Header Ads

Islamic Media Blog

নাপাকীর বর্ণনা, শরীর, কাঁপড়, আসবাব, জমিন, খাদ্যদ্রব্য, হাউজ ও নলকূপ পাক করার নিয়ম।Islamic Media Blog

 

Description-of-uncleanness&cleanness
Description-of-uncleanness&cleanness


নাপাকীর বর্ণনা

* যে সমস্ত নাপাকী চক্ষু দ্বারা দেখা যায় এবং যা থেকে শরীর, কাপড় খাদ্যবস্তু পাক রাখা উচিত তা দুই ধরনের

() নাজাছাতে গলীজা (যে নাপাকীর হুকুম শক্ত)

() নাজাছাতে খফীফা (যার হুকুম কিছুটা হালকা)

* মানুষের মলমূত্র, মানুষ প্রাণীর রক্ত, বীর্য, মদ, সব ধরনের পশুর পায়খানা, সব ধরনের হারাম পশুর পেশাব এবং পাখীর মধ্যে শুধু হাঁস মুরগির বিষ্টা হল নাজাছাতে গলীজা বা শক্ত নাপাকী

* গরু, মহিষ, বকরী ইত্যাদি সকল হালাল পশুর পেশাব, কাক চিল ইত্যাদি সকল হারাম পাখির বিষ্টা এবং ঘোড়ার পেশাব হল নাজাছাতে খফীফা

* হাঁস, মুরগি পানিকড়ি ব্যতীত অন্যান্য হালাল পাখির বিষ্টা (যেমন কবুতর, চড়ই, শালিক ইত্যাদির বিষ্টা) এবং বাদুর চামচিকার পেশাব পায়খানা পাক। এমনিভাবে মশা, মাছি, ছারপোকা এবং মাছের রক্তও পাক

* নাজাছাতে গলীজার মধ্যে যেগুলো তরল, যেমন- রক্ত, পেশাব ইত্যাদি তা এক দেরহাম (গোলাকৃত ভাবে একটা কাঁচা টাকার অর্থাৎ হাতের তালুর নীচ স্থান পরিমাণের সমান) পর্যন্ত শরীর বা কাপড়ে লাগলে মাফ আছে অর্থাৎ, তা না ধুয়ে নামায পড়লে নামায হয়ে যাবে, তবে বিনা ওজরে স্বেচ্ছায় এরূপ করা মাকরূহ। আর এক দেরহাম পরিমাণের চেয়ে বেশী হলে তা মাফ নয় অর্থাৎ, তা পাক না করে নামায পড়া জায়েয নয়

* নাজাছাতে গলীজার মধ্যে যেগুলো গাঢ় যেমন- গোবর, পায়খানা ইত্যাদি তা এক সিকি পরিমাণ পর্যন্ত (অর্থাৎ, .৮৬ গ্রাম পর্যন্ত) কাপড় বা শরীরে লাগলে মাফ কিন্তু তার চেয়ে অধিক পরিমাণ লাগলে মাফ নয়। মাফ-এর অর্থ পূর্বে বয়ান করা হয়েছে

* নাজাছাতে খফীফা শরীর বা কাপড়ে লাগলে যে অঙ্গে লেগেছে তার চার ভাগের এক ভাগের কম হলে মাফ আর পূর্ণ চার ভাগের এক ভাগ বা আরও বেশী হলে মাফ নয় জামার হাতা, কলি, কাপড়ের আঁচল, পায়জামার দুই মুহরীর প্রত্যেকটা ভিন্ন ভিন্ন অঙ্গ (অংশ) বলে গণ্য হবে

* নাজাছাত কম হোক বা বেশী হোক পানিতে পড়লে সেই পানি ন্যজাছাত বা নাপাক হয়ে যাবে- নাজাছাতে গলীজা পড়লে পানিও নাজাছাতে গলীজা হয়ে যাবে এবং নাজাছাতে খফীফা পড়লে নাজাছাতে খফীফা হবে। তবে প্রবাহিত পানিতে বা ১০০ বর্গহাত কিম্বা তার চেয়ে বড় কোন কুয়া হাউজ ইত্যাদিতে নাপাকী পড়লে তা নাপাক হবে না। তবে নাপাকী পড়ার কারণে তার রং, স্বাদ গন্ধ পরিবর্তিত হয়ে গেলে নাপাক হয়ে যাবে যে পানি দ্বারা কোন নাপাক জিনিস ধৌত করা হয় সে পানি নাপাক হয়ে যায় 

* মৃতকে যে পানি দ্বারা গোছল দেয়া হয় সে পানিও নাপাক

* রাস্তা-ঘাটে বা বাজারে যে পানি বা কাদার ছিটা কাপড়ে কিম্বা শরীরে লাগে তাতে স্পষ্টতঃ কোন নাপাক জিনিস দেখা গেলে তা নাপাক আর স্পষ্টতঃ কোন নাপাক জিনিস দেখা না গেলে নাপাক নয়। এটাই ফতুয়া; তবে মুত্তাকী লোকদের জন্য যাদের হাটে বাজারে যাওয়ার অভ্যাস কম, যারা সাধারণতঃ খুব পাক ছাফ থাকেন-তাদের শরীরে বা কাপড়ে এই পানি কাদা লাগলে তাতে কোন নাপাক জিনিস দেখা না গেলেও ধুয়ে নেয়া উচিত

* পেশাবের অতি ক্ষুদ্র ফোটা যা চোখে দেখা যায় না তার কারণে শরীর কাপড় অপবিত্র হয় না। অনর্থক সন্দেহের কারণে ধৌত করার প্রয়াজন নেই

* গাভী, বকরী দহন করার সময় যদি দুই একটি লেদা বা সামান্য গোবর দুধের মধ্যে পড়ে এবং সাথে সাথে তা বের করে ফেলা হয় তাহলে তা মাফ। কিন্তু যদি লেদা বা গোবর দুধের সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে যায়, তাহলে সম্পূর্ণ দুধ নাপাক হয়ে যাবে, তা খাওয়া জায়েয হবে না।

* উৎপন্ন ফসল মাড়াই করার সময় গরু অথবা অন্য কোন পশু তার উপর পেশাব করলে তা নাপাক হবে না। তবে মাড়াবার সময় ব্যতীত অন্য সময় পেশাব করলে নাপাক হয়ে যাবে

* কুকুর, শুকর, বানর এবং বাঘ, চিতাবাঘ প্রভৃতি হিংস্র প্রাণীর ঝুটা নাপাক খাদ্য বা পানীয় বস্তুতে মুখ লাগিয়ে ত্যাগ করলে তাকে ঝুটা বা উচ্ছিষ্ট বলা হয়

* বিড়ালের ঝুটা পাক, তবে মাকরূহ। কোন পানিতে বিড়াল মুখ দিয়ে থাকলে তা দ্বারা ওযু করবে না। অবশ্য যদি অন্য পানি না পাওয়া যায় তবে পানির দ্বারাই ওযু করবে আর দুধ বা তরকারী ইত্যাদি খাদ্য খাবারের মধ্যে মুখ দিয়ে থাকলে যদি মালিক অবস্থাপন্ন হয় তাহলে তা খাবে না- খাওয়া মাকরূহ হবে। যদি গরীব হয় তবে তার জন্য তা খাওয়া মাকরূহ নয় তবে বিড়াল যদি সদ্য ইদুর ধরে এসে তৎক্ষণাৎ কোন পানি বা খাদ্য খাবারে মুখ দেয় তবে তা নাপাক হয়ে যাবে। আর যদি কিছুক্ষণ দেরী করে নিজের মুখ চেটে চুষে পরিস্কার করে তারপর মুখ দেয় তখন নাপাক হবে না। এখন পূর্বের মাসআলার ন্যায় মাকরূহ হবে।

* যে সব প্রাণী ঘরে থাকে যেমন সাপ, বিচ্ছু, ইদুর, তেলাপোকা, টিকটিকি এবং মুরগি- যে গুলো সর্বত্র ছাড়া থাকে। এদের ঝুটা মাকরূহ তানযীহী। ইঁদুর যদি রুটির কিছু অংশ খেয়ে থাকে সেদিক দিয়ে কিছুটা ছিড়ে ফেলে অবশিষ্ট অংশ খাবে

* হালাল পশু হালাল পাখীর ঝুটা পাক। ঘোড়ার ঝুটাও পাক। যে কোন রকম পোশা পাখী যদি মরা না খায় এবং তার ঠোটে কোন রকম নাপাকী থাকার সন্দেহ না থাকে তবে তাদের ঝুটাও পাক

* হালাল পশু হালাল জানোয়ারের ঝুটা পাক। তাদের ঘামও পাক। যাদের ঝুটা মাকরূহ তাদের ঘামও মাকরূহ।

* মুসলমান অমুসলমান সব লোকের ঝুটা পাক, তবে কোন নাপাক বস্তু তার মুখে থাকা অবস্থায় পানি উচ্ছিষ্ট করলে পানি নাপাক হয়ে যাবে

* জানা অবস্থায় বেগানা পুরুষের ঝুটা - খাদ্য পানি নারীর জন্য খাওয়া মাকরূহ। অনুরূপ বেগানা নারীর ঝুটাও পুরুষের জন্য মাকরূহ। অবশ্য না জানা অবস্থায় খেয়ে ফেললে মাকরূহ হবে না


শরীর কাপড় পাক করার নিয়ম

* গাঢ় নাজাছাত (যা দেখা যায় যেমন-পায়খানা, রক্ত) শরীর বা কাপড়ে লাগলে তা পাক করার নিয়ম হল নাজাছাতকে এমনভাবে ধৌত করবে যেন দাগ না থাকে। একবার বা দুইবার ধোয়ায় দাগ চলে গেলেও পাক হয়ে যাবে তবে তিনবার ধোয়া মোস্তাহাব। তিনবার ধোয়া সত্ত্বেও এবং নাজাছাত চলে গিয়ে পরিষ্কার হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও যদি কিছু দাগ বা দুর্গন্ধ থেকে যায় তাতে কোন দোষ নেই, সাবান প্রভৃতি লাগিয়ে দাগ বা দুর্গন্ধ দূর করা ওয়াজিব নয়

* পানির মত তরল নাজাছাত শরীর বা কাপড়ে লাগলে তা পাক করার নিয়ম হল তিনবার ধৌত করা এবং প্রত্যেক বার কাপড় ভাল করে নিংড়ানো তৃতীয়বার খুব জোরে নিংড়াতে হবে। ভালমত না নিংড়ালে কাপড় পাক হবে না

* কাপড় বা শরীরে গাঢ় কিম্বা তরল নাজাছাত লাগলে ধোয়া ব্যতীত অন্য কোন উপায়ে পাক করা যায় না। পানির দ্বারা ধয়ে যেরূপ পাক করা যায় তদ্রুপ পানির ন্যায় তরল এবং পাক (যেমন গোলাপ জল, রস, সিরকা প্রভৃতি) জিনিস দ্বারাও ধুয়ে পাক করা যায় কিন্তু যেসব জিনিস তৈলাক্ত তা দ্বারা ধুলে পাক হবে।যেমন দুধ, ঘি, তেল ইত্যাদি

* ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধোয়া হলে মেশিন যেহেতু নিয়ম মত কাপড় নিংড়াতে পারে না এবং নাপাক কাপড়ের সাথে পাক কাপড় একত্রে ভিজানোর কারণে পাক কাপড়ও নাপাক হয়ে যায় অতএব ধোয়ার পূর্বে বা পরে নাপাক কাপড় গুলিকে পৃথকভাবে নিয়ম মত ধুয়ে পাক করে নিতে হবে

* ধোপাগণ সাধারণতঃ অনেক কাপড় একসাথে ভিজিয়ে রাখে। এর মধ্যে কোন কাপড় নাপাক থাকলে পাক কাপড়গুলিও নাপাক হয়ে যাবে, তখন সবগুলিকে নিয়ম মত ধুয়ে পাক করা প্রয়োজন। ধোপাগণ সেরূপ করেন কি না তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। তাই লণ্ডির মাধ্যমে কাপড় ধোলাই করার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। তবে একান্তই কেউ পাক কাপড় দিলে তা নাপাক হয়েছে ধরা হবে না। পক্ষান্তরে নাপাক কাপড় দিলে তা পাকও ধরা হবে না। ড্রাই ওয়াশ-এর হুকুমও অনুরূপ।

* দুইপাল্লা বিশিষ্ট কাপড়ের এক পাল্লা বা তুলা ভরা কাপড়ের এক দিক যদি নাপাক এবং অন্য পাল্লা বা অন্য দিক পাক হয় এমতাবস্থায় উভয় পাল্লা যদি একত্রে সেলাই করা হয় তাহলে পাক পাল্লার উপর নামায পড়া দুরস্ত হবে না সেলাই করা না হলে নাপাক পাল্লা নীচে রেখে পাক পাল্লার উপর নামায পড়া দুরস্ত হবে তবে শর্ত এই যে, পাক পাল্লা এত মোটা হওয়া চাই যাতে পাক পাল্লার উপর থেকে নাপাকীর রং দেখা না যায় এবং গন্ধও টের না পাওয়া যায়

* বিছানার এক কোণ নাপাক এবং বাকী অংশ পাক হলে পাক অংশে নামায পড়া দুরস্ত আছে

* না ধুয়ে কাফেরদের কাপড়ে বা বিছানায় নামায পড়া মাকরূহ।

* তুলার গদি, তোষক অথবা লেপে যদি মল মূত্র বা অন্য কোন প্রকার নাজাছাত লাগে তাহলে পানি দ্বারা ধৌত করতে হবে। যদি নিংড়ানো কঠিন হয় তাহলে ভাল করে তিনবার পানি প্রবাহিত করতে হবে। প্রতিবার প্রবাহিত করার পর এমনভাবে রেখে দিবে যেন সমস্ত পানি ঝরে যায়, তারপর আবার পানি প্রবাহিত করবে, এভাবে তিন বার করলেই পাক হয়ে যাবে- তুলা ইত্যাদি বের করে ধৌত করার প্রয়োজন নেই

আসবাব/দ্রব্য পাক করার নিয়ম

* যদি এমন জিনিসে নাজাছাত (নাপাকী) লাগে যা নিংড়ানো যায় না (যেমন থালা-বাসন,কলস, খাট, মাদুর, জুতা ইত্যাদি) তাহলে তা পাক করার নিয়ম হল- একবার তা ধুয়ে এমনভাবে রেখে দিবে যেন সমস্ত পানি ঝরে যায় এবং পানির ফোটা পড়া বন্ধ হয়ে যায়, তারপর অনুরূপ আর একবার করবে, এভাবে তিনবার ধৌত করলে জিনিস পাক হয়ে যাবে।

* জুতা বা চামড়ার মোজায় গাঢ় বীর্য, রক্ত, পায়খানা, গোবর ইত্যাদি গাঢ় নাজাছাত লাগলে তা যদি মাটিতে খুব ভালমত ঘষে বা শুকনা হলে নখ বা ছরি চাকু দিয়ে খুঁটে সম্পূর্ণ পরিষ্কার করে ফেলা যায় এবং বিন্দুমাত্র নাজাছাত না থাকে তাহলেও তা পাক হয়ে যাবে- না ধৌত করলেও চলবে কিন্তু পেশাবের ন্যায় তরল নাজাছাত লাগলে পূর্বোক্ত নিয়মে ধোয়া ব্যতীত পাক হবে না

* আয়না, ছুরি, চাকু, স্বর্ণ রূপার অলংকার, থালা বাসন, বদনা, কলস ইত্যাদি নাপাক হলে ভালমত মুছে ঘষে বা মাটি দ্বারা মেজে ফেললেও পাক হয়ে যায়। কিন্তু এই জাতীয় জিনিস নকশীদার হলে উপরোক্ত নিয়মে পানি দ্বারা ধৌত করা ব্যতীত পাক হবে না

* নাপাক ছুরি, চাকু বা হাড়ি-পাতিল জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে পোড়ালেও পাক হয়ে যায়

* কুকুর কোন পাত্রে মুখ দিলে তা নাপাক হয়ে যায়। তিন বার ধৌত করলেও তা পাক হয়ে যায় কিন্তু সাত বার ধোয়া উত্তম। আর একবার মাটি দ্বারা মেজে ফেললে আরও বেশী উত্তম

 

জমিন পাক করার নিয়ম

* জমিন/ মাটিতে কোন নাজাছাত লাগলে তিন বার পানি প্রবাহিত করে দিলে তা পাক হয়ে যাবে

* জমিন/ মাটির উপর কোন নাজাছাত লেগে যদি এমনভাবে শুকিয়ে যায় যে, নাজাতের কোন চিহ্নও না থাকে তবুও তা পাক হয়ে যায়-তার উপর নামায পড়া দুরস্ত আছে। তবে মাটি দ্বারা তাইয়াম্মুম করা দুরস্ত নয়

* ইট, সিমেন্ট বা পাথর প্রভৃতি দ্বারা পাকা স্থানও জমিনের হুকুমে, তবে শুধু খালি ইট বিছানো থাকলে তা পূর্বের নিয়মে ধোয়া ব্যতীত পাক হবে না

* জমিনের সঙ্গে যে ঘাস লাগা আছে তাও জমিনেরই মত অর্থাৎ, শুধু শুকালে এবং নাজাছাতের চিহ্ন চলে গেলে পাক হয়ে যাবে এবং তার উপর নামায পড়া দুরস্ত হবে। কিন্তু কাটা ঘাস ধোয়া ব্যতীত পাক হবে না

* গোবর দ্বারা লেপা জমিনের উপর পাক বিছানা না বিছিয়ে নামায পড়া দুরস্ত নয়

 

খাদ্য দ্রব্য পাক করার নিয়ম

* মধু, চিনি, মিহুরি, শিরা, তেল, ঘি, ডালডা ইত্যাদি নাপাক হলে তা পাক করার দুইটি নিয়ম :

. যে পরিমাণ তেল, শিরা ইত্যাদি, সেই পরিমাণ পানি তাতে মিশ্রিত করে আগুনে জাল দিবে। যখন সমস্ত পানি উড়ে যাবে তখন আবার পরিমাণ পানি মিশ্রিত করে জাল দিবে, এভাবে তিন বার করলে পাক হয়ে যাবে

, তেল ঘি ইত্যাদির সঙ্গে সমপরিমাণ পানি মিশ্রিত করে তাতে নাড়াচাড়া দিলে তেলটা উপরে উঠে আসবে; তারপর আস্তে আস্তে কোন উপায়ে উপর থেকে তেলটা তুলে নিয়ে আবার সমপরিমাণ পানি মিশ্রিত করে আবার অনুরূপ ভাবে তেলটা তুলে নিবে। এভাবে তিন বার করলে পাক হয়ে যাবে। যদি ঘি, ডালডা, তেল জমাট হয় তাহলে তাতে পানি মিশ্রিত করে রৌদ্রে বা আগুনের আঁচের উপর রাখবে। এভাবে গলে তেল ঘি ইত্যাদি উপরে ভেসে উঠলে তারপর উপরোক্ত নিয়মে তিন বার তুলে নিলে পাক হয়ে যাবে

* দুধ বা তরকারী ইত্যাদি তরল জিনিসে বিড়াল মুখ দিলে তার মাসআলা পূর্বে বর্ণনা করা হয়েছে

* যে সব প্রাণীর ঝুটা হারাম বা মাকরূহ তারা যদি রুটি, পাউরুটি, ভাত ইত্যাদি শক্ত খাবারে মুখ দেয় বা খায় তাহলে মুখ দেয়ার স্থান থেকে কিছুটা ফেলে দিয়ে অবশিষ্ট অংশ খাওয়া যায়।

 

হাউজ বা ট্যাংকি পাক করার নিয়ম

* হাউজ বা ট্যাংকি যদি ১০০ বর্গ হাত বা তার চেয়ে বড় হয় তাহলে তাতে কোন নাপাকী পড়লে বা কোন প্রাণী তাতে মারা গেলে তার পানি নাপাক হয় না। আর ১০০ বর্গ হাতের চেয়ে ছোট হলে নাপাক হয়ে যায়। অবশ্য মাছ, ব্যাঙ, কচ্ছপ, কাঁকড়া ইত্যাদি জলজ প্রাণী মরলে তাতে পানি নাপাক হয় না। তবে এ সব প্রাণীও যদি মরে পঁচে গলে যায়, তাহলে তার পানি পান করা বা দ্বারা খাদ্য পাকানো দুরস্ত নয়, যদিও ওযূ গোছল করা দুরস্ত আছে

* সাধারণতঃ হাউজ বা ট্যাংকি দুই ধরনের হয়ে থাকে।

() আণ্ডার গ্রাউণ্ড ট্যাংকি, যাতে সরকারী পানির লাইনের মাধ্যমে পানি এসে ভরে।

() ছাদে বা উপরে স্থাপিত নির্মিত ট্যাংকি, যার থেকে সব কামরায় ওযূ গোসল ইত্যাদির জন্য পানি পৌছানো হয়। এই উভয় ধরনের হাউজ বা ট্যাংকিতে এক দিকের পাইপ থেকে পানি আসছে অন্য দিকের পাইপ থেকে পানি সরছে- এমতাবস্থায় তাতে যদি কোন নাপাকী পড়ে তাহলে অধিকাংশ ফেকাহবিদের মতে সে ট্যাংকির পানি নাপাক হবে না, কারণ সেটা প্রবহমান পানির পর্যায়ভুক্ত। অবশ্য যদি উক্ত পানিতে নাপাকীর রং, গন্ধ বা স্বাদ পাওয়া যায় তাহলে যতটুকু পানিতে রং, গন্ধ বা স্বাদ পাওয়া যাবে ততটুকু পানি নাপাক হয়ে যাবে অনুরূপভাবে যদি নাপাক বস্তুটি পানি উভয় দিক থেকে প্রবহকালে পতিত হয়ে কোন এক দিকের পাইপের পানি বন্ধ হওয়ার পরও তাতে পড়ে থাকে তাহলেও তখন পানি নাপাক হয়ে যাবে

আর যদি কোন এক দিকের লাইনের পানি বন্ধ থাকা অবস্থায় নাপাকী পতিত হয় তাহলে অধিকাংশ ফকীহর মতে হাউজ/ ট্যাংকি নাপাক হয়ে যাবে। অতঃপর তাকে পাক করার দুইটি নিয়ম যথা :

, যদি হাউজ থেকে ফেলে দেয়ার মত কোন নাপাক বস্তু হয় তাহলে তা ফেলে দেয়ার পর হাউজের এক দিকের পাইপ থেকে পানি প্রবেশ করানো শুরু হবে এবং অন্যদিকের পাইপ থেকে পানি বের করা শুরু হবে। এরূপ করা শুরু করলেই সাথে সাথে হাউজট্যাংকি, পানি সব পাক হয়ে যাবে। সম্পূর্ণ পানি বা কোন নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি বের করা শর্ত নয়

. নীচের ট্যাংকি (আর গ্রাউণ্ড ট্যাংকি) হলে সরকারী পাইপ থেকে পানি আসতে আসতে সেটি ভরে গিয়ে যখন মুখ থেকে পানি উপচে পড়া শুরু হবে তখন তা পাক হয়ে যাবে। আর উপরের ট্যাংকি হলে তা থেকে গোছলখানা ইত্যাদিতে যাওয়ার সব লাইন বন্ধ করে দিবে এবং তারপর মেশিনের সাহায্যে তাতে পানি ভরা (তোলা) শুরু করবে। যখন উপরের পাইপ বা মুখ থেকে পানি উপচে পড়া শুরু হবে তখন উপরের ট্যাংকি এবং তার সাথে সংযুক্ত সব পাইপ পাক হয়ে যাবে। তবে কোন কোন ফকীহর মতে তিন বার আবার কারও মতে এক বার নাপাক ট্যাংকি পানিতে ভরে রেখে পানি ফেলে দেয়া আবশ্যক। এই মতভেদের প্রেক্ষিতে নাপাক বস্তু পতিত হওয়ার সময় হাউজে যে পরিমাণ পানি ছিল সেই পানি হাউজ থেকে বের করার পর হাউজটি পাক হয়েছে বলে মনে করা উত্তম


নলকূপ পাক করার নিয়ম

* যদি নলকূপে নাপাক কাপড় ইত্যাদি এমন বস্তু পতিত হয় যা বের করা সম্ভব, তাহলে তা বের করার পর নাপাক বস্তু পতিত হওয়ার সময় নলকূপে যে পরিমাণ পানি ছিল তা বের করে ফেললে নলকূপ পাক হয়ে যাবে। পেশাব ইত্যাদি তরল নাপাকী পড়লেও এই পরিমাণ পানি বের করলে নলকূপ পাক হয়ে যাবে

* যদি নলকূপে পায়খানা, গোবর ইত্যাদি স্থূল নাপাক বস্তু পতিত হয়, তাহলে নাপাক বস্তুটি মাটিতে রূপান্তরিত হওয়া পর্যন্ত বিলম্ব করতে হবে। অতঃপর পূর্বের নিয়মে পানি বের করে নলকূপটি পাক করতে হবে

No comments

Powered by Blogger.