মোজায় মসেহ করার নিয়ম বিস্তারিত । Islamic Media Blog
উযূ করার সময় মোজা পরিহিত থাকলে মোজা খুলে পা না ধুয়ে মোজার উপর মসেহ করে নিলেও চলে, তবে তার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে।
পড়ুন- ইবাদত কত প্রকার ও কি কি বা ইবাদতের প্রকারভেদ
মোজায় মসেহের শর্তসমূহ:
১. পা ধোয়ার পর মোজা পরিধান করবে । চাই পূর্ণ উযু করার পর শেষে পা ধুয়ে মোজা পরিধান করুক কিম্বা আগেই পা ধুয়ে মোজা পরিধান করে তারপর উযূ ভঙ্গকারী কিছু ঘটার পূর্বেই উযূ পূর্ণ করে নেয়া হোক।
২. মোজা পায়ের টাখনু গিরা ঢাকা হতে হবে ।
৩. মোজা এমন হতে হবে যা পরিধান করে উপর্যুপরি অন্ততঃ তিনমাইল পথ চলা যায় ।
৪. একটি মোজায় পায়ের ছোট আঙ্গুলের তিন আঙ্গুল পরিমাণ বা তার চেয়ে বেশী ফাটা ছেড়া থাকতে পারবে না, চলার সময় এ পরিমাণ খুললেও চলবে না।
৫. মোজা এমন হতে হবে যা বাধা ছাড়াই পায়ের উপর আটকে থাকে ।
৬. মোজা এমন হতে হবে যার ভিতর দিয়ে পানি ভেদ করে শরীরে লাগে না।
৭. কমপক্ষে হাতের ছোট আঙ্গুলের তিন আঙ্গুল পরিমাণ পায়ের অগ্রভাগ থাকতে হবে । অতএব কোন এক পা টাখনু গিরার উপর থেকে কাটা গেলে আর অপর পা ঠিক থাকলে সে অবস্থায় মোজায় মসেহ করা জায়েয হবে না।
৮. গোসল ফরয হলে মোজায় মসেহ করা জায়েয নয় বরং তখন মোজা খুলে পা ধৌত করতে হবে ।
পড়ুন- আকিদা কাকে বলে, আকিদার অর্থ কি, মুসলমানদের কতিপয় আকীদা
কোন্ ধরনের মোজায় মসেহ করা জায়েয :
চামড়া, পশম, কাতান প্রভৃতির এমন পায়ের মোটা মোজা, যা অন্ততঃ পায়ের টাখনু গিরা ঢাকা হবে এবং বাধা ছাড়াই পায়ের উপর খাড়া থাকতে পারে এমন হবে, যা পায়ে দিয়ে অন্ততঃ তিন মাইল হাটা যাবে তাতে ফাটবে না এবং যা ভেদ করে পানি ভিতরে ঢুকবে না এবং যা দিয়ে পায়ের চামড়া দেখা যাবে না এমন মোজার উপর মসেহ করা জায়েয । হাত মোজার উপর মসেহ করা জায়েয নয়।
মেজায় কত দিন মসেহ করা জায়েয :
* শরয়ী সফরের অবস্থায় তিন দিন তিন রাত পর্যন্ত এবং এরূপ সফর না হলে এক দিন এক রাত পর্যন্ত মসেহ করা যায় । যে উযূ করে মোজা পরিধান করা হবে সে উযু ভঙ্গ হওয়ার সময় থেকে এই তিন দিন তিন রাত ও এক দিন এক রাতের হিসাব ধরা হবে।
* বাড়িতে থাকা অবস্থায় মসেহ শুরু হয়েছিল এবং একদিন এক রাত পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই সফর আরম্ভ হয়েছে, তাহলে তিন দিন তিন রাত পর্যন্ত মসেহ করতে পারবে।
* পক্ষান্তরে সফরে থাকা অবস্থায় মসেহ শুরু করা হয়েছিল তারপর একদিন এক রাত পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই বাড়িতে চলে এসেছে তাহলে এক দিন এক রাত হওয়ার পর আর বেশী মসেহ করতে পারবে না।
মোজায় মসেহের তরীকা:
উভয় হাতের আঙ্গুলগুলো পানিতে ভিজিয়ে উভয় পায়ের পাতার অগ্রভাগে রাখবে, যেন সম্পূর্ণ মোজার উপর আঙ্গুলগুলোর চাপ পড়ে। অতঃপর হাতের পাতা শূণ্য রেখে এবং আঙ্গুলগুলোর মাঝে সামান্য ফাঁক রেখে ক্রমশঃ আঙ্গুল গুলো টেনে পায়ের টাখনার দিকে অনিবে। পুরো হাতের পাতা সহ মোজার উপর রেখে টেনে আনলেও দুরস্ত আছে।
যেসব কারণে মোজায় মসেহ ভঙ্গ হয়ে যায় :
১. যে যে কারণে উযু ভেঙ্গে যায় তাতে মসেহও ভেঙ্গে যায়।
২. উভয় মোজা বা একটি মোজা খুললেও মসেহ ভেঙ্গে যায়। এরূপ অবস্থায় উযূ থাকলে শুধু পা ধুয়ে আবার মোজা পরিধান করে নিলেই চলে, পুরো উযু দোহরানোর প্রয়োজন হয় না।
৩. মসেহের মেয়াদ-তিন দিন তিন রাত বা এক দিন এক রাত পূর্ণ হয়ে গেলেও মসেহ ভেঙ্গে যায়। এরূপ ক্ষেত্রেও উযূ থাকলে শুধু পা ধুয়ে নিবে।
৪. মোজার ভিতর পানি ঢুকে সম্পূর্ণ পা বা পায়ের অর্ধেকের বেশী ভিজে গেলে।এ ক্ষেত্রেও উযু থাকলে শুধু পা ধুয়ে নিবে।
৫. মাযুর ব্যক্তি যদি মসেহ করে, তাহলে ওয়াক্ত চলে যাওয়ার পর যেমন তার উযু ভেঙ্গে যায় তদ্রুপ তার মসেহও ভেঙ্গে যাবে। তবে উযু করার সময় এবং মোজা পরিধান করার সময় ওযর না থাকলে অন্যান্য সুস্থ লোকের ন্যায় সেও মাসেহ করতে পারবে।
মোজা সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন
No comments