়সা করিয়া চুরি করিতে করিতে সাহস বৃদ্ধি পাইয়া যখন উহা অভ্যাসে পরিণত হয়, তখনই সে বড় ধরনের চুরি করে এবং পরিণতিতে হাত কাটার মত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ এক সময় যেই ছেলেটি একটি ডিম কিংবা ক্ষুদ্র একটি রশি চুরি করিত, পরবর্তিতে শৈশবের সেই স্বভাবের সূত্র ধরিয়াই বড় ধরনের চুরি শুরু করে এবং তাহার উপর হাত কাটার হুকুম জারী হয়- ইহাই বর্ণিত হাদীসের মূল বক্তব্য।
3| ÎæwUc~Y© cÖwZcvj‡Ki cwiYwZ
আজকাল পিতামাতারা যেন নিজের সন্তানকে কসাই'র মত প্রতিপালন করে। অর্থাৎ কসাই যেমন তাহার পশুকে খুব ভালভাবে খাওয়াইয়া মোটা-তাজা করার পর ছুরির নীচে জবাই দেয়। অনুরূপভাবে আজকালকার পিতামাতাগণ তাহাদের সন্তানদিগকে ভাল ভাল খাওয়া-দাওয়া এবং আরাম-আয়েশের মধ্যে প্রতিপালন করে বটে, কিন্তু (দ্বীনের তা'লীম-তরবিয়ত ও শিক্ষাদিক্ষার অভাবে ) পরবর্তীতে তাহারা জাহান্নামের গ্রাসে পরিণত হয়। আর এই ছেলেমেয়েদের কারণেই তাহাদের পিতামাতাকে আজাবের শিকার হইতে হয়। কারণ তাহাদের ত্রুটির কারণেই দুনিয়াতে তাহারা নামাজ-রোজা হইতে বে-খবর ছিল ।
কোন কোন মাতাপিতাকে এইরূপ আত্মপ্রসাদ লাভ করিতে দেখা যায় যে, আমরা তো বেশ নামাজের পাবন্দ। অথচ তাহাদের এই খবর নাই যে, কেয়ামতের দিন নিজের বেনামাজী সন্তানদের সঙ্গে তাহাদিগকেও জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হইবে।
হাদীসে পাকে এরশাদ হইয়াছেঃ তোমাদের মধ্যে প্রতিটি ব্যক্তিই দায়িত্বশীল ও জিম্মাদার, সকলকেই তাহার অধীনস্তদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হইবে ।
4| mšÍv‡bi GQjvn
বাচ্চাদের এছলাহ ও সংশোধনের জন্য আল্লাহওয়ালাদের ছোহবতও আবশ্যক । তাহাদের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করিয়া দিবে যে, এই সময় অমুক মসজিদে অমুক বুজুর্গের নিকট গিয়া বসিবে । কিন্তু পরিতাপের বিষয় হইল আজকাল এই সকল বিষয়ের প্রতি মোটেও লক্ষ্য করা হয় না। খেলা-ধুলা এবং আমোদ-ফুর্তি করার জন্য সময় বাহির করা যায় কিন্তু নিজের আমল-আখলাক দুরস্ত করার জন্য সময় পাওয়া যায় না।
যাহাই হউক, শহরে বা আশেপাশে যদি কোন আল্লাহওয়ালা বুজুর্গ পাওয়া না
যায় তবে ছুটির সুযোগে তাহাদেরকে কোন বুজুর্গের খেদমতে পাঠাইয়া দিবে। এই সময় তাহাদের কোন কাজ থাকে না। দিনরাত কেবল ঘুরিয়া-ফিরিয়া সময় নষ্ট করে।
সন্তানকে নসীহত করার বিষয়টি বড় সূক্ষ্ম । নসীহত সাধারণতঃ দুইটি পক্ষ হইতেই হইয়া থাকে। হয় উস্তাদের পক্ষ হইতে, কিংবা পিতার পক্ষ হইতে। অন্য সকলের নসীহতের তুলনায় পিতার নসীহতের মধ্যে বেশ কিছুটা ফরক আছে। উস্তাদ হয়ত বিধিবদ্ধ নসীহত করিয়াই নিজের দায়িত্ব সম্পন্ন করিবেন।
পক্ষান্তরে পিতা কেবল নিয়মের নসীহত করিয়াই নিজের দায়িত্ব সম্পন্ন হইয়াছে বলিয়া মনে করিতে পারিবেন না। বরং সন্তানকে নসীহত করার সময় তিনি এমন এমন উপায় অবলম্বন করিবেন এবং এমনভাবে কথা বলিবেন যেন তাহার মনের গভীরে গিয়া উহা ক্রিয়া করে। কারণ, তিনি আন্তরিকভাবেই ইহা কামনা করেন যেন তাহার সন্তানের এছলাহ ও সংশোধন হইয়া যায় এবং ইহাতে কোন প্রকার কমী-কুসুরী ও ত্রুটি না থাকে। এই ক্ষেত্রে পিতা যদি কোন কঠিন বিষয়ের প্রতিও ছেলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে, তবে উহাও এমন সহজভাবে উপস্থাপন করা হয় যেন ছেলে সহজেই উহার উপর আমল করিতে পারে। সন্তানের প্রতি অকৃত্রিম শফকত ও মোহাব্বতের কারণেই পিতার পক্ষে এতটা আন্তরিক হওয়া সম্ভব হয়।
মোটকথা, শফকত ও মোহাব্বতের সঙ্গে যখন তরবিয়ত করা হইবে, তখনই সম্ভাব্য সকল দিক ছাড় দেওয়া এবং চরম ধৈর্যের সহিত এছলাহের সহজতর মাধ্যম উপস্থাপন করা সম্ভব হইবে।
5| mšÍv‡bi fiY-‡cvlY
মানুষের সন্তান (ছেলে হউক বা মেয়ে) নিম্ন বর্ণিত দুই অবস্থার যেকোন এক অবস্থার অবশ্যই বিরাজ করিবে -
প্রথমতঃ সন্তান হয়ত মালদার বা অর্থশালী হইবে। অর্থাৎ পিতার মিরাছ পাওয়ার কারণে কিংবা অন্য কোন উপায়ে সে হয়ত সম্পদের মালিক হইয়াছে। এই অবস্থায় তাহার ভরণ-পোষণ তাহার নিজের সম্পদ হইতেই ওয়াজিব হইবে। মাতাপিতার দায়িত্ব কেবল উহার এন্তেজাম ও ব্যবস্থাপনার নেগরাণী করা।
দ্বিতীয় অবস্থা হইল- সন্তান অর্থশালী না হওয়া; আবার অর্থশালী না হওয়ার ক্ষেত্রেও দুই অবস্থা হইতে পারে। অর্থাৎ বালেগ (পনের বৎসর বয়স) হওয়া কিংবা না বালেগ হওয়া।
বালেগ হওয়ার ক্ষেত্রেও আবার দুই ধরনের সম্ভাবনা আছে। প্রথমতঃ নিজের ব্যয় নির্বাহের জন্য কামাই রোজগার করিতে পারা। এই অবস্থায় নিজের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিজের উপরই থাকিবে, মাতাপিতার উপর কোন দায়িত্ব থাকিবে না। দ্বিতীয় সম্ভাবনা হইল- কামাই-রোজগার করিতে অক্ষম হওয়া। এই অবস্থায় তাহার উপর নাবালেগের হুকুম প্রযোজ্য হইবে। নাবালেগের হুকুমের বিবরণ সামনে আসিতেছে।
সন্তান নাবালেগ হওয়ার ক্ষেত্রেও দুইটি ছুরত হইতে পারে। প্রথমতঃ তাহার পিতা জীবিত থাকা, দ্বিতীয়তঃ তাহার পিতা জীবিত না থাকা। পিতা জীবিত থাকিলে পিতার উপরই তাহার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব থাকিবে। এই ক্ষেত্রে মায়ের উপর কোন দায়িত্ব থাকিবে না। তবে শিশুকে দুধ পান করানো দ্বীনদারী ও মানবিক বিবেচনায় মায়ের উপর ওয়াজিব বলিয়া ফতোয়া দেওয়া হয় বটে, কিন্তু আইনতঃ এই বিষয়ে তাহাকে বাধ্য করা যাইবে না। তবে সন্তান যদি অপর কাহারো দুধ পান না করে তবে এই ক্ষেত্রে তাহার উপর জোর খাটানো যাইবে।
পক্ষান্তরে নাবালেগ সন্তানের পিতা যদি জীবিত না থাকে তবে মাতার উপর তাহার ভরণ-পোষণও ওয়াজিব হইবে। আর এই অবস্থায় (অর্থাৎ নাবালেগ সন্তানের পিতা জীবিত না থাকা অবস্থায়) যদি তাহার নিকটাত্মীয়গণ জীবিত থাকে, তবে এই এতীমের প্রতিপালনের দায়িত্ব সকলের উপরই বন্টন হইবে।
6| mšÍv‡bi weevn I wcZvi
KZ©e¨
প্রশ্ন : বিশেষভাবে মেয়েদের বিবাহের ব্যাপারে কোন তাকীদপূর্ণ হুকুম আছে কি-না এবং এই ক্ষেত্রে বিলম্ব করা হইলে যদি কোন গোনাহ হয় তবে উহার পরিমাণ কি, কোরআন ও হাদীসের পৃথক প্রমাণ দ্বারা উহার জবাব দিন।
উত্তরঃ বিবাহের তাকীদপূর্ণ হুকুম কোরআনেও আছে এবং হাদীছেও আছে। ঐ হুকুমে ছেলে ও মেয়ে উভয়কেই আমভাবে শামিল করা হইয়াছে। মেয়েদের বিষয়টি বিশেষভাবেও উল্লেখ আছে। কালামে পাকে এরশাদ হইয়াছে-
অর্থঃ তোমাদের মধ্যে যাহারা বিবাহহীন, তাহাদের বিবাহ সম্পাদন করিয়া দাও এবং তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যাহারা সৎকর্মপরায়ণ, তাহাদেরও। তাহারা যদি নিঃস্ব হয় তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাহাদেরকে সচ্ছল করিয়া দিবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।
আয়াতে বর্ণিত “আয়ামা“ শব্দের অর্থ হইল “বিবাহহীন” চাই কুমারী হউক কিংবা পূর্বে বিবাহ হইয়াছিল এমন। অনুরূপভাবে ঐ শব্দ দ্বারা ঐ সকল পুরুষকে বুঝানো হয় যাহাদের স্ত্রী নাই ।
হাদীস দ্বারা প্রমাণ: রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেনঃ হে আলী! তিনটি বিষয়ে কখনো বিলম্ব করিবে না। [এক] সময় হওয়ার পর নামাজ আদায় করিতে। (দুই) জানাজা প্রস্তুত হওয়ার পর উহার নামাজ আদায়ে । (তিন) উপযুক্ত পাত্র-পাত্রী যোগার হওয়ার পর বিবাহহীন ছেলেমেয়েদের বিবাহ সম্পাদনে।
রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেনঃ কাহারো সন্তান হওয়ার পর (ছেলে হউক বা মেয়ে) তাহার কর্তব্য হইল সন্তানের ভাল নাম রাখা, তাহার তা'লীম-তারবিয়তের ব্যবস্থা করা, বালেগ হওয়ার পর বিবাহের ব্যবস্থা করা। বালেগ হওয়ার পর যদি তাহার বিবাহের ব্যবস্থা করা না হয়, আর সে কোন গোনাহে লিপ্ত হয় তবে ঐ গোনাহ পিতার উপর বর্তাইবে।
আলোচিত বিবরণ দ্বারা যথাসময় ছেলেমেয়েদের বিবাহ সম্পাদনের বিষয়টি জরুরী বলিয়া সাব্যস্ত হইয়া গেল। আর জরুরী বিষয় তরক করা হইলে উহা আজাবের কারণ হইবে বটে।
শেষোক্ত হাদীস দ্বারা গোনাহের পরিমাণ সম্পর্কেও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া গেল যে, বিবাহে বিলম্ব করা হইলে সন্তানরা যেই গোনাহে লিপ্ত হইবে- চাই ঐ গোনাহ দৃষ্টি, কানের, জবানের কিংবা অন্তরেরই হউক; ঐ পরিমাণ গোনাহ পিতারও হইবে।
7| Ziweq‡Zi Rb¨ K‡VviZvi Avek¨KZv
বাচ্চাদের তা'লীম-তরবিয়তের জন্য অনেক সময় কঠোরতা ও শাসনেরও প্রয়োজন হয়। অনেক সময় দেখা যায়- কোন কথা হয়ত নরম ভাষায় বলিলে উহা বাচ্চাদের মনে কোন আছর হয় না এবং বেশী দিন স্মরণও থাকে না। অথচ ঐ একই কথা যখন ছখৃতী ও শাসনের সুরে বলা হয়, তখন উহা তাহাদের মনে স্থায়ী ক্রিয়া করে। কোন কোন ক্ষেত্রে তো দেখা যায়, কঠোরতা ব্যতীত তাহাদের এছলাহ করা সম্ভবই হয় না, এই অবস্থায় যদি কঠোরতা না করা হয় তবে উহা খেয়ানতের মধ্যেই শামিল হইবে ।
কঠোরতা করা যদি দোষণীয় হইত তবে নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্বারা কখনো এই আচরণ প্রকাশ পাইত না। অথচ ক্ষেত্রবিশেষে তিনি কঠোর আচরণও করিয়াছেন। এই কঠোরতা বৈরীতার লক্ষণ নহে, বরং ইহা মোহাব্বত ও কল্যাণকামীতারই লক্ষণ। সন্তান যখন অন্যায়-অপরাধের পথে চালিত হয় তখন স্নেহপরায়ণ পিতার সঙ্গে তাহার বিরোধ হয় এবং স্নেহবশেই পিতা তাহাকে শাসনও করেন।
এমনিভাবে পরম স্নেহপরায়না মাতার সঙ্গেও সন্তানের বিরোধ হয়। অর্থাৎ কোন কোন সময় শিশু ইচ্ছামত নিজের পছন্দের খাবার খাইতে চাহিলে মাতা স্নেহবশেই তাহাকে ঐ খাবার হইতে বিরত রাখেন এবং এই ক্ষেত্রে শিশু জিদ করিলে প্রয়োজনে তাহাকে শাসনও করেন।
উপরোক্ত দুইটি উদাহরণেই দুই ধরনের ক্ষতি দৃষ্ট হয়। একটি গুরুতর এবং অপরটি অপেক্ষাকৃত হাল্কা ও সাময়িক। মাতাপিতা নিজের সন্তানকে গুরুতর ক্ষতি হইতে রক্ষা করার উদ্দেশ্যেই অপেক্ষাকৃত হাল্কা ক্ষতির পথটি অবলম্বন করেন। আর ইহা একটি স্বীকৃত বিধান যে, দুইটি ক্ষতিকর অবস্থার সম্মুখিন হইলে অপেক্ষাকৃত কম ক্ষতির দিকটি গ্রহণ করাই বিধেয়। যেমন, সন্তান যখন বিপথগামী হইতে থাকে, তখন পিতা তাহাকে সংশোধন করার উদ্দেশ্যেই প্রহার করে। এই প্রহারও সন্তানের জন্য ক্ষতিকর ও কষ্টদায়ক বটে, কিন্তু এই ক্ষেত্রে গুরুতর ক্ষতির দিকটি হইল বিপথগামী হওয়ার ফলে সন্তানের জীবন বরবাদ হওয়া। এই কারণেই স্নেহপরায়ণ ও দূরদর্শী পিতা অপেক্ষাকৃত কম ক্ষতির দিকটি অবলম্বন পূর্বক কঠিন বিপর্যয়ের হাত হইতে সন্তানকে রক্ষা করার প্রয়াস চালান।
অনুরূপভাবে স্নেহময়ী মাতা আপন সন্তানকে তাহার চাহিদা অনুযায়ী খাবার খাইতে দেন না। এখানেও দুইটি ক্ষতির দিক সুস্পষ্ট। সন্তানকে বিবিধ উপাদেয় ও মজাদার খাবার হইতে বিরত রাখা স্থল দৃষ্টিতে ক্ষতিকরই বটে। কিন্তু এই ক্ষতি অপেক্ষাকৃত কম ও সাময়িক। আর এই ক্ষেত্রে ভয়াবহ ক্ষতির দিকটি হইল- ইচ্ছামত খাওয়ার ফলে রোগ বৃদ্ধি পাইয়া কঠিন পরিণতির শিকার হওয়া। এই কারণেই দূরদর্শী মাতা অপেক্ষাকৃত কম ক্ষতির পথ অবলম্বনপূর্বক স্বীয় আদরের সন্তানকে গুরুতর ক্ষতির হাত হইতে রক্ষা করিয়া থাকেন।
8| kvw¯Í †`Iqvi DËg c×wZ
“তা'যীর” ঐ শাস্তিকে বলা হয় যাহা ছেলেমেয়েরা অপরাধ করিলে সতর্ক করার উদ্দেশ্যে এবং পরিমিত পর্যায়ে প্রদান করা হয়। এই শাস্তিরও বিভিন্ন উপায় ও পদ্ধতি রহিয়াছে। যেমন- তিরস্কার করা, রাগ করা, কান মলিয়া দেওয়া, কড়া ভাষায় শাসাইয়া দেওয়া, আটক করিয়া রাখা, অর্থ দণ্ড দেওয়া এবং হাত বা বেত দ্বারা প্রহার করা।
বাচ্চাদের জন্য উত্তম শাস্তি হইল তাহাদের ছুটি-ছাটা বন্ধ করিয়া দেওয়া। এই শাস্তি তাহাদের উপর যথেষ্ট ক্রিয়া করিয়া থাকে। বাচ্চাদের জন্য আমি দুইটি শাস্তি নির্ধারণ করিয়া রাখিয়াছি। একটি হইল কান ধরানো (মুরাদাবাদে উহাকে মোরগ বানানো বলা হয়)। অপরটি হইল, ওঠা-বসা করা। এই শাস্তি দ্বারা চারিত্রিক এবং শারীরিক উভয়বিধ উপকার সাধন হয়।
বাচ্চাদেরকে শাস্তি দিলে আমার খুব কষ্ট হয়। নেহায়েত প্রয়োজন হইলে আমি তাহাদেরকে রশি দ্বারা প্রহার করিয়া থাকি। উহাতে হাড় ভাঙ্গিয়া যাওয়ার ভয় থাকে না। বাচ্চাদের সাধারণ অপরাধের শাস্তি হিসাবে দুইটি থাপ্পড়ই যথেষ্ট।
আসলে অপরাধীকে শাস্তি দেওয়াই মূল উদ্দেশ্য নহে। মূল উদ্দেশ্য হইল তাহার সংশোধন হওয়া। যখন ইহা জানা যাইবে যে, কঠোরতা ও শাস্তি দ্বারা বিশেষ কোন উপকার হইতেছে না, তখন নরমী ও কোমলতার মাধ্যমে এছলাহ করার চেষ্টা করিবে । কিন্তু এই ক্ষেত্রে যেই ধৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দিতে হয় উহা সহজসাধ্য নহে। কারণ, কাহাকেও অন্যায় করিতে দেখিয়া নীরবে উহা সহ্য করা সহজ বটে, কিন্তু এই ক্ষেত্রে তাহাকে বিনম্র ভাষায় তিরস্কার করা খুবই কঠিন। বিশেষতঃ অপরাধী যদি টেড়ামী করিতে থাকে তবে এই ক্ষেত্রে উহা আরো অধিক কঠিন হয়।
নিজের ঘরের ছেলেমেয়েদের কথা সকলেরই জানা আছে যে, তাহাদের এছলাহ কঠোরতার মাধ্যমে হইবে না কোমলতার মাধ্যমে হইবে। বার বার শুধু কঠোরতা করিতে থাকিলে উহা দ্বারা বিশেষ কোন ফায়দা হয় না।
আমি নিজেও মানুষের এছলাহের ক্ষেত্রে যেই কঠোরতা করিয়া থাকি, এখন হইতে আমিও উহা ত্যাগ করিব। কারণ, উহাতে কোন লাভ হয় না। এক ব্যক্তি আমাকে জিজ্ঞাসা করিল, ঘরের লোকেরা যখন অপরাধ করিতে থাকিবে তখনকি তাহাদিগকে আজাদ ছাড়িয়া দেওয়া হইবে (এবং কিছুই বলা হইবে না?) আমি বলিলাম- না, তাহাদিগকে নসীহত করিতে থাকিবে।
9| AwaK kvw¯Í I K‡VviZv
অধিক শাসন ও কঠোরতার ফল কখনো ভাল হয় না। যেই সকল ছেলেমেয়েকে উঠিতে-বসিতে লাথি-ঘুষি ও শাসনের মধ্যে রাখা হয় তাহাদের হায়া-শরম নষ্ট হইয়া যায় এবং পরে তাহারা আর কাহাকেও ভয় করে না। তাছাড়া আমরা লক্ষ্য করিয়াছি, অধিক মারধর করিলে তা'লীম-তরবিয়তের ক্ষেত্রেও বিশেষ কোন ফায়দা হয় না। বরং উহার ফলাফল খারাপই হইয়া থাকে।
অধিক প্রহার করিলে প্রথমতঃ বাচ্চাদের অঙ্গ দুর্বল হইয়া যায়। দ্বিতীয়তঃ বাচ্চারা আতঙ্ক ও ভয়ে মুখস্থ পড়াও ভুলিয়া যায় এবং মার খাইতে খাইতে অভ্যস্ত হইয়া যাওয়ার পর লজ্জা-শরম ও ভয় ভাঙ্গিয়া যায়। অতঃপর কোন শাসনই তাহার উপর আর আছর হয় না। এই পর্যায়ে নির্লজ্জতা তাহার পক্ষে এক দুরারোগ্য ব্যাধিতে পরিণত হয় এবং জীবনে আর কখনো তাহার স্বভাব হইতে এই ব্যাধি দূর করা সম্ভব হয় না।
এমন ভয়ানক শাস্তি দেওয়া ঠিক নহে যাহা বাচ্চারা সহ্য করিতে পারে না। যেমন- উত্তপ্ত রোদে দাঁড় করাইয়া রাখা বা লাঠি দ্বারা নির্দয়ভাবে প্রহার করা ইত্যাদি। অনেকে আবার কেহ অন্যায় করিল অপর কাহারো দ্বারা থাপ্পড় দেওয়ায়। কিন্তু আমি এইরূপ করিতে নিষেধ করি। এই নিয়ম ভাল নহে, উহার ফলে পরস্পরের মধ্যে দুশমনী পয়দা হয়।
এক ধরনের মাতাপিতাকে ছোট শিশুর সঙ্গেও ভিষণ রাগ করিতে দেখা যায়। বরং কোন কোন সময় তো এমনভাবে প্রহার করিতে থাকে, যেন কোন নির্দয় কসাই কোন প্রাণীকে প্রহার করিতেছে। এইভাবেই মাতাপিতারা বাচ্চাদের উপর জুলুম করিয়া থাকে। কিন্তু স্মরণ রাখিবে, পিতা হওয়ার অর্থ ইহা নহে যে, তুমি তাহার জানেরও মালিক হইয়া গিয়াছ। যদি তাহাই হইত তবে তো পিতা পুত্রকে বিক্রয়ও করিতে পারিত।
আল্লাহ পাক পিতাকে অনেক মর্যাদা দান করিয়াছেন। কিন্তু উহা এই জন্য নহে যে, সে তাহার শিশু-সন্তানের মালিক হইয়া যাইবে এবং তাহাকে কষ্ট দিতে থাকিবে। বরং শিশুর সযত্ন প্রতিপালনই তাহার কর্তব্য। তবে হাঁ, এই প্রতিপালনের উদ্দেশ্যে কোন কোন সময় তাহাকে শাস্তি দেওয়ারও প্রয়োজন হইতে পারে এবং উহার অনুমতিও দেওয়া হইয়াছে। তবে এই পরিমাণ শাস্তিই দিবে যাহা তাহার প্রতিপালন ও তরবিয়তের জন্য কল্যাণকর হইবে । উহার অতিরিক্ত শাস্তি দেওয়ার অনুমতি নাই। অর্থাৎ- এমন শাস্তি দেওয়া যাইবে না যাহা সে সহ্য করিতে পারিবে না। তা ছাড়া মাতাপিতার পক্ষ হইতে এই ধরনের কঠোরতা গোনাহ তো বটেই, সেই সঙ্গে উহা মানবতা ও স্বভাবসুলভ আচরণেরও পরিপন্থী। মাতাপিতাকে তো আল্লাহ পাক সন্তানের জন্য রহমত স্বরূপ পয়দা করিয়াছেন। সুতরাং তাহাদের পক্ষ হইতে এই ধরনের আচরণ প্রকাশ পাওয়ার অর্থ হইল তাহারা ন্যূনতম মানবতাভবোধও বিসর্জন দিতেছে।
‘জরবে ফাহেশ' (বা অতিরিক্ত শাস্তি) প্রদান করিতে ফেকাহ শাস্ত্রবিদগণ নিষেধ করিয়াছেন। যেই প্রহার দ্বারা শরীরে দাগ বসিয়া যায় ফকীহগণ উহাকেও জরবে ফাহেশের মধ্যে গণ্য করিয়াছেন। আর যেই প্রহার দ্বারা হাড় ভাঙ্গিয়া যায় কিংবা চামড়া ফাটিয়া যায় উহা তো আরো কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। জরবে ফাহেশ বা অতিরিক্ত শাস্তি প্রদান করিলে খোদ উস্তাদ ও মাতাপিতাকে সাজা ভোগ করিতে হইবে।
10| iv‡Mi mgq kvw¯Í w`‡e bv
রাগ ও ক্রোধ যথাসম্ভব দমন করিয়া রাখিবে । রাগের সময় হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। সুতরাং ঐ সময় কোন বিষয়ে ফায়সালা করিতে নাই। রাগের সময় মন উত্তেজিত থাকে এবং এই উত্তেজনার ক্ষতিকর দিকগুলি তখন সঠিকভাবে অনুভূত হয় না। অভিজ্ঞতা দ্বারা দেখা গিয়াছে, রাগ ও ক্রোধ দমন করা সর্বদাই কল্যাণকর হইয়াছে এবং উহা অব্যাহত রাখার পরিণতি ক্ষতিকর হইয়াছে। রাগের সময় তাড়াহুড়া করিয়া কখনো কোন কাজ করিবে না । হাদীস শরীফেও রাগের সময় কোন ফায়সালা করিতে নিষেধ করা হইয়াছে। সুতরাং রাগের সময় কখনো বাচ্চাদেরকে প্রহার করিবে না। বরং রাগ পড়িয়া যাওয়ার পর ধীর-সুস্থিরে চিন্তা-ভাবনা করিয়া শাস্তি দিবে ।
আমি নিজেও রাগের সময় কোন ফায়সালা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি না। রাগ পড়িয়া যাওয়ার পর অপরাধী শাস্তির উপযুক্ত কি-না উহা তিন-চারিবার চিন্তা না করিয়া তাহাকে শাস্তি দেই না।
একবার এক ব্যক্তি আসিয়া বলিল, অনেক সময় চাকর-নৌকরদেরকে মুখে কিংবা হাতে শাস্তি দেওয়ার সময় কিছুটা অতিরঞ্জনও হইয়া যায় এবং পরে উহার জন্য অনুশোচনা করিতে হয়। সুতরাং এমন কোন উপায় বলিয়া দিন যেন এই ক্ষেত্রে আমাদের দ্বারা কোন প্রকার বাড়াবাড়ি না হয়। আমি তাহাকে বলিলাম, উহার উত্তম উপায় হইল -
১। প্রথমেই চিন্তা করিয়া লইবে যে, চাকরকে শাসন করিতে আমি এই এই শব্দ ব্যবহার করিব এবং এই পরিমাণ শাস্তি দিব। অতঃপর এই বিষয়ে লক্ষ্য রাখিবে, যেন যাহা চিন্তা করা হইয়াছে উহার অতিরিক্ত কিছু করা না হয়।
২। এই ক্ষেত্রে সর্বোত্তম পন্থা হইল- রাগের সময় আদৌ কোন শাস্তি দিবে না। রাগ প্রশমিত হওয়ার পর চিন্তা করিবে, কি পরিমাণ শাস্তি তাহার প্রাপ্য। অতঃপর সেই অনুযায়ী শাস্তি দিবে- এই পন্থাই সকল দিক হইতে নিরাপদ। অন্যায়ভাবে কাহাকেও শাস্তি দেওয়া বড় গোনাহ, কেয়ামতের দিন এই অন্যায়-শাস্তির বদলা গ্রহণ করা হইবে।
এক মহিলা একটি বিড়ালকে শাস্তি দিয়াছিল। মহিলার ইন্তেকালের পর রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখিতে পাইলেন, সে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হইয়াছে এবং সেই বিড়ালটি তাহাকে আঁচড়াইতেছে। একটি বিড়ালকে শাস্তি দেওয়ার কারণে যদি জাহান্নামের আজাব ভোগ করিতে হয়, তবে (মানব) সন্তান তো ইনসান (বা (আশরাফুল মাখলুকাত, সুতরাং এই ক্ষেত্রে আরো কঠোর শাস্তি হওয়াই স্বাভাবিক)।
যদি অতিরিক্ত রাগ আসিয়া পড়ে তবে অপরাধীর সম্মুখ হইতে সরিয়া যাইবে কিংবা তাহাকেই সরাইয়া দিবে এবং ঠাণ্ডা পানি পান করিবে। অতিরিক্ত রাগের সময় এইরূপ চিন্তা করিবে যে, আমার উপরও তো আল্লাহর হক আছে, অথচ আমার দ্বারা অহরহ ত্রুটি-বিচ্যুতি হইতেছে। সুতরাং আল্লাহ যখন আমাকে ক্ষমা করিয়া দিতেছেন, তখন আমারও উচিত অপরাধীকে ক্ষমা করিয়া দেওয়া। অন্যথায় আমার নিকট হইতে যদি প্রতিশোধ লইতে চাহেন, তখন আমার কি উপায় হইবে?
বাচ্চাদেরকে শাসন করার সময় কখনো যদি কোন অতিরঞ্জন ও সীমা লংঘন হইয়া যায় তখন উহার প্রতিকারের উপায় হইল- শাস্তি দেওয়ার কিছুক্ষণ পর তাহাকে আদর করিয়া দিবে এবং তাহার সঙ্গে সদয় আচরণ করিবে যেন সে খুশী হইয়া যায়। যেমন -
মিরাঠের এক বিত্তবান ব্যক্তি কি কারণে তাহার চাকরকে একটি থাপ্পড় মারিয়াছিল । পরে সে নিজের অপরাধ টের পাওয়ার পর চাকরের মনোতুষ্টির জন্য তাহাকে একটি টাকা দিয়া দিল । ইহাতে সে এত খুশী হইয়াছিল যে, এই ঘটনার পর সে অন্যান্য চাকরদেরকে বলিল, আমি তো দোয়া করিতেছি যেন প্রতিদিন আমাকে একটি করিয়া থাপ্পড় মারা হয়।।
অর্থাৎ শাসনের ক্ষেত্রে যদি কখনো কোন অতিরঞ্জন হইয়া যায় তবে উহার প্রতিকারের ইহাই উত্তম উপায় । ইহাতে বাচ্চাদের আখলাকের উপরও কোন খারাপ আছর পড়ে না এবং জুলুমেরও প্রতিকার হইয়া যায় ।
11| Aeva¨ mšÍvb
এক ব্যক্তি আসিয়া বলিল, হযরত! অমুক ব্যক্তি আপনার সঙ্গে সাক্ষাত করার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার প্রস্তুতি লইতেছিল । কিন্তু এমন সময় তাহার ছেলে কিছু টাকা-পয়সা লইয়া পালাইয়া যায়, ফলে এই পেরেশানীর কারণে তাহার আর এদিকে আসা হয় নাই। আমি বলিলাম, ঐ ছেলে যদি বালেগ হয় তবে বাড়ী হইতে বাহির করিয়া দেওয়া উচিত। এই ধরনের অযোগ্য ও নালায়েক ছেলেদের অবস্থা অতিরিক্ত অঙ্গুলির মত, অর্থাৎ উহা রাখাও অস্বস্তিকর, আবার কাটিয়া ফেলাও কষ্টকর।
আমি একজন আলেমের অবস্থা দেখিয়াছি। তিনি একাধারে একজন আলেম এবং ডেপুটিকালেক্টরও ছিলেন। পেনশন লাভের পর তিনি ভাবিয়াছিলেন, এইবার নীরবে আল্লাহ, আল্লাহ করিয়া বাকী জীবনটা কাটাইয়া দিবেন। কিন্তু আল্লাহর কি মহিমা, তিনি জিকির-শোগল আরম্ভ করার পরই এক সঙ্গে তাহার দুইটি ছেলে পাগল হইয়া গেল। অতঃপর তিনি তাহার চিকিৎসার ব্যাপারে এমন পেরেশানীতে লিপ্ত হইলেন যে, অতঃপর আর নিয়মিত জিকির-শোগলে সময় দেওয়ার সুযোগ করিতে পারিলেন না।
কিন্তু আল্লাহর আরেফগণ কখনো কোন বিষয়ে পেরেশান হন না এবং নিজের জন্য কোন সুনির্দিষ্ট অবস্থা নির্ধারণ করিয়া লন না। আল্লাহ পাক যখন যেই হালাতে রাখেন সেই হালাতেই সন্তুষ্ট থাকেন। আল্লাহ যখন সুযোগ দেন তখন নীরবে জিকির-শোগলে সময় কাটান, আর যখন উহার সুযোগ না থাকে তখন যেই হালাতে রাখেন সেই হালাতেই রাজী থাকেন।
আমি তো বলি, আসল উদ্দেশ্য হইল আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি। আল্লাহর এই সন্তুষ্টি অনেক সময় নীরব-নির্জনতায় হাসিল হয় আবার অনেক সময় সৃষ্টিজীবের খেদমতের মাধ্যমেও হাসিল হয়। সুতরাং পাগল সন্তানদের খেদমতের মাধ্যমে কি তিনি ছাওয়াব লাভ করিবেন না? অবশ্যই লাভ করিবেন। বরং এই পরিস্থিতিতে ফিকির ও পেরেশানীর মাধ্যমেই তাহার তরক্কি হাসিল হইবে। এই সময় বে-ফিকির ও নিশ্চিন্ত থাকা তাহার জন্য কল্যাণকর নহে। বরং এই সময় নীরবে বসিয়া আল্লাহর জিকির করার তুলনায় অসুস্থ সন্তানদের সেবা করিলেই অধিক ছাওয়াব হাসিল হইবে। সুতরাং বান্দার পক্ষে কোন হালাতেই পেরেশান হওয়ার কোন কারণ নাই।
12| †c‡ikvbxi KviY I cÖwZKvi
মানুষের পেরেশানীর মূল কারণ হইল তাহার নিজের সৃষ্ট ধারণা। মানুষ নিজে নিজেই এইরূপ কাল্পনিক পোলাও রান্না করিতে থাকে যে, আমার ছেলে দীর্ঘ জীবি হইবে, সে লেখাপড়া শিক্ষা করিয়া এত টাকা বেতন পাইবে এবং বিপুল পরিমাণ সম্পদ সঞ্চয় করিয়া আমাদের সেবা-যত্ন করিবে ইত্যাদি। আমরা সকলেই এইরূপ দীর্ঘ পরিকল্পনার ব্যাধিতে লিপ্ত। পরে যখন বাস্তব অবস্থা আমাদের ধারণা ও পরিকল্পনার খেলাফ হইতে থাকে তখনই আমরা পেরেশানীতে লিপ্ত হই। সুতরাং পূর্ব হইতেই যদি কোন পরিকল্পনা না থাকে তবে আর পেরেশানীর শিকার হইতে হয় না। এই কারণেই আল্লাহওয়ালাগণ সর্বদা রাহাত ও শান্তিতে থাকেন। তাহাদের মনে কখনো কোন পরিকল্পনা থাকে না। আল্লাহ পাক যখন যেই হালাতে রাখেন সেই হালাতেই তাহারা সন্তুষ্ট থাকেন, সুতরাং কখনো তাহারা কোন পেরেশানীর শিকার হন না।
অনেক সময় দেখা যায়, শত চেষ্টা-তদ্বির করিয়াও ছেলেদের তা'লীম-তরবিয়ত করা সম্ভব হয় না। একবার এক পত্র লেখক আমাকে জানাইল যে, আমার ছেলে একেবারেই বখাটে হইয়া গিয়াছে, বর্তমানে আমি এই বিষয়ে অন্তহীন পেরেশানীতে আছি। অনুগ্রহপূর্বক আমাকে উহার কোন উপায় বলিয়া দিন। জবাবে আমি লিখিলাম, কোন উপায় অবশ্যই অবলম্বন করিবে বটে, কিন্তু উহার উপর ফলাফলের আশা পোষণ করিবে না। তোমার পেরেশানী দূর হওয়ার ইহাই একমাত্র পথ। অর্থাৎ সাধ্যমত চেষ্টা-তদ্বির অবশ্যই চালাইয়া যাইবে বটে, উহার উপর এইরূপ ধারণা করিবে না যে, আমার চেষ্টার ফলেই আমার ছেলের পরিপূর্ণ এছলাহ্ হইয়া যাইবে এবং আমার দিলের চাহিদা অনুযায়ী সে লেখাপড়া শিখিয়া আমার দিলের তামান্না পূরণ করিবে । এইরূপ চিন্তা ও পরিকল্পনা মন হইতে একেবারেই দূর করিয়া ফেলিবে।
আমি কোরআন-হাদীসের আলোকেই উপরোক্ত জবাব লিখিয়াছি। ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি বিবর্জিত কোন ব্যক্তি হয়ত এইরূপ লিখিত যে, এই বিষয়ে তুমি একেবারেই চেষ্টা তদ্বির বর্জন কর। কিন্তু ইহা সন্তান-বাৎসল্যতা ও স্নেহ-মমতার খেলাফ। তবে ফলাফল লাভের বিষয়টির মূল হাকীকত হইল আল্লাহ পাকের সঙ্গে যখন অন্তরের সম্পর্ক স্থাপিত হইবে তখন এই ধরনের চিন্তা ও ফিকির নিজে নিজেই দূর হইতে থাকিবে। তবে এই কথা সত্য যে, নিজের সন্তান যখন বিপথগামী হইয়া যাইবে, তখন মানসিকভাবে কিছুটা পেরেশানী অবশ্যই আসিবে, তো আল্লাহ পাক এই পেরেশানীরও বিনিময় দান। করিবেন ।
13| ev”Pv‡`i Ab¨vq Ave`vi
বাচ্চারা যদি কোন বিষয়ে জিদ করে তবে কখনো উহা পূরণ করিতে নাই। মনে কর তোমার ছেলেরা যদি বিদ্রোহীদের দলে যোগ দিয়া গোলা ছুঁড়িতে থাকে তবে কি তুমি তাহাদিগকে বাঁধা দিবে না? অব্যই বাধা দিবে। যদি তাহারা তোমার নিষেধ না মানে তবে মানিতে বাধ্য করিবে । অনুরূপভাবে এই ক্ষেত্রে কেন্ তাহাকে আদেশ মান্য করিতে বাধ্য করা হয় না?
তুমি নিজে যদি কোন অন্যায় ও মুসীবতকে খারাপ মনে কর, তবে বাচ্চাদেরকে কেন উহার অভ্যাস করিতে দাও? জিদ করিয়া তাহারা যদি সাপ চায় তবে কি তাহাদিগকে উহাই দিতে হইবে? সুতরাং আল্লাহ এবং তদীয় রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেই সকল বিষয়কে ক্ষতির (ও গোনাহ) বলিয়াছেন, (বাচ্চারা জিদ করিলেই) কি কারণে উহার অভ্যাস করানো হইতেছে? সুতরাং দেখা যাইতেছে, আল্লাহ ও রাসূলের আজমত না থাকার কারণেই এই সকল বিষয়ে অবহেলা ও ত্রুটি করা হইতেছে।
আতশবাজীর জন্য বাচ্চাদেরকে পয়সা দেওয়া হারাম। এই কাজে পয়সা দেওয়ার তোমার কোন অধিকার নাই। তোমার নিকট রক্ষিত সমুদয় সম্পদের মালিক আল্লাহ। তোমাকে কেবল উহার রক্ষণাবেক্ষণের অনুমতি দেওয়া হইয়াছে, নিজের খেয়াল-খুশি মত খরচ করার অনুমতি দেওয়া হয় নাই। তোমার নিকট রক্ষিত আল্লাহর মাল তুমি কোন কাজে ব্যয় করিয়াছ, কেয়ামতের দিন এই বিষয়ে তোমাকে জিজ্ঞাসা করা হইবে। সুতরাং বাচ্চাদেরকে আতশবাজী এবং অন্যান্য নাজায়েজ কাজের জন্য কখনো পয়সা দিবে না। যদি অন্যায়ভাবে জিদ করে তবে শাসন করিবে । না জায়েজ খেল-তামাশার নিকট কখনো দাঁড়াইতে দিবে না।
একটি বাচ্চা স্বীয় পিতামাতার নিকট বায়না ধরিল যে, আমাকে অমুক বস্তুটি আনিয়া দিতে হইবে। পিতামাতা সন্তানের মন রক্ষার্থে উহার ব্যবস্থা করিয়া দিলেন। সে আবার জিদ করিয়া বসিল যে, আমাকে অমুক খাবার বস্তু আনিয়া দিতে হইবে, এইবারও তাহার আবেদন পূরণ করা হইল। এইভাবে একে একে তাহার যাবতীয় জিদ পূরণ করার পর সে বলিতে লাগিল, ঐ আকাশের চাঁদ কেন উদিত হয়? উহাকে ঢাকিয়া ফেলা হউক। এইবার পিতামাতা অপারগ হইয়া বাচ্চার মুখে চপেটাঘাত করিয়া তাহাকে খামুশ করিয়া দিলেন, (কিন্তু শুরু হইতেই যদি বাচ্চাকে প্রশ্রয় দেওয়া না হইত, তবে সে এমন অন্যায় আব্দার করার দুঃসাহস করিতে পারিত না)।
একটি ঘটনা
ভাইসকল! আল্লাহর ওলীগণ নিজেদের সন্তানদেরকে এমন এমন অভ্যাস করাইতেন যে, উহার ফলে তাহারা অমূল্য সম্পদ লাভ করিতেন। পক্ষান্তরে তোমরা তাহাদের দ্বারা এমন অভ্যাস করাইতেছ যে, উহার ফলে দুনিয়া ও আখেরাত সবই বরবাদ হইতেছে।
এক বুজুর্গের কম বয়সী একটি শিশু-সন্তান ছিল। শুরু হইতেই তিনি স্ত্রীকে বলিয়া দিয়াছিলেন যে, সে কিছু চাহিলে উহা নিজের হাতে দিবে না। বরং তাহার প্রয়োজনের জিনিসটি নির্দিষ্ট কোন জায়গায় লুকাইয়া রাখিবে এবং সে যখন চাহিবে তখন তাহাকে বলিবে তুমি অমুক জায়গায় গিয়া আল্লাহর নিকট প্রার্থনা কর। অতঃপর সেখানে হাত বাড়াইলেই উহা প্রাপ্ত হইবে। এইরূপ অভ্যাস করাইতে পারিলে তাহার শিশু-মনেই এই বিশ্বাস বদ্ধমূল হইবে যে, আল্লাহ পাকই সকল কিছু দান করেন।
একদিন তাহার মাতা যথাস্থানে তাহার খাবার রাখিতে ভুলিয়া গিয়াছিলেন, কিন্তু শিশুটি অভ্যাস অনুযায়ী যথাসময় সেখানে গিয়া তাহার খাবার প্রার্থনা করিয়া হাত বাড়াইল এবং সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহ পাক গায়েব হইতে তাহার খাবারের ব্যবস্থা করিয়া দিলেন।
ঘটনা শুনিয়া সেই বুজুর্গ বলিলেন, আলহামদুলিল্লাহ! আমি এই দিনেরই অপেক্ষা করিতেছিলাম। অতঃপর সারা জীবন তাহার সন্তানের এই অবস্থা ছিল যে, যখনই তাহার কোন জিনিসের প্রয়োজন হইত, তখনই সে আল্লাহ পাকের নিকট প্রার্থনা করিয়া উহা প্রাপ্ত হইত। অর্থাৎ শৈশবেই তিনি নিজের সন্তানকে আল্লাহওয়ালা বুজুর্গ বানাইয়া দিয়াছিলেন ।
যাহাই হউক, আমরা এতটা না পারিলেও অন্ততঃ নিজেদের সন্তানদেরকে গোনাহের কাজ হইতে তো বিরত রাখিতে পারিব ।
14| AwZwi³ †¯œn wVK b‡n
বাচ্চাদের অতিরিক্ত স্নেহ করার ফলে অনেক সময় তাহারা নিজের জন্য মুসীবতের কারণ হইয়া দাঁড়ায়। আমি এক বাদশার বেটীকে দেখিয়াছি, তিনি নিজের সন্তানাদিকে এত অধিক মোহাব্বত করিতেন যে, রাতে তাহাদেরকে পৃথক রাখিয়া ঘুমাইতে পারিতেন না। পরে যখন বাচ্চাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাইল এবং এক পালঙ্কে সকলের সংকুলান কষ্টকর হইয়া পড়িল তখন তিনি পালঙ্ক ত্যাগ করিয়া সকলকে লইয়া মাটিতে ঢালাও বিছানা পাতিয়া শয়ন করিতে লাগিলেন। কিন্তু এইভাবেও তিনি নিশ্চিন্ত হইতে পারিলেন না, শয়নের সময় একজনের উপর হাত রাখিয়া এবং একজনের উপর পা রাখিয়া সকলকে আগলাইয়া রাখার প্রয়াস চালাইতেন। ঘুমের ফাকে ফাকে বার বার চোখ খুলিয়া দেখিয়া লইতেন সকলে ছহী ছালামতে আছে কি-না।
এক্ষণে বলুন, এই ধরনের মোহাব্বত কি আজাব ও মুসীবতের কারণ নহে? আমি আল্লাহর শপথ করিয়া বলিতেছি, ঐ ব্যক্তিই প্রকৃত শান্তিতে আছেন যিনি মাত্র একজনকে ভালবাসিয়াছেন, সেই একজন হইলেন আল্লাহ।
15| cyiæl‡`i `vwqZ¡
আমাদের পারিবারিক জীবনের দুরবস্থার অন্যতম কারণ হইল আমরা নারীদের হাতে ঘরের সকল কর্তৃত্ব ছাড়িয়া দিয়াছি। এই কর্তৃত্ব ছোট হইলেও উহার পরিণতি কিন্তু খুবই খারাপ। পরিবারের বিবাহ-শাদীর যাবতীয় নিয়ম-রুসম নারীদের ইচ্ছামতই সম্পাদন করা হয়। উহার ভয়াবহ পরিণতিতে কত ভাল ভাল পরিবার ধ্বংস হইতেছে তাহা সর্বজন বিদিত। নারীদেরকে গৃহের কত্রী বানানোর কারণেই বর্তমানে এই সকল অনিষ্ট দেখা দিতেছে। ঘরের নারীদেরকেও খুশী রাখা জরুরী বটে, কিন্তু তাহাদের অনুগত হওয়া ক্ষতিকর।
বর্তমানে আমরা ছেলেমেয়ে ও টাকা-পয়সা ইত্যাদি সবই নারীদের কর্তৃত্বে ছাড়িয়া দিয়াছি। ফলে এক দিকে আমাদের উপার্জিত অর্থ যথেচ্ছা ব্যয় হইতেছে, অন্যদিকে ছেলেমেয়েদের স্বভাব-স্বাস্থ্য সবই নষ্ট হইতেছে। অতিরিক্ত আদর-স্নেহের ফলে বাচ্চারা উশৃংখল হইয়া পড়িতেছে। এই কারণেই টাকা-পয়সা ও সংসারের যাবতীয় বিষয়-সম্পদ নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখা বাঞ্ছনীয়। এই সকল বিষয়ে নারীদের কর্তৃত্ব দেওয়াই অধপতনের মূল কারণ। এই বিষয়ে রাসূলে আকরাম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এরশাদ হইলঃ যেই জাতির নেতৃত্ব দিবে নারী, সেই জাতি কখনো সফলকাম হইতে পারিবে না।
শিশুদের চঞ্চলতা : একটি ঘটনা
শিশুদের চঞ্চলতা ও বিশৃংখল স্বভাব আদব-তমীজের খেলাফ নহে। কারণ চঞ্চলতাই তাহাদের বয়সের দাবী। বয়োবৃদ্ধ বাপ-দাদাদের মত গম্ভীর হইয়া বসিয়া থাকা তাহাদের কাজ নহে।।
হযরত মারজা মাজহার জানজানা (রহঃ) একবার নিজের এক মুরীদকে বলিলেন, তোমার বাচ্চাকে একবারও আনিয়া দেখাইলে না? হযরত মারজা যখনই এই অনুযোগ করিতেন বেচারা মুরীদ সঙ্গে সঙ্গে কোন না কোন ওজর-বাহানা দেখাইয়া দিত। কারণ মুরীদের মনে এমন আশঙ্কা ছিল যে, হযরত মারজা ছাহেব বড় নাজুক তবিয়তের মানুষ, আর বাচ্চারা সাধারণত উশৃংখল স্বভাবের হইয়া থাকে, সুতরাং তাহাকে এখানে লইয়া আসিলে এমন না হয় যে, তাহার কোন অসঙ্গত আচরণে হযরত মারজা ছাহেব মনে কষ্ট পান।
কিন্তু তিনি যখন এই বিষয়ে বার বার অনুযোগ করিতে লাগিলেন তখন মুরীদ কয়েকদিন পর বাচ্চাকে আনিয়া হযরতের দরবারে হাজির করিল । আর ইতিমধ্যেই সে বাচ্চাকে খুব ভালভাবে শিখাইয়া দিয়াছিল যে, হযরতের দরবারে গিয়া একেবারে মাথা নীচু করিয়া বসিয়া থাকিবে এবং চোখ তুলিয়া এদিক সেদিক তাকাইবে না।
শিশুটিও পিতার কথা মত ছালাম করিয়া একেবারে মূর্তির মত নীরব হইয়া বসিয়া রহিল। কোন দিকে চোখ তুলিয়াও তাকাইল না এবং মুখ হইতে একটি শব্দও উচ্চারণ করিল না। পরে মারজা ছাহেব নিজে তাহাকে কথা বলাইতে চাহিলেন কিন্তু পারিলেন না। এইবার তিনি মুরীদকে বলিলেন, তুমি তো আজও তোমার ছেলেকে লইয়া আসিলে না?
মুরীদ সবিনয়ে আরজ করিল, হযরত! এই তো আমার বাচ্চা বসিয়া আছে। হযরত ফরমাইলেন, ইহাই কি তোমার বাচ্চা? ইহাকে তো তোমার পিতা বলিয়া মনে হইতেছে। বাচ্চারা তো চঞ্চলতার সহিত লাফালাফি ও খেলা-ধুলা করে, মাথার টুপি কাড়িয়া লয়, কখনো
বক্ষের উপরে আসিয়া বসে ইত্যাদি। আর এইবাচ্চা তো তোমার বাপ বনিয়া বসিয়া আছে।
=সমাপ্ত=
No comments