ইস্তেনজার (পেশাব পায়খানার) সুন্নাত, আদব ও বিধি-নিষেধ সমূহ।Islamic Media Blog
![]() |
Circumcision of urine toilet |
ইস্তেনজার (পেশাব পায়খানার) সুন্নাত, আদব ও বিধি-নিষেধ সমূহ
* ইস্তেনজা খানায় প্রবেশের পূর্বে মাথা ঢেকে নেয়া মোস্তাহাব।
* টুপি বা কোন কিছু দ্বারা মাথা ঢাকার সময় বিসমিল্লাহ বলে নিবে।
* জুতা/স্যান্ডেল পরিধান পূর্বক ইস্তেনজা করা ।
* জুতা স্যান্ডেল পরিধান করার সময় বিসমিল্লাহ বলে নিবে।
* প্রথমে ডান পায়ে জুতা/স্যান্ডেল পরবে।
* নামাযের কাপড় ব্যতীত অন্য কাপড়ে ইস্তেনজা করা উত্তম। অন্যথায় নাপাকী থেকে খুব সতর্ক থাকতে হবে।
* বিসমিল্লাহ সহ ইস্তেনজা খানায় প্রবেশের দুআ পড়া। খোলা স্থান হলে কাপড় উঁচু করার সময় দুআ পড়তে হয়। আর মনে না থাকলে প্রবেশের পর বা কাপড় উঠানোর পর মনে মনে দুআ পড়া যায়, মুখে উচ্চারণ করে নয়। আল্লাহ, আল্লাহর রাসূলের নাম, ফেরেশতার নাম বা কুরআনের কিছু লিখিত বস্তু নিয়ে এস্তেজায় যাওয়া মাকরূহ। অনুরূপ এগুলো মুখে উচ্চারণ করাও নিষিদ্ধ।
বিসমিল্লাহ সহ ইস্তেজায় প্রবেশের দুআটি এই- বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা ইন্নী আওজুবিকা মিনাল খুবুশী ওয়াল খবাইশ।
অর্থ: হে আল্লাহ! দুষ্ট পুরুষ জিন এবং দুষ্ট মহিলা জিনদের অত্যাচার থেকে তোমার পানাহ চাই ।
* প্রথমে বাম পা দিয়ে এস্তেনজায় প্রবেশ করা।
* বসার সময় পা দানিতে প্রথমে ডান পা রাখবে এবং নামার সময় প্রথম বাম পা নামাবে ।
* প্রয়োজনের অতিরিক্ত সতর না খোলা। (এর সহজ উপায় হল- বসতে বসতে কাপড় উঠানো। দাঁড়ানো অবস্থাতেই সতর খোলা নিষিদ্ধ)
* বসে ইস্তেজা করা ।
* বাম পায়ে ভর করে বসাই আদব ।
* উভয় পায়ের মাঝে বেশ ফাঁক রেখে বসা আদব ।
* কেবলার দিকে মুখ বা পিঠ করে না বসা। এমনিভাবে সূর্যের দিকে মুখ করে, বায়ুর বিপরীতে, চলার পথে, কবরস্থানে, ছায়াদার বা ফলদার গাছের নীচে, প্রবাহিত নদী নালায়, বদ্ধ পানিতে, বা মানুষ বসতে পারে এমন ঘাসের উপর ইস্তেনজা না করা।
* নজরকে সংযত রাখা অর্থাৎ, যৌনাঙ্গের দিকে, মল মূত্রের দিকে, এমনিভাবে আকাশের দিকে নজর না দেয়া এবং এদিক সেদিক বেশী না তাকানো।
* মলমূত্রের উপর থুথু, কফ, শিকনি না ফেলা।
* ডান হাত দিয়ে যৌনাঙ্গ স্পর্শ না করা।
* ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা।
* বাম হাত দিয়ে ঢিলাকুলুখ ব্যবহার করবে।
* পায়খানার পর তিন বার ঢিলা/কুলুখ ব্যবহার করা মোস্তাহাব।
* পেশাবের পর ঢিলা/কুলুখ নিয়ে হাটা-চলা করে, কিম্বা কাশি দিয়ে বা নড়াচড়া করে, কিম্বা অভ্যাস অনুযায়ী যে কোন ভাবে পেশাবের করা বন্ধ হয়েছে এরূপ নিশ্চিত হতে হবে। মহিলাদের জন্য এটার প্রয়োজন নেই ।
* প্রথম ঢিলা/কুলুফ পেছনের দিক থেকে সামনের দিকে, দ্বিতীয়টি সামনের দিক থেকে পেছনের দিকে, তৃতীয়টা পেছন দিক থেকে সামনের দিকে এ নিয়মে ঢিলা/কুলুখ ব্যবহার করা অধিক পবিত্রতার অনুকূল। আর যদি অণ্ডকোষ ঝুলানো থাকে তাহলে প্রথমটা সামনের দিক থেকে আরম্ভ করা। মহিলাগণ সর্বদা প্রথমটা সামনের দিক থেকে শুরু করবে।
* পানি ব্যবহারের পূর্বে হাতের কবজি পর্যন্ত ধৌত করা। এক হাদীছের বর্ণনার ভিত্তিতে এ স্থলে উভয় হাত ধৌত করার একটি মতও পাওয়া যায় ।
* তারপর পানি দ্বারা ধৌত করা সুন্নাত, নাপাকী এক দেরহামের (হাতের তালুর নীচ স্থান সমপরিমাণ বিস্তৃত। বেশী পরিমাণ স্থান ছড়িয়ে পড়লে পানি দ্বারা এস্তেজা করা ওয়াজিব।
* পানি ব্যবহার করার সময় প্রথমে বাম হাতের মধ্যমা আঙ্গুল-এর পেট দ্বারা মর্দন করা, তারপর অনামিকা সহ প্রয়োজনে আরও দুই এক আঙ্গুল ব্যবহার করা। মহিলাগণ প্রথমেই দুই আঙ্গুল (মধ্যমা ও অনামিকা) ব্যবহার করবেন।
* রোজা অবস্থায় না হলে পেছনের রাস্তা খুব ঢিলা করে বসে পানি ব্যবহার করা।
* দুর্গন্ধ সম্পূর্ণ দূর না হওয়া পর্যন্ত পরিষ্কার করতে থাকবে।
* প্রথমে পেছনের রাস্তা তারপর সামনের রাস্তা ধৌত করা। দুই রাস্তার মধ্যখানের স্থানটুকুও মধ্যমা বা কনিষ্ঠ আঙ্গুল দ্বারা মর্দন করে ধৌত করা।
* সৌচ কার্যের পর মাটি বা সাবান ইত্যাদি দ্বারা পুনরায় হাত পরিষ্কার করে নেয়া উত্তম।
* রোযা অবস্থায় হলে সতর্কতার জন্য ওঠার পূর্বে কাপড় (বা এ জাতীয় কিছু) ব্যবহার করে কিম্বা বাম হাত দ্বারা বার বার ঘষে পেছনের রাস্তার পানি মুছে ফেলা উচিৎ। আর যাদের রোগের কারণে মলদ্বার বের হয়ে যায় তাদের জন্য জরুরী। রোযাদার না হলেও এরূপ করা মোস্তাহাব।
* যথা সম্ভব দ্রুত এস্তেনজা সেরে বের হয়ে আসা ।
* বের হওয়ার সময় প্রথমে ডান পা বের করা সুন্নাত।
* বের হয়ে দুআ পড়বে।
দোয়াটি হল- গুফরা নাকা আল-হামদু লিল্লা হিল্লাজী আজহাবা আন্নিল আজা ও আফানী।
যার অর্থ : তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি কষ্টদায়ক বস্তুসমূহ আমার থেকে দূর করে দিয়েছেন এবং আমাকে শান্তি দান করেছেন।
* প্রথমে বাম পায়ের জুতা/স্যান্ডেল খোলা সুন্নাত।
No comments